প্রথম টেস্টে ব্যাটিং উইকেট বানিয়ে ইংল্যান্ডের কাছে বিধ্বস্ত হয়েছিল পাকিস্তান। চরম সমালোচনায় পড়ে পাকিস্তান বদলে ফেলে কৌশল। স্পিনবান্ধব উইকেট বানিয়ে সাজিদ খান ও নোমান আলিকে দলে নিয়ে বদলে দেয় সিরিজের হিসাব। তৃতীয় টেস্টেও ঘূর্ণি বলের জবাব দিতে না পেরে বড় ব্যবধানে হেরেছে ইংল্যান্ড।
রাওয়ালপিন্ডিতে শনিবার তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনেই শেষ হয়ে গেছে ম্যাচ। ৯ উইকেটে জিতে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে নিশ্চিত করে স্বাগতিকরা। স্পিন বিষে দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ড ১১২ রানে গুটিয়ে গেলে মাত্র ৩৬ রানের লক্ষ্য দাঁড়ায় পাকিস্তানের। সাইম আইয়ুবের উইকেট হারিয়ে ওই রান তুলে নেন আব্দুলস্নাহ শফিক ও শান মাসুদ। টার্নিং উইকেটে ম্যাচ শেষ তৃতীয় দিন লাঞ্চের আগেই। ২০২১ সালের ফেব্রম্নয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর পর অবশেষে আবার ঘরের মাঠে সিরিজ জয়ের স্বাদ পেল তারা।
যথারীতি এই জয়ের কারিগর নোমান আলি ও সাজিদ খান। পাকিস্তানের দুই স্পিনার আবারও গুঁড়িয়ে দিয়েছেন ইংল্যান্ডের ব্যাটিং। দু'জনের ঘূর্ণিতে ৪৬ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১১২ রানেই গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড। জয়ের জন্য ৩৬ রানের লক্ষ্যে ৩.১ ওভারেই পৌঁছে যায় পাকিস্তান। ৬ বলে ২৩ রানের ছোট্ট ঝড়ে কাজ শেষ করেন শান মাসুদ।
নোমান ও সাজিদ মিলেই শেষ করে দেন ইংল্যান্ডের ইনিংস। ইনিংসের প্রথম ওভারটি স্রেফ করেছিলেন সাইম আইয়ুব। এরপর দুই প্রান্ত থেকে টানা বোলিং করে গেছেন নোমান ও সাজিদ। বাঁ-হাতি স্পিনে নোমান নিয়েছেন ৬ উইকেট। ম্যাচে তার শিকার ৯ উইকেট। প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট শিকারি সাজিদের প্রাপ্তি এবার ৪ উইকেট। ১০ টেস্টের ক্যারিয়ারে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ম্যাচে ১০ উইকেটের স্বাদ পেলেন তিনি।
৭৭ পিছিয়ে থেকে আগের দিন বিকালে নেমেই তিন উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল ইংল্যান্ড। ৩ উইকেটে ২৪ রান নিয়ে নেমে কিছু দূর এগিয়েই উইকেট হারাতে থাকে সফরকারীরা। সবগুলো উইকেটই তুলেন দুই পাক স্পিনার নোমান ও সাজিদ। প্রবল চাপে কিছুটা প্রতিরোধ গড়েছিলেন হ্যারি ব্রম্নক ও জো রুট। থিতু হতেই তাদের ফেরান বাঁ-হাতি স্পিনার নোমান। অধিনায়ক বেন স্টোকসকেও ছাঁটেন তিনি। এরপর একের পর উইকেট তুলে ইনিংস মুড়ে দিতে থাকেন সাজিদ।
প্রথম ইনিংসে ২৬৭ রান করেছিল ইংল্যান্ড। জবাব দিতে নেমে ১৭৭ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল পাকিস্তান। সেখান থেকে সাউদ শাকিলের অনবদ্য সেঞ্চুরি (১৩৪) ও শেষ দিকে নোমান-সাজিদের ব্যাটে উল্টো বড় লিড নিয়ে নেয় তারা। বোলিংয়ের মতন ব্যাট হাতেও দারুণ ভূমিকা রাখেন প্রথম টেস্টে না থাকা সাজিদ-নোমান। নোমান ৮৪ বলে করেন ৪৫, ৪৮ বলে ৪৮ রানের ইনিংস খেলেন সাজিদ।
প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন সাজিদ, দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট পান নোমান। দুই স্পিনার মিলে ম্যাচে নেন ১৯ উইকেট! সাজিদ খান মুলতানে আগের টেস্টেও নেন ৯ উইকেট। দুই টেস্টে ১৯ উইকেট ও ব্যাট হাতে অবদান রেখে হন সিরিজ সেরা।