শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১

ভারত সফর প্রতিদিন শেখার দিন, মনে করেন পোথাস

ক্রীড়া ডেস্ক
  ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ফিল্ডিং কোচ নিক পোথাসের সঙ্গে টাইগার দলপতি নাজমুল হোসেন শান্ত -ওয়েবসাইট

চেন্নাই, কানপুর, গোয়ালিয়র থেকে দিলিস্ন হয়ে বাংলাদেশ দল এখন হায়দরাবাদে। চেন্নাই থেকে শুরু করে দিলিস্ন; লাল সবুজের প্রতিনিধিরা কোথাও হাসিমুখে মাঠ ছাড়তে পারেনি। নাজমুল হোসেন শান্তদের পারফরম্যান্স বলছে আরও একটি বাজে দিন অপেক্ষা করছে। তবে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট এই হারকেও ইতিবাচকভাবে নিয়ে শেখার বিষয়টি ভাবছেন।

তৃতীয় ও শেষ টি২০ আগে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে আসেন টাইগারদের ফিল্ডিং কোচ নিক পোথাস এমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন। সঙ্গে ভারতে বড় দলগুলোর নাকানিচুবানি খাওয়ার কথাও বলতে ভুল করেননি এই প্রোটিয়া কোচ। তিনি বলেন, 'ভারতে অনেক দলই এসে বাজে সফর কাটিয়ে যায়। আমাদের যেদিকে নজর দিতে হবে তা হচ্ছে শিখতে পারছি কি না, সামনের দিকে তাকাতে হবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আসছে সামনে, টি২০ বিশ্বকাপ আছে।'

'আমরা সবসময়ই জিততে চাই, দুনিয়ার যেকোনো খেলাতেই এটি সবাই করে থাকে। তবে আমাদের বাস্তবিকভাবেও চিন্তা করতে হবে। আমরা কিছুটা ভাগ্যবানও যে ভারত সফরে আসতে পেরেছি। কারণ এখানে অনেক কিছু শেখা হয়েছে আমাদের। শিক্ষাটা সৎভাবে হতে হবে'- আরও যোগ করেন পোথাস।

এর আগে ২০১৯ সালে ভারত সফরে এসেছিল বাংলাদেশ। টেস্ট সিরিজে ধবলধোলাই হলেও টি২০ সিরিজের প্রথমটি জিতেছিল দিলিস্নতে। এবার প্রথম দুটি হেরে ইতিমধ্যে সিরিজ খুইয়েছে। শেষ টি২০তে কী হবে বলে দেবে সময়। এখন পর্যন্ত চার ম্যাচ ধরলে, পাঁচ বছর আগের পারফরম্যান্স থেকেও যেন অবনতি হয়েছে, বিশেষ করে টি২০তে।

বাংলাদেশ প্রথম টেস্টে হারে ২৮০ রানে, দুই দিন বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পরও কানপুরে দ্বিতীয় টেস্টে হারে ৭ উইকেটে। গোয়ালিয়রে প্রথম টি২০তে ৭ উইকেটে হারের পর দ্বিতীয়টিতে হারে ৮৬ রানে। যেটি সবচেয়ে বড় ব্যবধানের হার। বারবার শেখার কথা বললেও পারফরম্যান্সের পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না। যত সামনে যাচ্ছে ততো বেশি খারাপ হচ্ছে।

কী শিখছে বাংলাদেশ দল? সেটিও বলে দিয়েছেন টাইগারদের ফিল্ডিং কোচ পোথাস, 'আপনি চাইলে বিশ্বের সেরা কারও সাথে কথা বলে দেখতে পারেন, তারা আপনাকে বলবে যে, প্রতিদিনই শেখার দিন। যখন আপনি শেখা বন্ধ করে দেবেন, তখনই সমস্যা শুরু হবে। ফলে এটা কোনো সমস্যা নয় আমাদের। এমনকি ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবও ম্যাচ শেষে বলেছিল সে অনেক কিছু শিখেছে, কীভাবে বোলারদের ব্যবহার করতে হবে। সবসময় আপনাকে শিখতে হবে।'

এদিকে ভারতের ব্যাটিং সামর্থ্যের সঙ্গে কোনোভাবেই কুলিয়ে উঠতে পারছে না বাংলাদেশ দল। সিরিজের প্রথম দুই টি২০তেই সেটা ছিল স্পষ্ট। তৃতীয় ও শেষ টি২০ আগে যখন বাংলাদেশের ছক্কা মারার সামর্থ্যের কথা উঠল, ফিল্ডিং কোচ নিক পোথাস সামনে আনলেন দুই দলের শারীরিক শক্তির পার্থক্যের কথা!

তিন ম্যাচের সিরিজ এরই মধ্যে হেরে যাওয়া বাংলাদেশের সামনে কাল শনিবারের ম্যাচটা হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর মিশন। ঘরের মাঠে ভারত এমনিতেই অপরাজেয়। বাংলাদেশ সিরিজ দিয়ে টানা ১৬তম সিরিজ তারা নিশ্চিত করেছে। সর্বশেষ ম্যাচের আগে বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতা নিয়ে পোথাসকে প্রশ্নের জবাব দিতে হয়েছে। ছক্কা মারার সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি দুই দলের ব্যাটারদের শারীরিক পার্থক্যের বিষয়টি তুলে এনেছেন, 'পার্থক্যটা আসলেই কঠিন। যদি একজনের ওজন ৯৫-১০০ কেজি হয়, আরেকজনের ৬৫ কেজি। তাহলে তো যে বেশি ভারী সেই বলটা বেশি দূরে মারতে পারবে। অবশ্যই এক্ষেত্রে টাইমিং, টেকনিক গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি।'

এ সময় ভারতের টি২০ সাফল্যে কীভাবে আইপিএল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে সেটার ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। তার মতে, 'আপনাকে আইপিএলের দিকেও খেয়াল করতে হবে। এটা বিশ্বের অন্যতম সেরা একটি প্রতিযোগিতা। যেখানে শীর্ষ মানের খেলোয়াড়রা খেলে। আইপিএল আন্তর্জাতিক পর্যায়ের জন্য খেলোয়াড়দের তৈরি করে। ভারতের ছক্কা মারার সামর্থ্যের সঙ্গে আমাদের তুলনায় মনে হচ্ছে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ আমাদের তুলনায় কয়টা ছক্কা মেরেছে। ওদের অনেক শক্তিশালী খেলোয়াড় আছে। আমরা শক্তিমত্তা, কন্ডিশনিং নিয়ে কাজ করছি। কিন্তু বংশগতি নিয়ে তো লড়াই করতে পারবেন না।'

এ সময় পোথাসের সামনে প্রশ্ন রাখা হয় তাহলে বাংলাদেশ কেন প্রথম দুই ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক স্কোরও করতে পারেনি। যেখানে ১৫০ রানের কাছে যাওয়ার আগেই তাদের ঘাম ছুটে গেছে। এমন প্রশ্নে পোথাসের যুক্তি, 'ঘরের মাঠে আমরা অপ্রতিরোধ্য একটা দলের সঙ্গে খেলছি। এটা ঠিক দুই দলের ব্যবধানটা চোখে পড়ছে। উলেস্নখযোগ্যভাবে পারভেজ হোসেন ইমন যেমন মাত্র দুই ম্যাচ খেলেছে। সে আছে টপ অর্ডারে। হঁ্যা, আমাদের অভিজ্ঞ খেলোয়াড় অবশ্যই আছে। কিন্তু পার্থক্যটা সেখানেই।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে