বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২

বিসিবির তারুণ্যের উৎসবে বিপিএলের মাস্কট উন্মোচন

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বিসিবির তারুণ্যের উৎসবে বিপিএলের মাস্কট উন্মোচন
বিসিবির তারুণ্যের উৎসবে বিপিএলের মাস্কট উন্মোচন

দেশের সবচেয়ে বড় ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) একাদশ আসরের পর্দা উঠতে যাচ্ছে আগামী ৩০ ডিসেম্বর। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ইতোমধ্যেই বিপিএলের সূচি চূড়ান্ত করেছে। নিশ্চিত করা হয়েছে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের তিন ভেনু্যও। এই টুর্নামেন্টকে বৈশ্বিক পরিমন্ডলে ছড়িয়ে দিয়ে আয়োজন ও ব্যবস্থাপনায় নতুনত্ব আনার কথা বলেছিলেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ।

বিপিএল মাঠে গড়ানোর আগে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে আসরের মাসকাট উন্মোচন করলো বিসিবি। গতকাল রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে নতুন করে বিপিএলের মাস্কট উন্মোচন করা হয়েছে।

বিপিএল আয়োজনে বিসিবির সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। সম্মিলিত ব্যবস্থাপনায় 'বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ২০২৫' এবং 'তারুণ্যের উৎসব ২০২৫' আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল আগেই। গতকাল তারুণ্যের উৎসব অনুষ্ঠানে বিপিএলের মাস্কট 'ডানা-৩৬' উন্মোচন করা হয়েছে। এর আগে প্রদর্শন করা হয় জুলাই-আগস্ট বিপস্নবে শহীদদের সম্মানে নির্মিত প্রামাণ্য চিত্র 'জুলাই-অনির্বাণ।'

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিসিবি সভাপতি ফারুক, আকরাম খান, মাহবুব আনাম, বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথ আউয়ালসহ বিসিবির অন্য পরিচালকরা। ক্রিকেটারদের মধ্যে আছেন তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, সালমা খাতুন, জাহানারা আলমসহ আরও অনেকে। বিপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকরাও এতে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়।

বিপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হওয়ার কথা রয়েছে ২৩ ডিসেম্বর মিরপুর শেরে বাংলায়। এ ছাড়া চট্টগ্রাম ও সিলেটেও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে। ২৫ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে এবং ২৭ ডিসেম্বর সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে হবে এই অনুষ্ঠান। আগামী ৩০ ডিসেম্বর শুরু হবে ২০২৫ বিপিএলের আসর। প্রায় দেড় মাসব্যাপী টুর্নামেন্টটি শেষ হবে আগামী বছরের ৭ ফেব্রম্নয়ারি। এবারের বিপিএলের ৭টি দল হচ্ছে- ঢাকা ক্যাপিটালস, চিটাগং কিংস, দুর্বার রাজশাহী, ফরচুন বরিশাল, খুলনা টাইগার্স, রংপুর রাইডার্স ও সিলেট স্ট্রাইকার্স।

বিশ্বক্রিকেটে গ্রহণযোগ্যতা তৈরির লক্ষ্যে এবারের আসরে ডিজিটাল টিকিটিং, গ্যালারিতে দর্শকদের জন্য বিনামূল্যে পানির ব্যবস্থা, উন্নত সব প্রযুক্তি, অভিজ্ঞ দেশি-বিদেশি আম্পায়ার এবং উদ্বোধনীতে বিশেষ চমক থাকবে বলে জানিয়েছে বিসিবি।

বিপিএলকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে চায় বিসিবি। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেন, 'মাঠের বিপিএল আমরা দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে চাই। তারুণ্যকে সম্পৃক্ত করতে চাচ্ছি। সেদিক থেকে বিবেচনা করলে, বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি যা আগে কখনও হয়নি। শুরু হলো, আশা করি সমাপ্তি সুন্দরভাবেই হবে।'

বিপিএলে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতি নিয়ে ফারুক বলেন, 'এটা প্রধান উপদেষ্টার অফিস থেকে করা হয়েছে। খেলা চলাকালে ২-১ জন সম্মানিত অতিথি আসবেন বিদেশ থেকে।'

নারী বিপিএল নিয়ে ফারুক আহমেদ বলেন, 'চমৎকার একটা আইডিয়া। এই বোর্ড নারী ক্রিকেটকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছে। আমরা অনূর্ধ্ব-১৯ শুরু করেছি। চেষ্টা করব মেয়েদের সুযোগ-সুবিধা আরও কত বাড়ানো যায়। দেখতে হবে বিপিএল করার সক্ষমতা তৈরি হয়েছে কি না। চেষ্টা করতে পারি, তারপর দেখা যাবে কী হয়।'

তবে ছেলেদের বিপিএলে বিসিবির সব মনোযোগ ফারুক বলেন, 'তবে আমরা ছেলেদের বিপিএলকে আরও শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে চাই। যদিও আমি আসার পর এটা প্রথম বিপিএল, এই পরিচালনা পর্ষদের অধীনে শেষ বিপিএল। পরের বছর আমি থাকি বা যে-ই থাকুক, আশা করব পরের বিপিএলে যেন বড় ফ্র্যাঞ্চাইজিরা থাকে, লম্বা সময়ের জন্য হয়। প্রতি বছর ২-৩টা নতুন দল কোনো টুর্নামেন্টের জন্য ভালো না।'

এক নজরে বিপিএলের ১১তম আসরে যা থাকছে, গ্রাফিতি, মাসকট, থিম সং ট্রফি টু্যর, জিরো ওয়েস্ট অ্যানাউন্সমেন্ট অ্যান্ড স্পেশাল টিকিট, ফ্যান এনগেজমেন্ট-সোশ্যাল কন্টেস্ট রিলস/শর্টস ক্যাম্পেইন, প্রি-ইভেন্ট মিউজিক্যাল কনসার্ট, শহীদ আবু সাইদ স্ট্যান্ড, ওপেনিং কনসার্ট, স্পেশাল ফ্যান জোন অ্যাকটিভেশন, ইন ভেনু্য ফ্যান এনগেজমেন্ট-গেমস অ্যান্ড গিভ-অ্যাওয়ে, ডিজিটাল ওয়াচ পার্টিস অ্যান্ড কমিউনিটি এবং সেলিব্রেটি ও ইনফ্লুয়েন্সারদের ভিডিও বার্তা।

টেলিভিশনে খেলা দেখা দর্শকদের জন্যও থাকছে নানা চমক। বিপিএলের ধারাভাষ্যে ক্রিকেট বিশ্বের জনপ্রিয় মুখদের রাখতে চায় বিসিবি। এজন্য বিশ্বের নামিদামি ধারাভাষ্যকারদের তালিকা করে তাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল।

তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন- ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইয়ান বিশপ, পাকিস্তানের ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস ও রমিজ রাজা, ভারতের হার্শা ভোগলে, নিউজিল্যান্ডের ড্যানি মরিসন ও সায়ম ডুল। এছাড়া ডিজিটালে পাকিস্তানের জয়নব আব্বাস, ভারতের রিধিমা পাঠক ও অস্ট্রেলিয়ার এরিন হল্যান্ডের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

বিপিএলে অংশগ্রহণ করা ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর কাছে অর্ধকোটি টাকারও বেশি পাওনা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। লম্বা সময় ধরে এই পাওনা আদায়ের চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়েছে বোর্ডটি। এবার আইনি লড়াইয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তারা। এমনটাই জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর কাছে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য বেশ কয়েক দফা সময়ও দিয়েছে বিসিবি। অথচ তারা অংশগ্রহণ ফি বাবদ নির্ধারিত গ্রান্টি মানি জমাও দেয়নি। তাইতো আইনের পথে হাঁটছে বিসিবি।

বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, 'আমরা বিপিএলের দলগুলোর কর্ণধারদের কাছে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছি টাকা জমা দিতে। আমরা যে টাকা পাওয়ার কথা, তার সামান্যই পেয়েছি। তবে নিয়ম অনুযায়ী তাদের এই টাকা দিতেই হবে।' বিপিএলের আগের আসরগুলোতেও ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর বকেয়া নিয়ে একই ধরনের অভিযোগ উঠেছিল। তবে এবার বিসিবি আরও কঠোর অবস্থান নিচ্ছে বলে জানা গেছে। আগামী আসরের আগে এই বকেয়া সমস্যার সমাধান করতে বিসিবি যে কোনো পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে