সাকিবকে নিয়ে তাইজুল

'একজন খেলোয়াড়কে ৫০ বছর খেলাতে পারবেন না'

প্রকাশ | ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
সংবাদ সম্মেলনে তাইজুল ইসলাম
ক্যারিয়ারের প্রায় পুরোটা সাকিব আল হাসানের ছায়া হয়েছিলেন তাইজুল ইসলাম। দলের সমন্বয়ের কারণে দেশের বাইরে অনেক সময় একাদশে সুযোগ মেলেনি তার। এবার সাকিব আর না থাকার সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় তার সামনে টানা খেলার সুযোগ। তবে সাকিব থাকা, না থাকা প্রসঙ্গে কিছুটা বিরক্তই ঝরল তার কণ্ঠে। বাংলাদেশ ক্রিকেটে বাঁহাতি প্রতিষ্ঠিত স্পিনারদের মধ্য সাকিব আল হাসানের পর তাইজুল ইসলামের অবস্থান। ব্যাটিংয়ে সাকিব এগিয়ে থাকায় অনেক সময় একাদশে জায়গা পাননি তাইজুল। এবার সাকিবের সঙ্গে নিজের পার্থক্যের বিষয়টি সামনে এনেছেন বাঁহাতি এই স্পিনার। সোমবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ক্যারিয়ারে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন তিনি। সাকিবের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে স্পর্শ করেছেন ২০০ উইকেটের মাইলফলক। ২০০ উইকেট পেতে সাকিবের থেকেও ছয় টেস্ট কম লেগেছে এই বাঁহাতি স্পিনারের। মিরপুরে এদিন আগে ব্যাট করে ১০৬ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। টার্নিং উইকেটে পরে প্রোটিয়াদের চেপে ধরেন তাইজুল। তার ৪৯ রানে ৫ শিকারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪০ রান তুলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দিনের খেলা শেষে গণমাধ্যমে হাজির হওয়া এই স্পিনারকে শুরুতেই সাকিব না থাকায় নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ বেশি পেয়েছেন কিনা জানতে চাওয়া হয়। এই প্রশ্নে কিছুটা যেন বিরক্তি ফুটে উঠল তার কণ্ঠে, 'প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে আপনার সাকিব ভাই নাই, তাই তো। সাকিব ভাই নাই, সাকিব ভাই ছাড়া যে আমি খেলি নাই, তা তো না। আমি থাকা পর্যন্ত অনেক ম্যাচ সাকিব ভাই ছাড়া খেলেছি। আমরা নিউজিল্যান্ডে টেস্ট জিতেছি, সাকিব ভাই ছিল না, আমরা যখন নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে এখানে ম্যাচ জিতছি; সাকিব ভাই ছিল না। এ রকম অনেক উদাহরণ আছে। আসলে আপনি তো একজন খেলোয়াড়কে ৫০ বছর খেলাতে পারবেন না।' মিরপুরে এই টেস্ট দিয়েই সাদা পোশাকের ক্যারিয়ারে ইতি টানতে চেয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু রাজনৈতিক বিরূপ পরিস্থিতিতে দেশে ফিরতে পারেননি তিনি। সাকিবের আনুষ্ঠানিক বিদায় তাই আর নেওয়া হচ্ছে না। সাকিবের সমাপ্তি স্বাভাবিকভাবে মেনে নিয়েই তাইজুলের জবাব, 'কখনো একজন আসবে, একজন যাবে। ১০ বছর, ১৫ বছর, খুব বেশি হলে ২০ বছর; এটা আমাদের মেনে নিতেই হবে। আসলে কোনো সন্দেহ নেই, উনি অনেক ভালো খেলোয়াড় ছিলেন। কিন্তু আমরাও দোয়া করব, আপনারাও দোয়া করবেন, উনার মতো যেন আরেকজন আসে বা এখন যারা আছে তারাও যেন ভালো পারফরম্যান্স করে।' সাকিব অলরাউন্ডার হওয়ায় বিদেশের মাঠে দ্বিতীয় বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে তাইজুলের সুযোগ আসত কম। আবার ঘরের মাঠে সাকিব খেললে অনেকটা সহায়ক ভূমিকায় থাকতেন তিনি। এ ব্যাপারে তাইজুলের মত, 'আসলে সাকিব ভাই থাকলেও আমি সাকিব ভাইয়ের কারণে উইকেট পেয়েছি, সাকিব ভাই না থাকলেও তার কারণে উইকেট পেয়েছি। বিষয়টা হয়ে গেছে এমন।' এতে অনেকটা আক্ষেপের সুর শোনা যায় ৩২ পেরুনো এই বাঁহাতি স্পিনারের কণ্ঠে। 'আসলে আমাদের দেশে সত্যি কথা বলতে কী, অনেক কিছুই মুখে মুখে হয় আর কী। মুখে মুখে বিষয়টা হলো, অনেকে আছে খারাপ করেও অনেক সময় আছে ট্রল হতে হতে তারকা হয়ে গেছে। আবার অনেক ভালো করে তারকা হতে পারেনি। এ রকম অনেক হয়েছে। আমি এটা মেনে নিয়েছি। মেনে নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।'