চিটাগাং কিংসের জার্সি গায়ে কয়েকজন বন্ধু স্টেডিয়ামে এসেছেন। স্টেডিয়ামে ঢুকেই তাদের হুঙ্কার 'আজকে (শুক্রবার) বরিশালের 'লঞ্চ' ডুবিয়ে দেওয়া হবে।' পেছন থেকে বরিশালের সমর্থকরা পাল্টা হুঙ্কার দিলেন বরিশালের 'লঞ্চ' কারা ডুবিয়ে দেবে- সেটি আমরা দেখে নেবো, তোমাদের দলে কে আছে? প্রতি উত্তরে শরিফ নামের এক চিটাগাং ভক্ত জানালেন, 'আমাদের দলের শামীম-মিঠুনরাই যথেষ্ট ম্যাচ জেতাতে, আসো মাঠে খেলা হবে!' এভাবেই স্টেডিয়াম পাড়ায় বরিশাল ও চিটাগাং সমর্থকদের মধ্যে খুনসুটি চলছে।
অনলাইনে টিকিট না পেয়ে রাকিব ও আসিফ নামের দুই বন্ধু চিটাগং থেকে ঢাকায় আসেন বৃহস্পতিবার। মিরপুরে একটি হোটেলে উঠেন তারা। শুক্রবার সকাল থেকে টিকিটের খোঁজে স্টেডিয়ামের আশপাশে ঘুরেছেন তারা। কালোবাজারিতে টিকিট পেলেও দাম অনেক। সাধারণ গ্যালারির সর্বনিম্ন ৩০০ টাকার টিকিট বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ টাকা থেকে ১৮০০ টাকার মধ্যে। সবচেয়ে বেশি চাহিদা সাধারণ গ্যালারির টিকিটের। ঠিক এই কারণেই এর দামও খানকিটা বেশি। ক্লাব হাউজের ৮০০ টাকার টিকিট বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকায়, গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের ৩০০০ টাকার টিকিট সাড়ে ৫ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকায় বিক্রয় হচ্ছে। কিছু করার নেই দেখে, উচ্চমূল্যে টিকিট কেটেছেন দুই বন্ধু, তবুও প্রিয় দলকে সমর্থন জানাতে মাঠে উপস্থিত থাকতে চান তারা।
এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই সাধারণ দর্শকদের টিকিট ম্যানেজ করতে হচ্ছে। যারা অনলাইনে কিংবা ব্যক্তি পর্যায়ের সোর্সে টিকিট সংগ্রহ করেছেন, তারা নিজেদের ভাগ্যবান বলতেই পারেন। কেননা স্টেডিয়ামে যে পরিমাণ দর্শক, তার চেয়ে কোনও অংশে কম নয় বাইরের অবস্থা। বিশেষ করে স্টেডিয়ামের ৪ ও ৫ নম্বর গেটে টিকিটিবিহীন দর্শকদের ভিড়টা বেশি।
যারা টিকিট ম্যানেজ করতে পারেননি, তারা প্রিয় দলকে মাঠে বসে সমর্থন করতে না পারার আক্ষেপে পুড়ছেন। কিন্তু যারা টিকিট নামক সোনার হরিণের দেখা পেয়েছেন, তাদের আনন্দের সীমা নেই। গেট খোলার ৫-৬ ঘণ্টা আগে থেকেই স্টেডিয়ামের সামনে উপস্থিত হন ভক্তরা। বেলা তিনটার দিকে স্টেডিয়ামে ঢোকার ফটক খোলার সঙ্গে সঙ্গেই দর্শকরা হুড়মুড় করে ঢুকতে থাকেন। চিটাগং কিংস ও ফরচুন বরিশালের লড়াইয়ে কাগজে-কলমে এগিয়ে বরিশাল। গ্যালারিতেও এগিয়ে বরিশাল। স্টেডিয়ামে যেন লাল উৎসব। লাল জার্সিতে স্টেডিয়ামের গ্যালঅরিতে জোয়ার বইছে।
এক নম্বর গেট দিয়ে বড় একটি গ্রম্নপকে দেখা গেলো। এই গ্রম্নপে ফরচুন বরিশাল ও চিটাগং কিংসের সমর্থকরা আছেন। তবে সেখানে সংখ্যালঘু হয়ে আছে বরিশাল! চিটাগং কিংসের সমর্থকদের সংখ্যাটাই বেশি ছিল। দুই গ্রম্নপ মিলে ঝগড়া লেগে যাওয়ার মতো অবস্থা। চিটাগং সমর্থকদের আশা তাদের ক্রিকেটাররা আজকে বরিশালের 'লঞ্চ' ডুবিয়ে দেবেন। অন্যদিকে বরিশালের সমর্থকদের আশা, দুই ট্রফি নিয়ে লঞ্চে করে বরিশাল যাবেন তামিমরা। আজ সন্ধ্যার জমজমাট ফাইনাল শেষে বোঝা যাবে মাঠে ও মাঠের বাইরের লড়াইয়ে কারা জেতে?