ফেডারেশন কাপ ফুটবল

ব্রাদার্সের বিপক্ষে কিংসের ঘাম ঝরানো জয়

প্রকাশ | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
কুমিলস্নায় ফেডারেশন কাপ ফুটবলের উদ্বোধনী ম্যাচে বসুন্ধরা কিংসের আক্রমণ প্রতিরোধের চেষ্টা করছে ব্রাদার্স ইউনিয়নের খেলোয়াড়রা -বাফুফে
ফেডারেশন কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট মাঠে গড়িয়েছে মঙ্গলবার থেকে। কুমিলস্নার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে 'এ' গ্রম্নপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ব্রাদার্স ইউনিয়ন লিমিটেডের বিপক্ষে ১-০ গোলের ঘাম ঝরানো জয় পেয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস। তপু বর্মণের একমাত্র গোলে এই জয় পায় কিংস। একইদিনে ময়মনসিংহের রফিকউদ্দিন ভুইয়া স্টেডিয়ামে 'এ' গ্রম্নপের অন্য ম্যাচে পুলিশ ফুটবল ক্লাব ও ফর্টিস এফসি গোলশূন্য (০-০) ড্র করে। এই জয়ে ৩ পয়েন্ট পেয়ে 'এ' গ্রম্নপের শীর্ষে থেকেই টুর্নামেন্ট শুরু করেছে বসুন্ধরা। পুলিশ ও ফর্টিসের আছে ১ পয়েন্ট। শক্তিধর দল গড়েও আশানুরূপ খেলতে পারছে না বসুন্ধরা? নাকি এ মৌসুমে ব্রাদার্স ইউনিয়নই ফিরতে যাচ্ছে তাদের সেই সাফল্যে মোড়ানো পুরানো রুপে! লিগ আর ফেডারেশন কাপের দুটি ম্যাচ দিয়ে অবশ্য এখনই বিচারের সময় আসেনি। তবে লিগে জয়ে শুরুর পর মঙ্গলবার ফেডারেশন কাপে কিংসের বিপক্ষে ব্রাদার্স ইউনিয়ন যে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল তা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। এদিন ব্রাদার্স গোলরক্ষক পাপ্পু হোসেন যেনো ছিলেন বাজপাখির ভুমিকায়। যে দিক থেকেই যেভাবেই কিংসের ফুটবলাররা আক্রমণ করছিলেন সব বলই ছো মেরে গ্রিপ করছিলেন পাপ্পু, কখনো বা ফিস্ট করছিলেন। যেনো প্রতিজ্ঞা করেই নেমেছিলেন কোনভাবেই গোল করতে দিবেন না প্রতিপক্ষকে। তবে শক্তিধর কিংসের কাছে শেষ পর্যন্ত হার মানতেই হয়েছে পাপ্পুকে। নিজের দলকে আর শেষরক্ষা করতে পারেননি। কুমিলস্নায় ম্যাচ শুরুর ১৪ মিনিটে মাঠের বা প্রান্ত থেকে কিংস অধিনায়ক মিগেল দামাসেনোর শট সহজেই গ্রিপ করেন ব্রাদার্সের গোলরক্ষক। ২১ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে পোস্ট লক্ষ্য করে করা রাকিবের শট চলে যায় মাঠের বাইরে। ২৩ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে রিমনের কাটব্যাকে বল পেয়ে জোড়ালো শট নিয়েছিলেন মিগেল। কিন্তু তার আচমকা শট দারুণ দক্ষতায় গ্রিপ করেন ব্রাদার্স গোলরক্ষক পাপ্পু হোসেন। ২৮ মিনিটে ব্রাদার্সের গাম্বিয়ান মিডফিল্ডার জাকারিয়া ডার্বোয়ের বাড়িয়ে দেয়া বল নিয়ে ছুটছিলেন তারই স্বদেশী ফরোয়ার্ড মোস্তফা ড্রামেহ। কিন্তু তাকে বাধা দেন কিংসের নাইজেরিয়ান ডিফেন্ডার ইসাইয়া ইজেহ। রেফারি ফ্রি কিকের সিদ্ধান্ত দিলেও বল কোন জায়গায় বসানো হবে তা নিয়ে বাক বিতন্ডায় জড়িয়ে হলুদ কার্ড দেখেন ব্রাদার্সের এক ফুটবলার। জাকারিয়া ডার্বোয়ের ফ্রি কিক কিংসের মানব দেয়াল টপকে কাপন ধরিয়েছিল কিংসের রক্ষণে। তবে বাধ সাধলো গোল বার। অল্পের জন্য প্রথম গোলটি মিস হয়ে যায় ব্রাদার্সের। ৩৯ মিনিটে বল নিয়ে গোলের চেষ্টা করলেও ব্রাদার্সের শক্ত রক্ষণ ভেঙ্গে জায়গা বের করে নিতে পারেননি মিগেল। প্রথমার্ধের যোগকরা সময়ের প্রথম মিনিটে জনাথন ফার্নান্দেজের শট চলে যায় বারের সামান্য উপর দিয়ে। (৪৫+২) মিনিটে পোস্ট লক্ষ্য করে শট নিতে যাচ্ছিলেন ব্রাদার্সের গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ড মাডি চেসি। কিন্তু তাকে অবৈধভাবে বাধা দেন কিংসের রিমন। রেফারি তাকে হলুদ কার্ড দেখান। ফ্রি কিক পায় ব্রাদার্স। বা প্রান্ত থেকে ব্রাদার্সের ফ্রি কিক পোস্টের কাছ থেকে ক্লিয়ার করেন কিংসের অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার তপু বর্মণ। প্রথমার্ধ ছিল গোলশূন্য। ৫০ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে সাদের পাসে বল নিয়ে ব্রাদার্সের অর্ধে ঢুকে পড়েন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। তবে তাকে দু'পাশ থেকে চাপে রাখেন ব্রাদার্সের দুই ডিফেন্ডার। তাই গোলের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেননি ফাহিম। ৫২ মিনিটে আরও একবার ব্রাদার্সকে নিশ্চিত গোল হজমের হাত থেকে বাঁচিয়ে দেন গোলরক্ষক পাপ্পু। ডান প্রান্ত থেকে লম্বা ক্রস করেছিলেন ফাহিম। বক্সের ডান প্রান্ত থেকে লাফিয়ে উঠে হেড নিয়েছিলেন মিগেল। তবে পাপ্পুও লাফিয়ে উঠে বল গ্রিপ করেন। ৫৬ মিনিটে প্রায় মাঝ মাঠ থেকে লং ক্রসে বক্সের কাছেই বল পাঠিয়েছিলেন সাদ উদ্দিন। বল বুঝে নিয়ে বা প্রান্ত থেকে মোরসালিনের পাসে বক্সের ডান প্রান্ত থেকে শট নিয়েছিলেন কিংসের ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার জনাথন ফার্নান্দেজ। তবে এবারও ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে বল ফিস্ট করেন পাপ্পু। প্রথম গোলের দেখা পেতেই বসুন্ধরাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৬৮ মিনিট। অবশেষে ৬৯ মিনিটে লিড নেয় বসুন্ধরা। বা প্রান্ত থেকে মিগেল দামাসেনোর বা পায়ের ক্রস বক্সে মিস করেন মোরসালিন। তবে হঠাৎই দৌড়ে এসে ডান পোস্টের কাছ থেকে দারুণ হেডে গোল আদায় করে নেন ডিফেন্ডার তপু বর্মণ (১-০)। শেষ পর্যন্ত এই গোলেই জয় পেয়ে মান রক্ষা হয় কিংসের।