শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

কালো মাটির পিচে ইতিহাস বদলের সুযোগ বাংলাদেশের সামনে

ক্রীড়া ডেস্ক
  ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
কালো মাটির পিচে ইতিহাস বদলের সুযোগ বাংলাদেশের সামনে

২৩ টেস্টে মাত্র তিন হার। জয় ৭ ম্যাচে। আর ড্র হয়েছে ১৩ ম্যাচ। কানপুরের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে ভারতের রেকর্ড। ঠিক এমনই। ঘরের মাঠে অপ্রতিরোধ্য ভারত কানপুরে যেন আরও বেশি শক্তিশালী। আর সেখানেই রোহিত শর্মাদের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। চলতি মাসের ২৭ তারিখ থেকে শুরু হবে সিরিজের ২য় টেস্ট।

চেন্নাই টেস্টের আগে বহুল চর্চিত বিষয় ছিল এম চিদাম্বারাম স্টেডিয়ামের পিচ। মুম্বাই থেকে আনা লালমাটির পিচ হবে না কি নিজস্ব কালো মাটির পিচেই খেলা হবে তা নিয়ে ছিল একাধিক প্রশ্ন। শেষপর্যন্ত খেলা হয়েছিল লালমাটির পিচে। পেসারদের জন্য কিছুটা সুবিধা করে দিতেই এই সিদ্ধান্ত। সেটার সুফলও পেয়েছে ভারত। বাংলাদেশকে প্রথম ইনিংসে ১৪৯ রানে আটকে রেখেছিল ভারত। সঙ্গে বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণকেও একেবারে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় লালমাটির সেই পিচে। পরের টেস্ট কানপুরে।

ভারতের উত্তরপ্রদেশের এক স্থানীয় গণমাধ্যমের ভাষ্য, কানপুরে বাংলাদেশ টেস্টের কথা মাথায় রেখে ৩টি উইকেট প্রস্তুত করা হচ্ছে। সম্ভাবনা আছে খেলা হবে ৫ নম্বর উইকেটে। ক্রিকইনফো জানিয়েছে, এই ম্যাচে পিচের ক্ষেত্রেও আসছে ভিন্নতা। চেন্নাইয়ের মতো লালমাটির পিচে খেলা হচ্ছে না এবার।

বাংলাদেশকে ভারত আটকাতে চায় নিজেদের চিরচেনা কালো মাটিতেই। যেখানে পেসারদের তুলনায় স্পিনাররাই ব্যাটারদের ওপর রাজত্ব করবেন। গ্রিন পার্কের এই পিচটিতে চেন্নাইয়ের লালমাটির বদলে কালো মাটি থাকবে। বাউন্স বেশি হবে না এবং বল বেশি ক্যারি করবে না। এটা প্রত্যাশিত যে গ্রিন পার্কের পিচ চেন্নাইয়ের পৃষ্ঠের তুলনায় কিছুটা ফ্ল্যাট হবে এবং টেস্টের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে বাউন্সও কমবে।

চেন্নাইয়ের লালমাটির পিচে নিয়মিত বাউন্স ছিল এবং সেজন্য উভয় দলই তিনজন ফাস্ট বোলার এবং দুজন স্পিনার নিয়ে মাঠে নেমেছিল। পিচে তেমন টার্ন না থাকলেও স্পিনারদের জন্য যথেষ্ট বাউন্স ছিল। রবীন্দ্র জাদেজা এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিন শুরুতে সুবিধা না পেলেও দ্বিতীয় ইনিংসে দুজন মিলে নিয়েছেন ৯ উইকেট।

কানপুরের পিচ মন্থর হওয়ার সম্ভাবনা বিবেচনা করে, উভয় দলই তাদের কৌশল এবং নির্বাচন পরিবর্তন করতে পারে। দুই দলেই একজন অতিরিক্ত স্পিনার তৃতীয় ফাস্ট বোলারের জায়গায় নিতে পারে। আগেই ধারণা করা হয়েছিল এই ম্যাচে কুলদীপ যাদব বা অক্ষর প্যাটেল ভারতীয় দলে জায়গা করে নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে বুমরাহর বিশ্রামে থাকার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।

স্পিনারদের মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে আটকানোর পূর্ববর্তী ছকেই ফিরতে চাইছে ভারত। ভারত ২০২১ সালে শেষবার কানপুরে টেস্ট আয়োজন করে। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেই টেস্টে ভারতীয় দল অশ্বিন, জাদেজা এবং অক্ষরের স্পিন ত্রয়ী নিয়ে মাঠে নেমেছিল। ২০১৬ সালে একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে টিম ইন্ডিয়া সহজ জয় পেলেও ২০২১ সালে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা ম্যাচ ড্র করেছিল।

সব মিলিয়ে ভারত এই মাঠে টেস্ট হারেনি ১৯৮৩ সালের পর থেকে। ৮৩ সালে ভারত সফরে এসে স্বাগতিকদের কানপুরে হারিয়েছিল সেসময়ের ক্রিকেট পরাশক্তি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০২১ সালের আগের তিন টেস্টেই আবার ভারত জয় পেয়েছিল এই মাঠে।

সেই হিসাবে বাংলাদেশের সামনেও সুযোগ থাকছে কানপুরে নতুন কিছু করে দেখানোর। কালো পিচের উইকেটে খেলেই মিরপুরে অস্ট্রেলিয়ার মতো প্রতিপক্ষকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। ভারত কঠিন প্রতিপক্ষ হলেও তাদের হারানোর মতো প্রত্যয় নিয়েই মাঠে নামবে নাজমুল হোসেন শান্তর সামনে। বিশেষ করে টাইগাররা নিজেরাই স্পিননির্ভর দল হওয়াতে পরিস্থিতি কিছুটা অনুকূলে থাকার আশা করা যেতেই পারে।

যদিও সেই স্বপ্ন পূরণ করা বাংলাদেশের জন্য অনেকটাই কষ্টের। চেন্নাই টেস্টই প্রমাণ করে দিয়েছে দুই দলের শক্তিমত্তার বিশাল পার্থক্য। ভারতের বিপক্ষে ফলোঅনেই পড়েছিল বাংলাদেশ। যদিও শেষপর্যন্ত ইনিংস হারের লজ্জাতে আর পড়তে হয়। বড় রানের টার্গেট দিয়েই টাইগারদের বিধ্বস্ত করেছিল রোহিত শর্মার দল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে