শনিবার, ০৩ মে ২০২৫, ২০ বৈশাখ ১৪৩২

বাংলাদেশকে গুঁড়িয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে বার্তা দিলেন গাজানফার

ক্রীড়া ডেস্ক
  ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বাংলাদেশকে গুঁড়িয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে বার্তা দিলেন গাজানফার
মোহাম্মাদ গাজানফার

একের পর এক উইকেট নিয়ে মোহাম্মাদ গাজানফার যেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না, কীভাবে উদযাপন করবেন। তানজিদ হাসানকে আউট করে শূন্যে লাফিয়ে উঠলেন। ক্যারম ডেলিভারিতে মুশফিকুর রহিমকে ঘোল খাইয়ে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মতো 'ঝড়' উদযাপন করলেন। তাসকিন আহমেদকে বোল্ড করে বাঁধনহারা দৌড়ে ছুটলেন।

তার প্রতিভার খবর ক্রিকেট বিশ্বে কিছুটা ছড়াতে শুরু করেছিল আগে থেকেই। গত মৌসুমে আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সে ছিলেন। এই বছর অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে নজর কেড়েছেন। আন্তর্জাতিক অভিষেকও হয়ে গেছে আগেই। সম্ভাবনাময় একজন হিসেবে তাকে নিয়ে টুকটাক আলোচনা ছিল ক্রিকেট বিশ্বে। তবে নিজের আগমনী বার্তা তিনি সত্যিকার অর্থে সরবে ছড়িয়ে দিলেন বাংলাদেশকে বিধ্বস্ত করে। ৬.৩ ওভারে ২৬ রানে ৬ উইকেট, শারজাহতে বুধবার বাংলাদেশের ব্যাটিং ধ্বংস করে দিলেন ১৮ বছর বয়সি স্পিনার। ৯২ রানের জয়ে সিরিজে এগিয়ে আফগানিস্তান।

অবশ্য 'ধ্বংস' বা 'বিধ্বস্ত' শব্দগুলোর চেয়ে তার বোলিংয়ের উপযুক্ত পরিচয় হতে পারে 'ইন্দ্রজাল।' রহস্যময় স্পিনের মায়াবি জাল ছড়িয়েই তো তিনি শিকার ধরেন। তাকে অফ স্পিনার বলা হলেও পারেন আসলে আরও অনেক কিছু। দুই দিকেই টার্ন, ক্যারম বল, ব্যাক স্পিন, গুগলি কী পারেন না তিনি! বলের গতির কারণে 'অফ দা পিচ' তাকে পড়তে পারা ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন। গতির হেরফেরও করতে পারেন প্রয়োজন বুঝে। এই সব অস্ত্রের কথা জেনে আরেকজন স্পিনারের কথা মনে পড়তে বাধ্য। গত সাত বছর ধরে ক্রিকেট বিশ্বকে এসব জাদু দেখিয়ে আসছেন তো মুজিব-উর-রাহমান! হ্যাঁ, গাজানফার একই ঘরানার বোলার। আফগান ক্রিকেটে 'নতুন মুজিব' হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন তিনি বেশ আগে থেকেই। যদিও তার আদর্শ রাভিচান্দ্রান অশ্বিন। ভারতীয় স্পিন গ্রেটের মতোই তার প্রিয় ডেলিভারি ক্যারম বল।

গাজানফারের গল্প অন্য বেশির ভাগ আফগান ক্রিকেটারের মতোই। ছেলেবেলায় টেনিস বলে খেলতেন। তার পর একটি একাডেমিতে নাম লেখান। ৬ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতার কারণে শুরুতে ছিলেন পেসার। পরে স্পিন বোলিংয়ে তার সহজাত প্রতিভা দেখে তাকে স্পিনার হতে বলেন কোচরা। তাকে নিবিড় যত্নে গড়ে তোলেন সাবেক আফগান অধিনায়ক দাওলাত আহমাদজাই।

এই বছর অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে চার ম্যাচে আট উইকেট শিকার করেন। তার বোলিংয়ের ধরন ও অস্ত্রের সমাহার দেখে তখনই তার দিকে নজর পড়ে বিশ্ব ক্রিকেটের অনেক বিশেষজ্ঞের।

যুব বিশ্বকাপের মাস খানেক পরই আফগানিস্তানে হয়ে অভিষেক হয়ে যায় ওয়ানডেতে। আয়ার?ল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি ওয়ানডে খেলে উইকেট পাননি, বিশেষ কিছু দেখাতে পারেননি। তবে তার ভেতর যে বিশেষ কিছু আছে, এটা তো অনেকেই জেনে গেছেন। চোট পাওয়া মুজিব-উর-রাহমানের বদলি হিসেবে আইপিএলে তাকে নিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। আগের আইপিএলের নিলামে নাম দিলেও দল পাননি সেবার। এবার নিলাম ছাড়াই পেয়ে গেলেন দল। যদিও ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। তবে জাতীয় দলে তার সুযোগ এলো পরের সিরিজেও। এবার প্রতিপক্ষ আরও কঠিন। তবে গাজানফার মেলে ধরলেন নিজেকে। প্রথম ম্যাচেই ১০ ওভারে স্রেফ ২০ রান দিয়ে নিলেন ৩ উইকেট। সিরিজের শেষ ম্যাচেও উইকেট নিলেন আরেকটি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে