জয়ে মৌসুম শুরু বসুন্ধরা কিংসের

প্রকাশ | ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
কিংস অ্যারেনায় শুক্রবার চ্যালেঞ্জ কাপের ম্যাচে ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের আক্রমণ প্রতিহত করার চেষ্টায় বসুন্ধরা কিংসের খেলোয়াড়রা -বাফুফে
'বাংলাদেশ ২.০ চ্যালেঞ্জ কাপ' দিয়ে শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে ফুটবলের নতুন মৌসুম ২০২৪-২৫। ঢাকার বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনাতে প্রথমে লিড নিয়েও শেষ পর্যন্ত বসুন্ধরা কিংসের কাছে ৩-১ গোলে হেরে যায় ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। এক ম্যাচের এই টুর্নামেন্টে ট্রফি জিতেই মৌসুম শুরু করল বসুন্ধরা। এই ম্যাচে মাঠে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। 'আমাদের রক্তের গ্রম্নপ মোহামেডান পজেটিভ' বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় সাদা-কালো সমর্থকদের এমন ব্যানার বুঝিয়ে দিয়েছে নতুন মৌসুমে মোহামেডানের কাছে তাদের প্রত্যাশার কথা। সমর্থনপুষ্ট মোহামেডান আবারও যেন ফিরতে যাচ্ছে স্বরূপে। নিজেদের ভেনু্যতে সমর্থকের কমতি ছিল না বসুন্ধরারও। সব মিলে গ্যালারিতে দর্শকের ঢেউ জানান দিল দারুণ জমজমাট এক ফুটবল মৌসুম শুরু হলো। মৌসুমের প্রথম ম্যাচ। ঘরোয়া ফুটবলে প্রথম হলেও এর আগেই এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে খেলা হয়েছে বসুন্ধরার। যদিও সেখানে তিনটি ম্যাচেই হারতে হয়েছে। তারপরও ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতায় তারা ছিল এগিয়ে। মোহামেডানের একেবারেই প্রথম ম্যাচ, তারপরও কোনো জড়তা ছিল না আলফাজ আহমেদের শিষ্যদের। ম্যাচ শুরুর ৬ মিনিটে বল নিয়ে বসুন্ধরার অর্ধে ঢুকে পড়েছিলেন মোহামেডানের মিডফিল্ডার আরিফ হোসেন। কিন্তু পড়ে যান অফসাইডের ফাঁদে। পরের মিনিটেই কিংস অ্যারেনাকে স্তব্ধ করে দিয়ে ম্যাচে লিড নেয় সাদা-কালোরা। ৬৭ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে ডিফেন্ডার তপু বর্মণকে কাটিয়ে নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড ইমানুয়েল সানডের বাঁ পায়ের ক্রস ছোট বক্সের মাথা থেকে দারুণ হেডে বল জালে জড়িয়ে দেন মোহামেডান অধিনায়ক ফরোয়ার্ড সুলেমান দিয়াবাতে (১-০)। নিজেদের মাঠেই পিছিয়ে পড়ে বসুন্ধরা কিংস। ১২ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে বসুন্ধরার জনাথনের কর্নার বক্সে হেড করেন কিংসের নতুন নাইজেরিয়ান সংযোজন ইসাইয়াহ ইজেহ। কিন্তু কাজের কাজটি করতে পারেননি। বসুন্ধরাকে মধ্যমাঠে ভালো করেই আটকে রাখছিলেন মোহামেডানের ফুটবলাররা। যে কারণে আক্রমণে যেতে বেশ বেগ পোহাতে হচ্ছিল বসুন্ধরাকে। ম্যাচের ২১ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান জনাথন ফার্নান্দেজকে ফাউল করে মৌসুমের প্রথম হলুদ কার্ডটি দেখেন মোহামেডানের ইমানুয়েল সানডে। প্রায় মাঝ মাঠ থেকে মিগেলের ফ্রি কিক বক্সে পেয়ে ইজেহ হেড নিলেও বল গ্রিপ করতে সমর্থ হন গোলরক্ষক সুজন হোসেন। ২৫ মিনিটে ব্যবধানে দ্বিগুণ করার সুযোগ এসেছিল মোহামেডানের। বাঁ প্রান্ত থেকে মিডফিল্ডার রাহিমুদ্দিনের ক্রস ডান পোস্টে কানেক্ট করতে চেয়েছিলেন আরিফ। কিন্তু অল্পের জন্য সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। ৩২ মিনিটে রাফির ভুলের সুযোগে বল পেয়ে যান ফাহিম। বল পাস করে দেন, বল পেয়ে পোস্ট লক্ষ্য করে শট নেন মিগেল দামাসেনো। তবে বল দক্ষতার সঙ্গেই গ্রিপ করেন মোহামেডানের গোলরক্ষক সুজন। ৩৩ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে মোজাফফারভের কর্নার বক্সে পেয়ে হেড নেন সতীর্থ ফুটবলার, প্রস্তুত ছিলেন কিংস গোলরক্ষক জিকো। বল গ্রিপ করেন সহজেই। ৩৪ মিনিটে মিগেলের জোরাল শট জমে যায় সুজনের গস্নাভসে। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে সাদ উদ্দিনের ক্রসে হেড নিয়েছিলেন মিগেল। কিন্তু এবারও পরাস্ত করতে পারলেন না সুজনকে। প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে মিগেলেরর ফ্রি কিক জটলার মধ্যে থেকে বক্সে জটলার মধ্যে থেকে জনাথনের শট চলে যায় মাঠের বাইরে। প্রথমার্ধ পিছিয়ে থেকেই বিশ্রামে যায় বসুন্ধরা। ৫৮ মিনিটে মিগেল দামাসেনার ফ্রি কিক বক্সে পেয়ে বাঁ পায়ের শট নেন ফাহিম। কিন্তু লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। এরই মধ্যে গ্যালারি থেকে মাঠে ৪টি ফ্লেয়ার ছুড়ে মারেন দর্শকরা। লাল রং আর বারুদের ধোঁয়ার গন্ধে ম্যাচ বন্ধ থাকে বেশ কয়েক মিনিট। হঠাৎ বিরতিতে মনযোগ হারায় মোহামেডান। সেই সুযোগটাই কাজে লাগায় কিংস। ৭৩ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে মিগেল দামাসেনার কর্নারে বক্সে বল পেয়ে ডান পায়ে জালে ঠেলে দেন তপু বর্মণ (১-১)। ম্যাচে সমতা আসে। ৮১ মিনিটে বক্সের ডান প্রান্ত থেকে মিগেলের ক্রস বক্সে পেয়ে দারুণ শটে লক্ষ্যভেদ করেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম (২-১)। নির্ধারিত সময় শেষে যোগ করা হয় ১৮ মিনিট। (৯০+৭) মিনিটে বক্স থেকে বাঁ পায়ের শটে গোল আদায় করে নেন মিগেল। ৩-১ গোলে এগিয়ে যায় বসুন্ধরা। শেষ পর্যন্ত এই গোলেই জয় নিশ্চিত হয় ভ্যালেরিও তিতার শিষ্যদের।