বিদায়ী ম্যাচটিকে মাহমুদউলস্নাহ কি বর্ণিল করে যেতে পারবেন?

প্রকাশ | ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
ভারতের বিপক্ষে শনিবারই ১৭ বছরের টি২০ অধ্যায় শেষ হচ্ছে মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদের -ওয়েবসাইট
মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে ১৭ বছর ধরে নির্ভরতার একটি স্তম্ভ। তার মুন্সিয়ানায় বাংলাদেশ পেয়েছে একাধিক অবিস্মরণীয় বিজয়। শনিবার রাতে টি২০ থেকে তিনি বিদায় নিলেন। মাহমুদউলস্নাহর বিদায়ে বাংলাদেশ টি২০ দলের পঞ্চপান্ডব অধ্যায় অতীত হয়ে যাচ্ছে। একে-একে মাশরাফি বিন মর্তুজা, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসানের পর বিদায় নিলেন মাহমুদউলস্নাও। সিরিজ চলে গেছে স্বাগতিক ভারতের পকেটে। বাংলাদেশ শিবিরও যেন হাল ছেড়ে দিয়েছে। নিয়মরক্ষার শেষ ম্যাচের আগে সবকিছু মনে হলো খাপছাড়া। অবশ্য জয়ের আশা যেখানে খোদ গুরু তথা কোচরাই করেন না, সেখানে শিষ্যরা কেনইবা করবেন! তবে হার-জিত যাই হোক এটি মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদের শেষ ম্যাচ হিসেবেই দৃশ্যপট অঙ্কিত করবে। হায়দরাবাদের রাজিব গান্ধী আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার রাতে ভারতের মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ দল। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শুরু হয়েছে ম্যাচটি। তবে ম্যাচের আগের দিন হায়দরাবাদে আলোচনার বস্তু ছিল মাহমুদউলস্নাহর বিদায়ী আয়োজন কেমন হবে। সংবাদ সম্মেলনে আসা কোচ নিক পোথাস এড়িয়ে গেছেন অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে। টিম ম্যানেজমেন্টও মুখে এঁটেছে কুলুপ। তবে সবচেয়ে বড় উপহারটা দিতে পারেন মাহমুদউলস্নাহর সতীর্থরাই। কিন্তু প্রথম দুই ম্যাচে গো-হারা হেরে যাওয়ার পর তৃতীয় ম্যাচে এসে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কী না এটা এখন বড় প্রশ্ন। বাংলাদেশ দলের ফিল্ডিং কোচ পোথাসের কাছেও প্রশ্ন ছিল শেষ ম্যাচের প্রত্যাশা নিয়ে। তার উত্তরে অবশ্য তেমন কিছুর আশা যে, করছেন সেটির আভাস পাওয়া যায়নি। ভারতের বিপক্ষে শনিবার রাতে তিন ম্যাচের সিরিজের শেষ টি২০ খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ দল। এটাই হবে মাহমুদউলস্নাহর দীর্ঘ ১৭ বছরের ক্যারিয়ারের শেষ আন্তর্জাতিক টি২০। তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ টি২০ ম্যাচটি হবে হায়দরাবাদের রাজিব গান্ধী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশ সময় সাড়ে ৭টায় শুরু হয়েছে ম্যাচটি। তাই তো বিদায়ের দিনটাকে রঙিন করতে হলে এই ম্যাচে ভালো কিছু করতে হবে মাহমুদউলস্নাহকে। এর আগে, ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিলেন মাহমুদউলস্নাহ। হারারেতে ওই টেস্টে ১৫০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে বাংলাদেশ দলকে উপহার দিয়েছিলেন দারুণ এক জয়। হারারেতে বাংলাদেশের সেই টেস্ট জয় আজও স্মরণীয় হয়ে আছে। ভারতের বিপক্ষে জয় দিয়ে সিরিজ শেষ করতে পারলে মাহমুদউলস্নাহর বিদায়টা বর্ণিল হবে। যদিও বাস্তবতা ভিন্ন। নাজমুল হোসেন শান্তর দল এ মুহূর্তে মোটেও ছন্দে নেই। সিরিজের প্রথম টি২০-তে বাজেভাবে হেরে যায় টাইগাররা। দ্বিতীয় ম্যাচেও ব্যাটিং ব্যর্থতায় বড় ব্যবধানে হেরে সিরিজ হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। তবু টি২০-তে নিজের শেষ ম্যাচকে স্মরণীয় করে রাখবেন, মাহমুদউলস্নাহর ভক্তদের এমনটাই প্রত্যাশা। টি২০'র বিদায়ী ম্যাচে মাহমুদউলস্নাহকে রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ম্যাচের আগে বা পরে গার্ড অব অনার এবং ক্রেস্ট দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। বিসিবির একজন কর্মকর্তা জানান, ভারতেই মাহমুদউলস্নাহর জন্য বিদায়ী ক্রেস্ট বানানো হয়েছে। তবে এসবের চেয়েও বড় সম্মান দেওয়া হবে ম্যাচটি জিততে পারলে। মাহমুদউলস্নাহ কি নিজের শেষ ম্যাচটি বর্ণিল করে যেতে পারবেন? টি২০-তে মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ জাতীয় দলে মাহমুদউলস্নাহর ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল ২০০৭ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। এই সময়ে মাহমুদউলস্নাহ আন্তর্জাতিক টি২০ খেলেছেন ১৪০টি। ভারতের বিপক্ষে শেষ ম্যাচ খেললে সেটি দাঁড়াবে ১৪১টিতে। বাংলাদেশের জার্সিতে সবচেয়ে বেশি টি২০ খেলার রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন তিনি। ১৪০টি ম্যাচে মাহমুদউলস্নাহ ১১৭.৫১ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন ২ হাজার ৪৩৬। এই ফরম্যাটে তার সর্বোচ্চ রান ৬৪। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক মাহমুদউলস্নাহ। সবচেয়ে বেশি ২ হাজার ৫৫১ রান করেছেন সর্বশেষ টি২০ বিশ্বকাপ শেষে অবসর নেওয়া সাকিব। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বল হাতেও দেশের জার্সিতে ভূমিকা রেখেছেন এই অলরাউন্ডার। বল হাতে হাত ঘুরিয়ে এই ফরম্যাটে উইকেট নিয়েছেন ৪০টি। সেরা বোলিং ফিগার ১০ রান দিয়ে তিন উইকেট। ফিল্ডার হিসেবেও বাকিদের চেয়ে এগিয়ে সাইলেন্ট কিলারখ্যাত এই অলরাউন্ডার। বিশ ওভারের ম্যাচে বাংলাদেশিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫০টি ক্যাচ লুফে নিয়েছেন মাহমুদউলস্নাহ। টি২০-তে বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়ার রেকর্ড মাহমুদউলস্নাহর দখলে। ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে তার অধিনায়কত্বে মোট ৪৩টি আন্তর্জাতিক টি২০ খেলেছে বাংলাদেশ দল। সাকিব আল হাসানের সঙ্গে যৌথভাবে সবচেয়ে বেশি জয়ও তার। অধিনায়ক হিসেবে ১৬টি ম্যাচ জিতেছেন মাহমুদউলস্নাহ। ২০২১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত টি২০ বিশ্বকাপেও লাল-সবুজের নেতৃত্ব দেন তিনি।