গত জুনে বিশ্বকাপের পর এবারই প্রথম টি-২০ খেলতে নামছে বাংলাদেশ। তবে ভারতের বিপক্ষে এই সিরিজে থাকছেন না সাকিব আল হাসান। টেস্ট সিরিজ চলাকালীন ঘোষণা দেন আন্তর্জাতিক টি-২০ থেকে অবসর নেওয়ার। সাকিব না থাকায় একটি বড় শূন্যতা তৈরি হয়েছে বাংলাদেশ দল। তবে তা ভালোভাবে পূরণের আশ্বাসই দিলেন তাওহিদ হৃদয়।
টেস্ট সিরিজে অনুমিত ভাবেই ভারতের কাছে পাত্তা পায়নি বাংলাদেশ। তবে এবার ভিন্ন ফরম্যাটের লড়াই। সদ্য টি-২০ বিশ্বকাপ জেতা ভারতের বিপক্ষে তাদের ঘরের মাঠে লড়াইটা অনেক কঠিন হবে। তবে তাদের হারানো সম্ভব বলে মনে করেন তাওহিদ হৃদয়। সাকিব আল হাসান না থাকলেও তার অভাব পুষিয়ে নেয়া সম্ভব বলেও মনে করেন তরুণ এই ক্রিকেটার।
গোয়ালিয়রে আজ রোববার প্রথম ম্যাচে টিম ইন্ডিয়ার মুখোমুখি বাংলাদেশ। গোয়ালিয়রের শ্রীমন্ত মাধবরাও সিন্ধিয়া স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় খেলাটি শুরু হবে। ম্যাচের আগের দিন শনিবার দলের হয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাকিবের অনুপস্থিতিতে মাঠে নামা, ভেনু্যর উইকেট এবং নিজেদের সামর্থ্যের বিষয়ে কথা বলেছেন তরুণ ব্যাটার তাওহিদ হৃদয়।
গোয়ালিয়রে দীর্ঘদিন পর আবার আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সেখানকার উইকেট এবং নিজেদের প্রস্তুতির বিষয়ে হৃদয় বলেন, 'আমরা এখানে আসার আগে বেশির ভাগ ক্রিকেটারই দেশে অনুশীলন করেছি। এখানকার গরম আমাদের জন্য তেমন দুশ্চিন্তার বিষয় নয়। আমরা এই গরমে খেলে অভ্যস্ত। বাংলাদেশেও একই আবহাওয়া। এখানে দুইদিন অনুশীলন করলাম। উইকেট কিছুটা মন্থর ও নিচু। আমরা মাঠকর্মীদের কাছ থেকে তথ্য নিচ্ছি। ঘরোয়া ক্রিকেটের কিছু ম্যাচও হয়েছে এখানে। মনে হচ্ছে উইকেটটা মন্থরই হবে। আমরা আমাদের মতো খেলার চেষ্টা করব।'
আন্তর্জাতিক টি-২০ থেকে অবসর নিয়েছেন সাকিব আল হাসান। দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকাকে ছাড়া নতুন করে টি-২০ দল সাজাতে হচ্ছে বাংলাদেশ দলকে। সাকিবকে ছাড়া খেলার অনুভূতি নিয়ে হৃদয় বলেন, 'আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চাপ সবসময়ই থাকে। যদি সেটা মাথায় থাকে তাহলে তো পারফর্ম করা যাবে না। আমাদের প্রক্রিয়া মেনে চলতে হবে, ভালো করার চেষ্টা করতে হবে। আর সাকিব ভাই নেই। অবশ্যই আমরা সাকিব ভাইকে মিস করব। কিন্তু এখান থেকে একদিন না একদিন সবাইকে যেতেই হবে। আশা করি আমরা সাকিব ভাইয়ের শূন্যতা ভালোভাবে কাটিয়ে ওঠা যাবে।'
১৪ মাস পর টি-২০ দলে ফিরেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। সাকিবের অভাব পূরণে তার ওপরই দলের আস্থাটা বেশি থাকছে। হৃদয় বলেন, 'সাকিব ভাইয়ের ব্যাপারটা হলো, অবশ্যই উনি যেহেতু এত দিন ছিলেন, এখন একটু মানিয়ে নিতে সমস্যা হবে, একাদশ সাজাতে একটু সমস্যা হবে। কারণ, সাকিব ভাই দুই দিক থেকে (ব্যাটিং-বোলিং) ভালো সমন্বয় এনে দিতেন। আমরা মিরাজকে দলে নিয়ে এসেছি। আশা করব, মিরাজ যেন ওই জায়গাটায় দ্রম্নত মানিয়ে নেয়।'
কানপুর টেস্ট শুরুর আগের দিন সাকিব টি-২০ থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেও দলের প্রয়োজনে ফিরতেও পারেন বলে জানিয়েছিলেন। তার ভাষ্য ছিল 'আমি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ গুলো খেলতে থাকি, ছয় মাস-এক বছর পরে যদি বিসিবি মনে করে যদি আমার টি-২০কে কন্ট্রিবিউট করার সুযোগ আছে, আমি পারফর্ম করছি এবং ফিট আছি, তারপর আমরা ডিসাইড করতে পারি।'
২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খুলনায় সাকিবের টি-২০ অভিষেক হয়। কিংসটাউনে গত ২৪ জুন আফগানিস্তানের বিপক্ষে শেষ টি-২০ খেলেছেন সাকিব।
চলতি বছর টি-২০ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে ভারত। ঘরের মাঠে তারা আরও ভয়ংকর। এমন দলের বিপক্ষে জয় সম্ভব কিনা, এই প্রশ্নের উত্তরে হৃদয় বলেন, 'এভাবে আমরা চিন্তা করি না। আমরা যখন মাঠে খেলতে নামি তখন খেলোয়াড় কে আছে কে নাই, এগুলো ওভাবে মাথায় কাজ করে না। আমরা সবসময় আমাদের দিকটায় নজর দিই। আমাদের যে প্রক্রিয়া আছে সেগুলো মেইনটেইন করার চেষ্টা করি। হয়তোবা সুযোগ আছে হারানোর, এমন না যে তাদের বড় দলকে আমরা হারাইনি। বড় দল ছোট দল বলে টি২০ ক্রিকেটে কিছু নেই। আমার কাছে মনে হয় পার্টিকুলার দিনে যে ভালো করবে সেই (জিতবে)।'
গোয়ালিয়রের সঙ্গে খুব একটা পরিচিত নয় বাংলাদেশ। তার ওপর এই শহরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটই ফিরছে ১৪ বছর পর। দুদিন অনুশীলনের পর উইকেট গতি কিংবা বাউন্স খুব বেশি থাকবে না বলেই ধারণা হৃদয়ের।
হৃদয় বলেন, 'টি-২০ খেলা তো রানের খেলা। এখানে যে যত রান করবে...। অবশ্যই সবাই রান চায়, সব দলই রান করতে চায়। এখানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ এখনো হয়নি। নতুন ভেনু্য, এখানকার ব্যাপারে আমরা জানি না। আমি মনে করি যে এখানে আমাদের খেলাটা শুরু হলে বুঝতে পারব, উইকেটটা দেখে কেমন হয়। অনুশীলনে উইকেট দেখে বুঝেছি এখানে উইকেট স্স্নো আছে, লো আছে, এরকম উইকেটে বড় রানের ম্যাচ খুব কমই হয়। আইপিএল খেলাও এখানে হয়নি। তো দেখা যাক
যে কি হতে পারে।'