এসেই মাঠে নতুন কোচ সিমন্স
প্রকাশ | ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
ক্রীড়া ডেস্ক
ঢাকায় এসে হোটেলে চেক-ইন করেই মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হাজির হলেন বাংলাদেশ পুরুষ ক্রিকেট দলের নতুন প্রধান কোচ ফিল সিমন্স। বর্তমান জাতীয় দলের বাকি কোচিং স্টাফদের সঙ্গে পরিচিত হয়ে পরে কয়েকজন খেলোয়াড়ের সঙ্গেও কথা বলছেন তিনি। বুধবার সকালে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের সঙ্গে একই ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান সিমন্স।
সাবেক ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান এই ক্রিকেটারকে আগের দিনই প্রধান কোচ করার খবর দেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। তার আগে চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে অসদাচরণের জন্য সাসপেন্ড করার কথাও জানান তিনি। বুধবার সকাল থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ উপলক্ষে অনুশীলন করছিল বাংলাদেশ দল। সিমন্স মাঠে আসার পর মিডিয়া ম্যানেজার রাবীদ ইমাম তাকে নিয়ে বোলিং কোচ আন্দ্রে অ্যাডামসসহ অন্য কোচদের
সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।
সিমন্স পরে ছুটে যান নেটের দিকে। যেখানে অনুশীলন করছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাসরা। এই সময় তিনি লিটন, শান্ত, মুশফিকুর রহিম, খালেদ আহমেদ, নুরুল হাসান সোহানসহ কয়েকজন ক্রিকেটারের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজ দিয়েই দায়িত্ব শুরু সিমন্সের। তাকে আগামী বছরের ফেব্রম্নয়ারি-মার্চের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত দায়িত্ব দিয়েছে বিসিবি।
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে হাথুরুসিংহেকে একজন ক্রিকেটারকে শারীরিকভাবে নাজেহাল করার অভিযোগে সাসপেন্ড করে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার কথা জানান ফারুক। যদিও যোগাযোগ করা হলে গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপের সময়কার ঘটনা অস্বীকার করে সময়মতো জবাব দেওয়ার কথা জানান হাথুরুসিংহে। জানা গেছে, সিমন্স বুধবার চাকরিতে যোগদানের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন কেবল। আজ বৃহস্পতিবার থেকে ক্রিকেটারদের নিয়ে কাজ শুরু করবেন তিনি।
নব্বই দশকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ২৬ টেস্ট ও ১৪৩ ওয়ানডে খেলেছেন সিমন্স। ওপেনিং ব্যাটিং ও মিডিয়াম পেস বোলার হিসেবে দলে অবদান রাখতেন তিনি। টেস্টে তেমন আহামরি কিছু করতে না পারলেও ওয়ানডেতে বেশ নামডাক কুড়িয়েছিলেন তিনি। সীমিত ওভারে সাড়ে তিন হাজারের বেশি রান ও ৮৩ উইকেট আছে তার। ক্রিকেট ছাড়ার পর ২০০৪ সালে কোচিং পেশায় আসেন সিমন্স। দলটির হয়ে খুব বেশি ভালো সময় কাটেনি তার। ২০০৭ সালে দায়িত্ব নেন আয়ারল্যান্ডের। ২০১৫ সাল পর্যন্ত ছিলেন আইরিশদের সঙ্গে। ২০১৬ সালে তার অধীনে টি২০ বিশ্বকাপ জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কোচ সিমন্সের এটাই সেরা সাফল্য। এরপর আফগানিস্তানের কোচ ছিলেন কিছুদিন, ২০১৯ সালে আবার হন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোচ। ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাপুয়া নিউগিনির দায়িত্বে দেখা গেছে এই ক্যারিবিয়ানকে।
জাতীয় দলের বাইরে বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে কাজ করেছেন সিমন্স। সর্বশেষ তাকে যুক্তরাষ্ট্রের মেজর ক্রিকেট লিগে দেখা গেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ২৬ টেস্ট ও ১৪৩ ওয়ানডে খেলা সাবেক এই অলরাউন্ডার ২০০২ সালে খেলা ছেড়ে দেওয়ার পরপরই নাম লেখান কোচিংয়ে। জিম্বাবুয়ের হারারেতে একটি একাডেমির হয়ে কোচিং শুরুর বছর দুয়েক পর জিম্বাবুয়ের জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব পান। ২০০৭ সালে আয়ারল্যান্ডের
কোচ হন তিনি।
আইরিশদের সবচেয়ে লম্বা সময়ের কোচ ছিলেন তিনি। ২০১৫ সাল পর্যন্ত টানা দায়িত্বে থেকে পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেন। পরের বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় টি২০ বিশ্বকাপ জয় করে তার কোচিংয়ে। পরে আফগানিস্তানের ব্যাটিং কোচ ও প্রধান কোচও হন ২০১৭ সালে। ২০১৯ সালে আরেক দফায় ফেরেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোচের দায়িত্বে, যেটি শেষ হয় ২০২২ টি২০ বিশ্বকাপ দিয়ে। এছাড়াও বিভিন্ন জাতীয় দল ও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে নানা ভূমিকায়
দেখা গেছে তাকে।
২১ অক্টোবর মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হবে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকার সিরিজ। এই টেস্টই হবে বাংলাদেশের হয়ে সিমন্সের কোচিং অধ্যায়ের শুরু। এর আগে আজ বৃহস্পতিবার থেকে দলের অনুশীলনে থাকতে পারেন তিনি।