দেশের ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম ভেনু্য বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম কমপেস্নক্স। ক্রিকেট, শুটিং, সাঁতার বাদে দেশের প্রায় সব খেলা এই কমপেস্নক্সে হয়। অথচ এই এলাকায় খেলার পরিবেশই নেই অসংখ্য দোকানের কারণে। সেই দোকান থেকেও এনএসসি খুব কম রাজস্ব পায়। বৃহস্পতিবার বিকালে আকস্মিকভাবে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম এলাকায় দোকান পরিদর্শন করেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, যা বিগত কোনো মন্ত্রী করেননি।
ঘণ্টাখানেক সময় যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরে দেখেছেন। দোকানদারের কাছ থেকে তথ্য নিয়েছেন। তিনি দোকান মালিক সমিতি বা এনএসসির কর্মকর্তাদের আগে থেকে অবহিত করেননি। উপদেষ্টা এসেছেন জানতে পেরে এনএসসির দুই তিনজন কর্মকর্তা উপস্থিত হন। প্রকৃত চিত্র পেতে তিনি এই পরিদর্শন করেন। আজ (বৃহস্পতিবার) প্রাথমিক কিছু ধারণাও পেয়েছেন। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম এলাকায় দোকান পরিদর্শন শেষে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, 'আমি একটু হালনাগাদটা দেখতে চাইলাম কী অবস্থা। বাস্তবে না এলে অনেক তথ্যের গ্যাপ হয়। আজ প্রাথমিক ধারণা পেলাম।' প্রাথমিক ধারণায় দোকান ভাড়া নিয়ে প্রশ্ন জেগেছে ক্রীড়া উপদেষ্টার মনে, 'সরকারি খাতায় আমরা এই দোকানগুলো থেকে ২৬ টাকা স্কয়ার ফিট ভাড়া পাই। দোকানদাররা ভাড়া দিচ্ছে ২১৭-২২০ টাকা। এত টাকা ভাড়া কাদের দিচ্ছে। আমি তাদের এগ্রিমেন্ট পাঠাতে বলছি।'
ক্রীড়াসংশ্লিষ্ট অনেকের ধারণা ভাড়া হাতবদলের ক্ষেত্রে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ-মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জড়িত থাকতে পারেন। এই বিষয়টিও খতিয়ে দেখবেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা, 'অতিরিক্ত ভাড়াটা কোথায় যায়, কাকে দিচ্ছে- এটা আমাদের বের করতে হবে। এগুলোর সঙ্গে আমাদের মন্ত্রণালয় বা এনএসসির কেউ জড়িত কি না সেটাও দেখব।'
বাংলাদেশ ছাড়া অন্য কোনো দেশে স্টেডিয়ামে দোকান দেখা যায় না। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম ছাড়াও আরও অনেক স্টেডিয়ামেই দোকান রয়েছে। সেই দোকানগুলোর অবস্থা ও ভাড়া নিয়েও পর্যালোচনা করবেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা, 'এখানে এক হাজারের ওপর দোকান আছে। অন্য স্টেডিয়ামেও আছে। আমরা একটা জেনারেল সার্ভে করব। এরপর একটা পলিসি করব। ভাড়াটা হচ্ছে ২২ টাকা স্কয়ার ফিট মান্ধাতা আমলের। এটা কোনো স্ট্যান্ডার্ডেই পড়ে না।'
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের দোকানগুলো ইজারা দেওয়া। সেই ইজারাদের কাছ থেকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ স্কয়ার ফিট ২৫-২৬ টাকা ভাড়া পায়। অথচ সেই ইজারাদার অন্যদের ভাড়া দিয়ে ২০০ টাকার বেশি নিচ্ছে বর্তমান সময়ে। এই তারতম্যের কারণটি খুজে বের করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের আয় বৃদ্ধি করতে চান যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা।
বাংলাদেশের অনেক ফেডারেশনের নিজস্ব আয় নেই। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সামান্য আয়েই চলতে হয়। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের আয়ের অন্যতম উৎস দোকান ভাড়া। দোকান ভাড়া থেকে বেশি অর্থ পেলে ফেডারেশনগুলোকে ক্রীড়া খাতে সহায়তা করার পরিকল্পনা রয়েছে ক্রীড়া উপদেষ্টার।