গত টি২০ বিশ্বকাপে ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ নারী দল। সামনের বছর ভারতে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপ সরাসরি খেলতে পারবে কিনা নির্ভর করছে আগামী দুটি ওয়ানডে সিরিজের ওপর। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আসন্ন সিরিজে তাই বিশ্বকাপ নিশ্চিত করার চিন্তাই ঘুরপাক খাচ্ছেন টিম ম্যানেজমেন্টের মাথায়।
নারী দলের জন্য আলাদা স্পন্সর আছে বেশ কিছু দিন ধরেই। নারী ক্রিকেটের প্রতি সবার আগ্রহ বাড়ার আরেকটি প্রমাণ মিলল এবার। আয়ারল্যান্ড এমনিতে পরাশক্তি নয়। তার পরও তাদের বিপক্ষে সিরিজের জন্য টাইটেল স্পন্সর পেয়েছে বিসিবি। স্কয়ার গ্রম্নপের দুই পণ্যের নামে সিরিজের আনুষ্ঠানিক নাম 'সেনোরা আয়ারল্যান্ড ওমেন্স টুর অফ বাংলাদেশ, পাওয়ার্ড বাই রুচি।'
প্রতিপক্ষ বিবেচনায় এটি বড় সিরিজ না হলেও বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ লড়াই এটি। আইসিসি ওমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট তালিকায় তলানির দিকে আছে নিগার সুলতানার দল। আগামী বছরের ওয়ানডে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখতে হলে আইরিশদের বিপক্ষে সবক'টি ম্যাচে জয় খুবই জরুরি। স্পন্সর ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে সেই লক্ষ্যের কথাই বললেন বিসিবির নারী বিভাগের প্রধান হাবিবুল বাশার সুমন।
সরাসরি বিশ্বকাপে যেতে আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগে বাকি থাকা ৬টি ওয়ানডের সবগুলোই জিততে হবে বাংলাদেশকে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিনটি ম্যাচ হবে ঘরের মাঠে, বাকি তিন ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কঠিন কন্ডিশনে। পথটা কঠিন হলেও বিসিবির হেড অব ওমেন্স উইং হাবিবুল বাশার জানালেন তারা আশাবাদী ইতিবাচক ফলের, 'আমাদের বিশ্বকাপের (ওয়ানডে) আগে ছয়টি ম্যাচ আছে। আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে তিনটি ম্যাচ, এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে আরও তিনটি। এই ছয়টা ম্যাচ আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু শুরু করছি ঘরের মাঠে, এখানে আমাদের সুবিধা থাকবে। আমরা এখন সব ম্যাচ নিয়ে ভাবছি না। আমরা এই সিরিজটা নিয়েই ভাবছি। এটাই আমাদের প্রাইমারি টার্গেট। এখন পর্যন্ত তাদের (মেয়েদের) দেখে মনে হয়েছে, তারা খুব দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সবাই চাচ্ছে ভালো করতে, সবাই তো চায় বিশ্বকাপ খেলতে। যেহেতু হোমে খেলা, আশা করছি ভালো কিছুই হবে।'
ঘরের মাঠে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে জেতাটাই স্বাভাবিক বাংলাদেশ দলের। অন্য কোনো ফল হলেই সেটা হবে ব্যর্থতা। এই সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে জিতলে তখন ভাবনায় আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর। ওয়ানডে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলতে না পারায় বরাবরই বাছাইপর্বে অংশ নিতে হয়েছে বাংলাদেশ দলকে। এবার ৬ ম্যাচ জিতলে সরাসরি খেলতে পারবে, নতুবা পেরুতে হবে বাছাইপর্বের ঝুঁকিপূর্ণ পথ। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে এই সমীকরণ থাকায় তাই কিছুটা স্নায়ুচাপ থাকতে পারে জ্যোতিদের ওপর। স্বীকার করলেন হাবিবুল, 'একটু স্নায়ুচাপ থাকবে, যেহেতু তাদের ওপর পারফর্ম করার প্রেশার আছে। সেটা খুব স্বাভাবিক। এখন পর্যন্ত তাদের দেখে মনে হয়েছে, তারা খুব দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সবাই চাচ্ছে ভালো করতে, সবাই তো চায় বিশ্বকাপ খেলতে। যেহেতু হোমে খেলা, আশা করছি, ভালো কিছুই হবে।'
টাইটেল স্পন্সর ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিসিবি পরিচালক ফাহিম সিনহা ও নাজমুল আবেদীন ফাহিম, মিডিয়াকম লিমিটেডের সিইও অজয় কুমার কুন্ডু, স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের হেড অব মার্কেটিং ড. জেসমিন জামান ও স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের হেড অব মার্কেটিং মো. ইমতিয়াজ ফিরোজ।
তিন ম্যাচের ওয়ানডে ও টি২০ সিরিজ খেলতে আয়ারল্যান্ড নারী ক্রিকেট দল বাংলাদেশে আসবে শুক্রবার। ২৭ নভেম্বর মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হবে প্রথম ওয়ানডে। ৩০ নভেম্বর দ্বিতীয় ও ২ ডিসেম্বর তৃতীয় ওয়ানডে একই ভেনু্যতে। ৫, ৭ ও ৯ ডিসেম্বর তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজ হবে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।
২০১১ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যাত্রা শুরু করেছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। সেটি ছিল বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ। দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে আইরিশরা বাংলাদেশে আসছে প্রথমবার। এখনও পর্যন্ত দুই দলের ছয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশের জয় তিনটি, হার একটি। পরিত্যক্ত হয়েছে অন্য দুই ম্যাচ।