দুর্বার রাজশাহীর পেস্ন অফে ওঠার আশা শেষ হয়ে গেছে শনিবার সন্ধ্যায়ই। ঢাকা ক্যাপিটালসকে হারিয়ে বিপিএলের পেস্ন অফে চতুর্থ দল হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে খুলনা টাইগার্স। কিন্তু ফ্র্যাঞ্চাইজির বিপিএল শেষ হয়ে গেলেও দেশে ফিরতে পারছেন না রাজশাহীর বিদেশি ক্রিকেটাররা। হোটেলে অনিশ্চিত সময় পার করছেন তারা।
খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক ঠিকঠাকভাবে না দেওয়ায় পুরো বিপিএল জুড়েই আলোচনায় দুর্বার রাজশাহী। স্থানীয় ক্রিকেটারদের মতো এতে ভুক্তভোগী বিদেশিরাও। দলের একটি সূত্র জানিয়েছে, বকেয়া টাকা না পেলে বিদেশি ক্রিকেটাররা দেশে ফিরবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখনো টিম হোটেলেই আছেন পাঁচ বিদেশি ক্রিকেটার রায়ান বার্ল, মোহাম্মদ হারিস, আফতাব আলম, মার্ক দেয়াল ও মিগুয়েল কামিন্স।
শনিবার খুলনা টাইগার্সের জয়ের মধ্য দিয়ে দুর্বার রাজশাহীর বিপিএল পর্ব শেষ হয়ে গেছে। তবু দেশের উদ্দেশে রওয়ানা দিতে পারছেন না রাজশাহীর বিদেশি ক্রিকেটাররা। বিপিএলে রাজশাহীর হয়ে খেলতে নেমে যেন চরম বিপাকেই পড়েছেন তারা। ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশে আসা রায়ান বার্ল, মিগুয়েল কামিন্স, আফতাব আলমরা পারিশ্রমিক পাননি এখনও। পাশাপাশি পাচ্ছেন না দেশে ফেরার বিমান টিকিটও। বাধ্য হয়ে তাই টিম হোটেলে আছেন। চুক্তির টাকা এবং দেশে ফেরার বিমানের টিকিটের অপেক্ষায় আছেন তারা।
বিপিএলের শুরু থেকেই পারিশ্রমিক ইসু্যতে সমালোচিত হচ্ছে রাজশাহী ফ্র্যাঞ্চাইজি। যথাসময়ে পারিশ্রমিক পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় খবরের শিরোনামও হয়েছেন তারা। দেশি ও বিদেশিদের কারও কারও আংশিক পারিশ্রমিক পরিশোধ করলেও বেশিরভাগের কোনও পারিশ্রমিক তারা পরিশোধ করেনি। শনিবার গণমাধ্যমে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক পরিশোধ না হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অথচ এখনো বিদেশি ক্রিকেটারদের বেতন নিয়ে সমস্যার সমাধান হয়নি।
ক্রিকইনফোর বরাত দিয়ে জানা গেছে, রাজশাহীর টুর্নামেন্ট শেষ হয়ে যাওয়ার পরও ছয় বিদেশি ক্রিকেটারের কেউ এখনো হোটেল ছাড়েননি। কারণ, তাদের বকেয়া বেতন ও ফেরার বিমান টিকিট দেওয়া হয়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে শুধু রায়ান বার্ল ও মোহাম্মদ হারিস ২৫% বেতন পেয়েছেন, বাকিরা এক টাকাও পাননি। দৈনিক ভাতা নাকি বার্লের ১১ দিন বাকি। বাকিদের অবস্থা আরও খারাপ। একটি সূত্র জানিয়েছে বকেয়া টাকা না পেলে বিদেশি ক্রিকেটাররা দেশে ফিরবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখনও টিম হোটেলেই আছেন পাঁচ বিদেশি ক্রিকেটার রায়ান বার্ল, মোহাম্মদ হারিস, আফতাব আলম, মার্ক দেয়াল ও মিগুয়েল কামিন্স আছেন। রাজশাহীর কোচ হিসেবে বিপিএলে এসেছেন পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার এজাজ আহমেদ। একজন সহকারীও সঙ্গে এনেছিলেন তিনি। টাকা পাননি তারাও।
পারিশ্রমিক ইসু্যতে বিপিএল চলাকালীন সময়ে কয়েক দফা অনুশীলন ও ম্যাচ বয়কট করেন রাজশাহীর ক্রিকেটাররা। এক ম্যাচে তো বিদেশি ক্রিকেটাররা হোটেল থেকেই বর হননি। পরবর্তীতে বিসিবির অনুরোধে তারা পরের ম্যাচে খেলতে নামেন। কিন্তু টুর্নামেন্ট শেষ হয়ে যাওয়ার পরও তারা কেউ পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না। বিপিএলে এমন নজিরবিহীন ঘটনা বাংলাদেশের ক্রিকেটকে কলঙ্কিত করেছে। কেন এমন পরিস্থিতি- এই প্রশ্নে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব নাজমুল আবেদীন ফাহিম গণমাধ্যমকে বলেছেন, 'আমার মনে হয় যথেষ্ট ভালোভাবে বিচার বিবেচনা করিনি ফ্র্যাঞ্চাইজি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে। যতটুকু দরকার ছিল, এই বিষয়গুলো যাছাই বাছাই না করে বোধহয় তাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করেছি। এই কারণেই এই সমস্যার মধ্যে পড়েছি।'
এদিকে, পারিশ্রমিক ইসু্যতে বিপিএলের কড়া সমালোচনা করেছেন ওয়ার্ল্ড ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডবিস্নউসিএ) প্রধান নির্বাহী টম মোফাট। তিনি ক্রিকইনফোকে বলেছেন, 'বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) বকেয়া পারিশ্রমিকের বিষয়টা বারবার শুনতে পাওয়া হতাশার, কয়েক বছর ধরেই এ নিয়ে বিপিএল বারবার দোষী হচ্ছে।'