বাংলাদেশের বিপক্ষে সপ্তম উইকেট জুটিতে অশ্বিন-জাদেজার রেকর্ড
বাংলাদেশ-ভারত প্রথম টেস্ট
প্রকাশ | ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
ক্রীড়া ডেস্ক
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ভারত যখন দেড়শ' রানের আগেই ৬ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়েছিল, তাদের অলআউট হওয়াটা কেবল সময়ের ব্যাপারই মনে হচ্ছিল। স্পিনার হিসেবে স্বীকৃত হলেও ব্যাট হাতে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজা কতটা কার্যকর, এ কথা সবারই জানা। স্বাগতিকদের টপ অর্ডার ধসিয়ে দেওয়া গেলেও এই দুজনের রেকর্ড জুটিতে সাজঘরে ফেরাতে না পারায় বাংলাদেশি বোলাররা নাজেহাল হচ্ছেন।
বাংলাদেশি বোলারদের জন্য ক্রমেই দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজা। চেন্নাই টেস্টের প্রথম দিন শেষে ভারতের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৩৩৯ রান। ওয়ানডে মেজাজে খেলা অশ্বিন সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ১১২ বলে ১০ চার ও ২ ছক্কায় ১০০ ও জাদেজা ১১৭ বলে ১০ চার ও ২ ছক্কায় ৭৯ রানে অপরাজিত আছেন। সপ্তম উইকেটে তারা ১৯৫ রান যোগ করে অবিচ্ছিন্ন রয়েছেন। দেড়শ' রানের আগেই ৬ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া ভারতকে এই দুজন টেনে সুবিধাজনক অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছেন।
টেস্টে ভারতের সপ্তম উইকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে এটিই সবচেয়ে বড় রানের জুটির রেকর্ড। এমনকি চেন্নাইয়ের এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে সপ্তম উইকেটে এর আগে এত রানের জুটি দেখেনি।
টিম ইন্ডিয়ার ইতিহাসে সপ্তম উইকেটে জুটি গড়ে মোট পাঁচ শতাধিক রান করার দ্বিতীয় নজির স্থাপন করেছেন অশ্বিন ও জাদেজা। এর আগে কপিল দেব ও সৈয়দ কিরমানি সপ্তম উইকেটে ৬১৭ রান করেছিলেন।
টসে জিতে আগে ফিল্ডিংয়ে নামার সিদ্ধান্তের সার্থকতা প্রমাণে সক্ষম হয়েছিল বাংলাদেশ। পেসার হাসান মাহমুদের আগুন ঝরানো বোলিংয়ে টেস্টের প্রথম ঘণ্টায় ভারত রীতিমতো চাপে পড়ে যায়। মাত্র ৩৪ রানের মধ্যেই তারা টপ অর্ডারের ৩ ব্যাটারকে হারায়।
এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে দীর্ঘ ৪২ বছর পর টেস্টে কোনো দল টসে জেতার পর ফিল্ডিং বেছে নেওয়ার নজির গড়ে বাংলাদেশ। ১৯৮২ সালের ১৩ জানুয়ারি চেন্নাইতে (তৎকালীন মাদ্রাজ) স্বাগতিকদের সঙ্গে খেলতে নামা ইংল্যান্ড টসে জিতে ফিল্ডিংয়ে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। টেস্টটি শেষ পর্যন্ত ড্র হয়। এরপর ভেনু্যটিতে একটানা ২০ টেস্টে টস জয়ী অধিনায়ক বারবার আগে ব্যাটিং করাটাই সঠিক বিবেচনা করেছিলেন।
লাল মাটির পিচে হাসানের বোলিংয়ের সামনে কাঁপতে থাকে ভারত। তার লেন্থ বলে কোনাকুণি শট খেলতে চেয়েছিলেন ৬ রান করা রোহিত শর্মা। বল স্বাগতিক দলের অধিনায়কের ব্যাটের কানায় লেগে দ্বিতীয় স্স্নিপে দাঁড়িয়ে থাকা টাইগার অধিনায়ক শান্তর তালুবন্দি হয়। দলীয় ১৪ রানে স্বাগতিকরা প্রথম উইকেট হারায়।
রানের খাতা না খুলেই ক্রিজ ছাড়েন শুভমান গিল। তিনি লেগ স্টাম্পের বাইরের বল চালাতে গিয়ে ভুল করে বসেন। ব্যাটে বল লাগার পর তা লিটন দাসের গস্নাভসে জমা পড়ে। হাসানের প্রায় ১৩৪ কিলোমিটার গতির ফুল লেন্থ ডেলিভারিটি ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন ৬ রান করা বিরাট কোহলি। শর্ট নির্বাচনে ভুল করে বসলে বল তার ব্যাটে লাগার পর উইকেটরক্ষক লিটন দাসের গস্নাভসবন্দি হয়।
দলীয় ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া স্বাগতিকদের উদ্ধারের চেষ্টা করেন জয়সওয়াল-পান্ট জুটি। চতুর্থ উইকেটে তারা ৬২ রান যোগ করেন। ওয়ানডে মেজাজে খেলতে থাকা পান্ট ৫২ বলে ৬ চারে ৩৯ রানের ইনিংস খেলার পর আউট হন। হাসানের অফ স্টাম্পের বাইরের বল কাট শট খেলতে গিয়ে তিনি লিটনের গস্নাভসে ধরা পড়ে ফেরেন।
ক্রিজ ছাড়ার সময় নিজের উপর রাগান্বিত পান্টকে শূন্যে ব্যাট চালাতে দেখা যায়। ড্রেসিং রুমে বসে থাকা ভারতের কোচ গৌতম গম্ভীরকে এ সময় মাথা নিচু করে থাকতে দেখা যায়।
ভারতের ত্রাতা হয়ে ক্রিজে ছিলেন ফিফটি পাওয়া ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল। তিনি লোকেশ রাহুলকে নিয়ে লড়ে যাচ্ছিলেন। পঞ্চম উইকেটে রাহুলের সঙ্গে ৪৮ রানের জুটি গড়ার পর আউট হন। তিনি নাহিদ রানার ১৪৮ কিলোমিটার গতির ফুল লেন্থের চতুর্থ স্টাম্প বরাবর ডেলিভারিটি পেছনের পায়ে খেলতে গিয়েছিলেন। বল ব্যাটে লেগে সরাসরি সাদমানের হাতে চলে গেলে ব্যক্তিগত ৫৬ রানে থামে এই ওপেনারের ইনিংস।
এর কিছুক্ষণ পর মেহেদী হাসান মিরাজের দলে শর্ট লেগে থাকা জাকির হাসানের ক্যাচে পরিণত হয়ে ১৬ রানে মাঠ ছাড়েন লোকেশ রাহুল।
তাতেই বিপদে পড়েছে ভারত। সপ্তম উইকেটে জাদেজা-অশ্বিন জুটি আপাতত টাইগারদের চাপে
ফেলে দিয়েছেন।