শেষ মুহূর্তে জয় হাতছাড়া রিয়ালের
প্রকাশ | ০১ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
ক্রীড়া ডেস্ক
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ চলল ম্যাচজুড়ে। প্রথমার্ধে খুব বেশি পরিষ্কার সুযোগ যদিও পেল না কেউ। বিরতির পর এদের মিলিতাওয়ের গোল ধরে রেখে জয়ের দুয়ারে পৌঁছে গেল রিয়াল মাদ্রিদ। তবে যোগ করা সময়ে তাদের জালে বল পাঠিয়ে এক পয়েন্ট তুলে নিল অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ। অ্যাতলেতিকোর ওয়ান্দা মেত্রোপলিতানোয় ৭০ হাজারের বেশি দর্শকের উপস্থিতিতে লা লিগার ম্যাচটি ১-১ ড্র হয়েছে। স্বাগতিকদের গোলটি করেছেন আনহেল কোররেয়া।
৮ ম্যাচে ৫ জয় ও ৩ ড্রয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে রিয়াল। ৪টি করে জয় ও ড্রয়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে তিনে অ্যাতলেতিকো। ২১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে বার্সেলোনা।
দ্বিতীয়ার্ধে মিলিতাওয়ের গোলের পর রিয়ালের গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়াকে লক্ষ্য করে অ্যাতলেতিকোর সমর্থকদের নানা জিনিস ছুড়ে মারার ঘটনায় খেলা বন্ধ ছিল প্রায় ২০ মিনিট। গত মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে যে দুটি ম্যাচ হেরেছিল রিয়াল, দুটিই ছিল অ্যাতলেতিকোর মাঠে। এবার প্রতিশোধ নেওয়ার লক্ষ্য ছিল লিগ চ্যাম্পিয়নদের। কিন্তু অনেকটা সময় লিড ধরে
রেখেও জিততে পারল না কার্লো আনচেলত্তির দল।
লা লিগায় তাদের অপরাজেয় যাত্রা অবশ্য পৌঁছে
গেল টানা ৪০ ম্যাচে।
শুরু থেকে দুই দলই খেলতে থাকে সমানতালে। প্রথম মিনিটে একটি হাফ-চান্স তৈরি করে রিয়াল। ডানদিক থেকে লুকা মদ্রিচের ক্রসে বক্সে বলে পা ছোঁয়াতে পারেননি ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রদ্রিগো। দশম মিনিটে প্রথম উলেস্নখযোগ্য সুযোগ পায় অ্যাতলেতিকো। মাঝমাঠ থেকে সতীর্থের বাড়ানো পাস ধরে হুলিয়ান আলভারেস বাঁ দিকে আন্টোনিও রুডিগারের বাধা এড়িয়ে ঢুকে পড়েন বক্সে। দুরূহ কোণ থেকে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী ফরোয়ার্ডের শট পা দিয়ে ঠেকান কোর্তোয়া।
সপ্তদশ মিনিটে ইয়ান ওবলাকের নৈপুণ্যে বেঁচে যায় অ্যাতলেতিকো। মদ্রিচের পাসে বক্সের বাইরে থেকে ফেদেরিকো ভালভের্দের জোরাল শট ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন স্স্নোভেনিয়ান গোলরক্ষক। ১০ মিনিট পর প্রায় ৩৫ গজ দূর থেকে ভালভের্দের ফ্রি-কিকে পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে যায় বল। ৩৬তম মিনিটে দুই খেলোয়াড়ের মাঝ দিয়ে জুড বেলিংহ্যামের নিচু শট ঠেকিয়ে দেন ওবলাক।
প্রথমার্ধে গোলের জন্য পাঁচটি শট নিয়ে দুটি লক্ষ্যে রাখতে পারে রিয়াল, অ্যাতলেতিকোর চার শটের দুটি লক্ষ্যে ছিল। দ্বিতীয়ার্ধের ষষ্ঠ মিনিটে আরেকবার গোল পাওয়ার কাছাকাছি যায় রিয়াল। মদ্রিচের পাসে বক্সের বাইরে থেকে রদ্রিগোর শট ক্রসবারের সামান্য ওপর দিয়ে যায়। অবশেষে ৬৪তম মিনিটে গোলের দেখা পায় রিয়াল। বক্সের বাইরে ফ্রি-কিকে মদ্রিচ বাঁ দিকে বল বাড়ান ভিনিসিউসকে। রদ্রিগো দে পলের বাধা এড়িয়ে ব্রাজিলিয়ান তারকা ক্রস দেন বক্সে। হেডের চেষ্টায় বলের নাগাল পাননি কেউ। ফাঁকায় দাঁড়ানো মিলিতাও প্রথম দফা বল থামিয়ে শট নেন ডান
পায়ে। অ্যাতলেতিকোর এক ডিফেন্ডারের পায়ে
লেগে জালে জড়ায় বল।
একটু পরই গ্যালারি থেকে কেউ লাইটার ছুড়ে মারেন কোর্তোয়াকে লক্ষ্য করে। সেটা তিনি দেখান রেফারিকে। রেফারি বন্ধ করে দেন খেলা। দুই কোচের সঙ্গে আলোচনার পর খেলোয়াড়দের মাঠ ছেড়ে ড্রেসিংরুমে চলে যেতে বলেন তিনি। অ্যাতলেতিকোর অধিনায়ক ও কোচ শান্ত থাকতে বলেন সমর্থকদের। টিভি ক্যামেরায় দেখা যায়, একটি সাদা ব্যাগে করেও কিছু একটা ছুড়ে মারা হয়েছিল কোর্তোয়ার উদ্দেশ্যে।
স্টেডিয়ামের লাউডস্পিকারে ঘোষণা আসে, ১০ মিনিটের জন্য স্থগিত করা হয়েছে খেলা। এই মাঠে এর আগে একাধিকবার দর্শকদের বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছিলেন ভিনিসিউস। মিনিট বিশেক পর আবার শুরু হয় খেলা। ৭৩তম মিনিটে দ্বিগুণ হতে পারত ব্যবধান। বক্সের বাইরে থেকে ভিনিসিউসের বাঁ পায়ের জোরাল শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন ওবলাক। ৮২তম মিনিটে সুযোগ পায় আতলেতিকো। বক্সে দুজনের বাধা এড়িয়ে সামুয়েল লিনোর নেওয়া শটে একহাতে ক্রসবারের ওপর দিয়ে বল পাঠান কোর্তোয়া। ৮৭তম মিনিটে ভিনিসিউসের বদলি নামানো হয় আরেক ব্রাজিলিয়ান এন্দ্রিককে। এর আগে-পরে মদ্রিচ ও রদ্রিগোকেও তুলে নেন আনচেলত্তি। ৮৯তম মিনিটে অনেকটা দূর থেকে এন্দ্রিকের জোরাল শট হয় লক্ষ্যভ্রষ্ট। স্পেনের বাইরের দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে (প্রথমজন লিওনেল মেসি) লা লিগায় ৫০০ ম্যাচ খেলার মাইলফলক ছোঁয়া অঁতোয়ান গ্রিজমানের যোগ করা সময়ে নেওয়া ফ্রি-কিক ক্রসবারের সামান্য ওপর দিয়ে যায়। আট মিনিট যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে রিয়ালের জালে বল পাঠায় অ্যাতলেতিকো। বাঁ দিক থেকে হাভি গালান পাস দেন বক্সে। ছুটে গিয়ে এগিয়ে আসা কোর্তোয়াকে ডজ দেন কোররেয়া। তার পেছনে লেগে ছিলেন মিলিতাও। রিয়াল ডিফেন্ডারের বাধা সামলে বল জালে পাঠান আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। রেফারি শুরুতে হ্যান্ডবলের জন্য গোল দেননি। তবে ভিএআরের সাহায্যে গোলের বাঁশি বাজান তিনি। হ্যান্ডবল হয়নি, অফসাইডেও ছিলেন না কোররেয়া। শেষ সময়ে ফ্রান গার্সিয়াকে ফাউল করে লালকার্ড দেখেন আতলেতিকোর মিডফিল্ডার মার্কোস ইয়োরেন্তে।