ঘরের মাঠে ভালো উইকেটের আকুতি তাসকিনের

প্রকাশ | ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
দ্বিতীয় টি২০তে ভারতের ব্যাটসম্যান সঞ্জু স্যামসনকে আউট করার পর তাসকিন আহমেদকে অভিনন্দন জানান নাজমুল হোসেন শান্ত ও রিশাদ হোসেনরা -ওয়েবসাইট
ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি২০ ম্যাচেও বিধ্বস্ত হয়ে সিরিজ খুইয়েছে সফরকারী বাংলাদেশ দল। তাতে আরও একবার কাঠগড়ায় বাংলাদেশের উইকেট। ঘরের মাঠে স্স্নো উইকেটে খেলে বাইরে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। তবে ব্যাটসম্যানদের টি২০ ক্রিকেটে উন্নতি করতে হলে ঘরের উইকেট আরও ভালো তৈরি করতে হবে বলে মনে করেন টাইগার পেসার তাসকিন আহমেদ। দিলিস্নতে বুধবার রাতে দ্বিতীয় টি২০-তে বাংলাদেশ ৮৬ রানে বিব্রতকর হারের পর সংবাদ সম্মেলনে আসেন তাসকিন আহমেদ। রানের দিক থেকে টি২০-তে ভারতের বিপক্ষে এটাই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পরাজয়। এদিন উইকেটে কিছুটা অসমান বাউন্স থাকলেও পাওয়ার পেস্নতে ৪৫ রানে তিন উইকেট হারানো সত্ত্বেও টি২০-তে তাদের সামর্থ্য দেখিয়েছে ভারতের ব্যাটসম্যানরা। 'তারা নিয়মিত ১৮০ থেকে ২০০ রান করে। ঘরের মাঠে আমরা করি ১৩০-৪০ রান। আমাদের সেই অভ্যাস নেই (বড় রান করা) এবং এটাই বাস্তবতা, আশা করি সামনের দিনগুলোতে আমাদের ঘরের অবস্থা আরও ভালো হবে এবং সেই সময় আমরা বড় রান তাড়া করতে পারব এবং ডিফেন্সও করতে পারব,' বুধবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন তাসকিন। ভারতের ব্যাটসম্যানরা যে ধরনের অসাধারণ শট নিয়েও জানতে চাওয়া হয় তাসকিনের কাছে। তাদের শট সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে ফের উঠে আসে ঘরের মাঠের উইকেট প্রসঙ্গ। যেখানে ব্যাটসম্যানদের শট খেলার জন্য অনুকূল নয় বলে জানান তিনি, 'পাওয়ার, গঠন, সামর্থ্য এবং অভিযোজনের মতো সবকিছুরই প্রয়োজন আছে। সামান্য ত্রম্নটি থাকলেও তারা (ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা) সাবলীলভাবে শট খেলে। বাড়িতে আমরা যদি শট খেলার সময় শুয়ে শুয়ে শট খেলার চেষ্টা করি, তাহলে এটা আমাদের মাথায় আঘাত করবে,' বলেন তাসকিন। ভারতীয় ব্যাটারদের এমন দানবীয় ব্যাটিং করার সামর্থ্যের কারণ উলেস্নখ করে আরও একবার বলেন, 'ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই ভালো উইকেটে খেলার কারণে এই অভ্যাসটা বেড়েছে, এটাই তাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।' মিরপুরের হেড কিউরেটর গামিনি ডি সিলভাকে পরিবর্তন করলে আরও ভালো উইকেট নিশ্চিত হবে কিনা জানতে চাইলে এই পেসার বলেন, 'সিদ্ধান্ত বোর্ডের হাতে থাকলেও এটা হতে পারে।' তবে এর মধ্যেই দেশে ফিরে আরও ভালো উইকেট তৈরির কথা তারা ক্রিকেট বোর্ডকে জানিয়েছেন বলে জানান তাসকিন, 'আমরা ইতোমধ্যেই বোর্ডকে জানিয়েছি (ভালো উইকেট তৈরি করতে এবং সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য) এবং বোর্ড এটা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে। বোর্ড আমাদের আরও ভালো অবস্থার জন্য সাহায্য করবে।' পাওয়ার পেস্নতে ৪৫ রান দিয়ে বাংলাদেশ ভারতের সাঞ্জু স্যামসন, অভিষেক শর্মা ও অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবকে ফেরায়। শুরুটা দারুণ ছিল। কিন্তু এই সময়েই মস্ত বড় ভুল করে ফেলে বাংলাদেশ, যার খেসারত দিতে হয়েছে দলকে। পঞ্চম ওভারে নিতিশ কুমার রেড্ডির ক্যাচ ফেলেন কিপার লিটন দাস। এই ভারতীয় ব্যাটারই বাংলাদেশি বোলারদের ওপর চড়াও হন। তাতে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথমবার টি২০-তে দুইশ' ছাড়ায় এবং রেকর্ড ৮৬ রানে জেতে ভারত। বাংলাদেশের পেসার বললেন, ম্যাচের শুরুতে নিতিশের ক্যাচ ফেলার মাশুল দিতে হয়েছে তাদের। তাছাড়া শিশিরের কারণে তাদের স্পিনাররাও ভূমিকা রাখতে না পারায় প্রতিপক্ষের স্কোর নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। নিতিশ ও রিংকু সিং ৪৯ বলে ১০৮ রানের জুটি গড়েন। তাসকিন বললেন, 'ক্যাচ ফেলা সবসময় খারাপ, এর মাশুল দিতে হয়। বিশেষ করে তাদের মতো দলের বিপক্ষে, যারা বিশ্বের সেরা দল। ভুলের মাত্রা খুব ছোট, কিন্তু বড় খেসারত দিতে হলো।' স্পিনাররা ৮ ওভার বোলিং করে ১১৬ রান দিয়েছেন। তাসকিন স্বীকার করলেন, এমন বাজে দিন তারা সচরাচর দেখেননি, 'দেখেন, আমরা পাওয়ার পেস্নতে ভালো করেছিলাম। কিন্তু পরে তারা ভালো ব্যাটিং করল। দুর্ভাগ্যবশত স্পিনারদের জন্য বাজে দিন ছিল। সাধারণত এতটা বাজে দিন আমাদের দেখতে হয়নি। কিন্তু টি- টোয়েন্টি যে কোনো দিন যে কোনো কিছু হতে পারে। শিশিরের কারণে স্পিনাররা বল গ্রিপ করতে পারছিল না। আমরা ১১তম কিংবা ১২তম ওভার পর্যন্ত ম্যাচে ছিলাম। তাদের যদি ১৮০-এর নিচে আটকাতে পারতাম, সেটা তাড়া করা যেত।' তাসকিন বললেন, বারবার বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থতার কারণ তারা দেশের মাটিতে ভালো পিচে খেলতে অভ্যস্ত নয়। তার দাবি, বিশ্বের বিভিন্ন লিগে অংশ নিলে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের খেলায় আরও উন্নতি হবে।