রেকর্ড পারিশ্রমিকে বিজয়

বিজয়ের আসল নাম জোসেফ বিজয় চন্দ্রশেখর। ১৯৭৪ সালের ২২ জুন তিনি তামিলনাডুর মাদ্রাজে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা এস এ চন্দ্রশেখর তামিল সিনেমার একজন সফল নির্মাতা ও প্রযোজক। বিজয়ের মা শোবা একজন কণ্ঠশিল্পী। ভারতীয় সিনেমার ব্র্যান্ডখ্যাত শাহরুখ সালমানকেও পারিশ্রমিকের দিক থেকে ছাড়িয়ে গেলেন বিজয়।

প্রকাশ | ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০

মাসুম বিলস্নাহ্‌ রাকিব
গত এক দশকে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের সিনেমাগুলো বেশ পাকাপোক্ত অবস্থান করে নিয়েছে। তামিল, তেলেগু ও মালায়লম ভাষার সেসব সিনেমার গল্প আর নির্মাণশৈলি বাজিমাত করছে একের পর এক। এমন নয় যে, অতীতে এসব ইন্ডাস্ট্রি সফল ছিল না। তবে আগে এখানকার সিনেমার জনপ্রিয়তা ও বাজার ছিল দক্ষিণ ভারতেই। এখন সেটা পুরো ভারত, দক্ষিণ এশিয়া এমনকি অন্যান্য দেশেও উলেস্নখযোগ্য পরিচিতি লাভ করেছে। সাউথ ইন্ডিয়ান সিনেমার এই উত্থান যাদের হাত ধরে হয়েছে, যেসব তারকা নিজেদের ছড়িয়ে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে, তাদের মধ্যে একজন বিজয়। সিনে দুনিয়ায় তাকে বলা হয় থালাপতি বিজয়। 'থালাপতি' অর্থ নেতা। অর্থাৎ বিজয়কে এ প্রজন্মের পথপ্রদর্শক বললেও ভুল হবে না। তিনি তামিল সিনেমার সর্বোচ্চ সম্মানী পাওয়া অভিনেতা হিসেবেও পরিচিত। কয়েক বছর ধরেই একের পর এক সুপারহিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি। 'নিশ্চিত হিট' জেনে প্রযোজকরা তার পেছনে বিনিয়োগ করতে পিছপা হন না। নতুন ছবিতে বিজয় যে পারিশ্রমিক পাচ্ছেন, তা আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। বিজয়ের আসল নাম জোসেফ বিজয় চন্দ্রশেখর। ১৯৭৪ সালের ২২ জুন তিনি তামিলনাডুর মাদ্রাজে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা এস এ চন্দ্রশেখর তামিল সিনেমার একজন সফল নির্মাতা ও প্রযোজক। বিজয়ের মা শোবা একজন কণ্ঠশিল্পী। ভারতীয় সিনেমার ব্র্যান্ডখ্যাত শাহরুখ সালমানকেও পারিশ্রমিকের দিক থেকে ছাড়িয়ে গেলেন বিজয়। ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, বিজয়ের আগামী ও ক্যারিয়ারের শেষ চলচ্চিত্র 'থালাপতি '৬৯-এর জন্য ২৭৫ কোটি টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছেন তিনি! যা রীতিমতো নজির গড়েছে ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে। দক্ষিণী তারকাদের মধ্যে দীর্ঘ সময় ধরে রাজত্ব করছেন থালাপতি বিজয়। ভারতজুড়েও তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা। বিশেষ করে এই অভিনেতার সবশেষ সিনেমাগুলো চোখের পলকেই ১০০ কোটির বক্স অফিস কালেকশন পার করেছে। 'মার্শাল', 'থুপাক্কি', 'মাস্টার' এবং 'লিও'র মতো সুপারহিট সিনেমাতে বিজয়কে দেখেছেন দর্শক। ৫০ বছরের এই অভিনেতার নাচেও মাতোয়ারা অনুরাগীরা। এদিকে, সিনেমা থেকে দীর্ঘ বিরতি দিয়ে রাজনীতিতে প্রবেশ করতে চলেছেন বিজয়। চলতি বছর লোকসভা নির্বাচনের শুরুর দিকে বিজয় ঘোষণা দিয়েছেন তার রাজনৈতিক দলের নাম। অভিনেতা দলের নাম রেখেছেন 'তামিলাগা ভেটরি কাজাগম'। অভিনেতার লক্ষ্য ২০২৬-এর তামিলনাড়ুর বিধানসভা নির্বাচন। থালাপতির ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, আগামী দিনে অনুরাগীদের কথা মাথায় রেখে তামিলনাড়ুর বাইরে কেরালা ও কর্নাটকেও সংগঠন গড়তে সক্রিয় বিজয়। ফলে রাজনীতিতে ব্যস্ততা বাড়বে তার। আর রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ায় সিনেমা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেবেন। সে কারণেই তার শেষ সিনেমা নিয়ে ভক্তদের উত্তেজনার পারদও তুঙ্গে। সবকিছু বিবেচনায় ক্যারিয়ারের শেষ সিনেমায় বিশাল অঙ্কের পারিশ্রমিক নিয়েছেন এই তারকা। বিজয়ের সেই শেষ সিনেমার শুটিং ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। আর এতে বিজয়ের সঙ্গী হয়েছেন পূজাহেগড়ে। ২০২২ সালে মুক্তি পাওয়া 'বিস্ট'-এর পর আবারও বিজয়ের সঙ্গী হয়েছেন পূজা হেগড়ে। এতে আরও অভিনয় করবেন ববি দেওল, গৌতম বাসুদেব মেনন, প্রিয়ামণি, প্রকাশ রাজ প্রমুখ। পরিচালনায় এইচ বিনোদ। ইন্ডিয়ান হেরাল্ড জানিয়েছে, শেষ সিনেমার জন্য একটু বেশিই সিরিয়াস থালাপতি বিজয়। ভারতীয় সিনেমায় এখন হাজার কোটির জোয়ার চলছে। তবে এ পর্যন্ত বিজয়ের কোনো সিনেমা এ মাইলফলকে পৌঁছাতে পারেনি। তার সর্বোচ্চ ব্যবসাসফল সিনেমা 'লিও' আয় করেছিল ৬২০ কোটি রুপি। তাই শেষ সিনেমায় যেন নতুন রেকর্ড গড়তে পারেন, সে লক্ষ্যেই কাজ করছেন অভিনেতা। থালাপতি '৬৯-এ বিজয়কে একজন রাজনৈতিক নেতার ভূমিকায় দেখা যাবে বলে জানা গেছে। তামিলের পাশাপাশি তেলুগু, হিন্দি ও কন্নড় ভাষায় সিনেমাটি মুক্তি পাবে ২০২৫ সালের অক্টোবরে। ১৯৮৪ সালে 'ভেট্রি' সিনেমায় শিশু শিল্পী হিসেবে বড় পর্দায় যাত্রা শুরু করেছিলেন এই সুপারস্টার। তবে প্রধান চরিত্রে তার প্রথম সিনেমা 'নালাইয়া থেরপু' মুক্তি পেয়েছিল ১৯৯২ সালে। নিজের ক্যারিয়ারে অসংখ্য ব্যবসা সফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন এই তারকা। রজনীকান্তের পর বেশ লম্বা সময় ধরে দক্ষিণে নিজেকে একজন বিশ্বস্ত সুপারস্টার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন থালাপতি বিজয়।