বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) মিডিয়া বিভাগ নতুন নতুন চমক উপহার দিচ্ছে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের সময় আইরিশ ক্রিকেটাররা বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী রিকশায় ভ্রমণ করেছেন। অনেক ক্রিকেটারতো রিকশাও চালিয়েছেন। এবার টি২০ সিরিজ শুরুর আগে চায়ের দেশ সিলেটে চমক দিলেন দুই অধিনায়ক। বাংলাদেশের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি ও আইরিশ অধিনায়ক গ্যাবি লুইসকে দেখা গেল চা শ্রমিকের বেশে।
দুটি পাতার একটি কুঁড়ির দেশ সিলেট। পাহাড়, নদী, হাওড়ে সমৃদ্ধ শহর চা উৎপাদনে সারা বিশ্বে বিশেষ পরিচিত। চা বাগানের সেই ঐতিহ্য এবার ফুটিয়ে তুললেন নিগার সুলতানা ও গ্যাবি লুইস। চা শ্রমিকদের চিরায়ত পোশাক গায়ে জড়িয়ে টি২০ সিরিজের ট্রফি উন্মোচন করলেন বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় শুরু হবে তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচটি। তাইতো প্রথম ম্যাচের আগের দিন অনুশীলন শুরুর আগে মাঠসংলগ্ন মালনিছড়া চা বাগানে ভিন্ন রূপে হাজির হন নিগার ও লুইস।
মাথায় পঁ্যাচানো কাপড়, পিঠে ঝুড়ি, গায়ে স্থানীয় পোশাকে পুরোদস্তুর চা শ্রমিক হয়ে গেলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ব্যতিক্রম নন লুইসও। প্রায় ১৭৫ বছরের পুরনো চা বাগানের নবীন দুই কর্মী হিসেবেই যেন আবির্ভূত হলেন দুই দেশের অধিনায়ক। সিলেটের চা শিল্পের দীর্ঘ ঐতিহ্য তুলে ধরতেই বিসিবির এই বিশেষ উদ্যোগ। এর আগে ২০২২ সালে মেয়েদের এশিয়া কাপের ট্রফি উন্মোচন হয়েছিল চা বাগানে। ছেলেদের সিরিজেও এর আগে চা বাগানে ট্রফি উন্মোচনের আয়োজন দেখা গেছে। তবে প্রতিবারই নিজ নিজ দলের জার্সি গায়ে ছিলেন ক্রিকেটাররা। পুরোদস্তুর চা শ্রমিক সেজে সবুজ বাগানের মাঝে দাঁড়িয়ে ট্রফি উঁচিয়ে ধরার ঘটনা এবারই প্রথম।
আর এমন আয়োজন হৃদয় ছুঁয়ে গেছে নিগারের। ট্রফি উন্মোচনের পর সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক বললেন, মেয়েদের ক্রিকেটের অগ্রযাত্রায় সহায়ক হবে এসব উদ্যোগ। তিনি বলেন, 'অবশ্যই এটা (চা বাগানে ট্রফি উন্মোচন) বিশেষ। এর আগে ছেলেদের ক্রিকেটে চা বাগানের ভেতর করা হয়েছে ফটোসেশন। তবে বিশেষ পোশাক পরে ঐতিহ্যগতভাবে এমন... কল্পনার বাইরে আমার কাছে। খুব ভালো উদ্যোগ। এটা হয়তো ভিন্নভাবে মেয়েদের ক্রিকেটকে আরও বেশি তুলে ধরবে।'
অভিনব উপায়ে উন্মোচিত ট্রফিটিও নিজেদের করে রাখতে চান নিগার। আইরিশদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ৩-০তে জেতার ধারাবাহিকতা ধরে রেখে এবার বিশ ওভারের ক্রিকেটেও ভালো করার আশা বাংলাদেশ অধিনায়কের, 'অবশ্যই সিরিজ জেতার তো চিন্তা থাকবেই। এখন আমরা অন্যরকম এক ছন্দে আছি। এই মোমেন্টাম ধরে রাখতে পারলে দলের জন্য ভালো হবে।'
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মুখোমুখি পরিসংখ্যানে পরিষ্কারভাবে এগিয়ে বাংলাদেশ। দুই দলের ১১ সাক্ষাতে বাংলাদেশের জয় ৮টি, বাকি ৩টি আয়ারল্যান্ডের। সবশেষ সাত ম্যাচের ছয়টিতেই জয়ী দলের নাম বাংলাদেশ। তবে ঘরের মাঠে সবশেষ দুই সিরিজে ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটি করে ম্যাচ জিতেছে আইরিশরা। এছাড়া ২০২২ সালে উপমহাদেশে খেলা সবশেষ
দ্বিপাক্ষিক সিরিজে পাকিস্তানকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছে তারা।
তাই ছন্দে থাকলেও নির্ভার হতে চান না বাংলাদেশ অধিনায়ক। আয়ারল্যান্ডের সাম্প্রতিক ছন্দের পাশাপাশি ওয়ানডে সিরিজের ধারাবাহিক উন্নতি মাথায় রেখে নিজেদের সেরাটাই খেলতে চান নিগার, 'আমি অনেক বেশি ইতিবাচক। আত্মবিশ্বাসী আছি, তবে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী নই। কারণ আমাদের এমন একটা দল যে, যারা সম্মিলিত পারফর্ম করলে ম্যাচ জেতার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। নেমেই জিতে যাব, তা কিন্তু নয়। ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। প্রথমত ওয়ানডে তারা ভিন্নভাবে খেলেছে, হয়তো কন্ডিশন তাদের কাছে ভিন্ন ছিল। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তারা ভালো ব্যাট করেছে, শেষ ম্যাচেও ভালো ব্যাট করেছে। তাই হালকাভাবে নেওয়ার কোনো চিন্তাভাবনা নেই।'