ভুটানের সামনেও এখন হাঁটু কাপে তপুদের!

প্রকাশ | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বাংলাদেশের সামনে একসময় মাথা তুলে দাঁড়াতে পারত না ভুটান। হেসে খেলেই তাদের উড়িয়ে দিতে পারত বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। একসময় পেছনে পড়ে থাকা সেই ভুটানই এখনর্ যাংকিংয়ে বাংলাদেশ থেকে দুই ধাপ এগিয়ে। এই ভুটানের কাছেই ২০১৬ সালে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে হেরে গিয়ে প্রায় দুই বছর আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে নির্বাসনে ছিল লাল সবুজরা। তবুও এই ভুটানের বিপক্ষেই সেপ্টেম্বরের ফিফা উইন্ডোতে দুই প্রীতি ম্যাচ আয়োজন করের্ যাংকিংয়ে উন্নতি করার লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের। প্রথম ম্যাচে ১-০ গোলে ভুটানকে কোনমতে হারাতে পারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে একই ব্যবধানে হেরে গেছে হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার শিষ্যরা। তাই র্ যাংকিংয়ে উন্নতি করে আসন্ন এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে যে সুবিধা আদায় করতে চেয়েছিল বাংলাদেশ সেটি হয়ত আর হচ্ছে না। টানা দুই জয়ের্ যাংকিংয়ে উন্নতির আশা ছিল বর্তমানে ১৮৪তম স্থানে থাকা বাংলাদেশের। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচের হারে আপাতত তা পূরণ হচ্ছে না। তা না হলেও ভুটানের বিরুদ্ধ কন্ডিশনে প্রস্তুতির সুযোগ পাওয়ার মধ্যেই যেন তৃপ্তি খুঁজে নিতে চাইলেন ক্যাবরেরা। তবে ফিফার এই উইন্ডোতে বাংলাদেশের দুই ম্যাচের নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, আসলে ততটা ভালো খেলতে পারেনি ক্যাবরেরার শিষ্যরা। যদিও প্রথম ম্যাচটা জিতেছে তারা। কিন্তু সেই জয়টা ছিল প্রতিপক্ষের ভুলের সুযোগ কাজে লাগিয়ে। দ্বিতীয় ম্যাচে দল হারল নিষ্প্রাণ খেলে শেষ দিকে মনোযোগ হারিয়ে। হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরাও অবশ্য এ বিষয়ে কিছুটা একমত, যতটা উদ্যোমী হওয়ার কথা ছিল, দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচে ততটা পারেনি তার দল। এরপরও বাংলাদেশ কোচের মনে হচ্ছে, এবারের ভুটান সফর তাদের জন্য ইতিবাচক, 'এখানকার ভালো কন্ডিশনে আমরা প্রস্তুতি নিতে পেরেছি। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতার মতো চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে খেলাও দলের জন্য ভালো। আমার কাছে সবসময় খেলার মধ্যে থাকা দলের জন্য ভালো এবং সব উইন্ডোতে আমাদের এই লক্ষ্য থাকে। এখন আমাদের খেলায় আরেকটু উন্নতি করতে হবে।' 'এই ম্যাচে (রোববার) আমরা ফাঁকা জায়গা কাজে লাগাতে পারিনি, এটা স্বাভাবিক। কখনো কখনো আমরা গোল করতে পারি, যদি গোল নাও পারি, তাহলে আমরা ভালোভাবে রক্ষণ সামলাই, যেটা দ্বিতীয়ার্ধে করতে সমর্থ হয়েছিলাম, কিন্তু যে গোলটি খেলাম, সেটা হয়ত আমরা আটকাতে পারতাম, কিন্তু পারিনি। ঠিক আছে, ফুটবলে এমন কিছু হতেই পারে। হার মেনে নিতে হয়।' যোগ করেন বাংলাদেশের কোচ। প্রথম ম্যাচে হেরে যাওয়া ভুটান ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া থাকবে, তা জানাই ছিল ক্যাবরেরার। কিন্তু তার দলের খেলায় ছিল না ভুটানকে আটকানোর দৃঢ় কোনো ছাপ। ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেওয়া গোলটিও কিংমে ওয়াংচুক যখন করেন, তখন বক্সে অরক্ষিত ছিলেন তিনি। ক্যাবরেরা মেনে নিলেন শেষ দিকে উদ?্যম হারিয়েছিল দল, 'শুরুতে আসলে আমরা ধারণা করেছিলাম এমন কিছু ঘটতে পারে। কেননা, ভুটানের জয় প্রয়োজন। তারা প্রথম ম্যাচ হেরেছিল এবং এ কারণে আরও শক্তভাবে তারা ফিরে আসে, নিজেদের কাজটাও করেছে। সেদিক থেকে সবকিছু আমরা ভালোভাবে সামলাতে পারিনি। দ্বিতীয়ার্ধে সম্ভবত আমরা তুলনামূলক ভালো ছিলাম। প্রথমার্ধে ওরা প্রথম ম্যাচের তুলনায় আমাদের চেয়ে নিখুঁত ছিল, কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধ আটসাঁট ছিল, শেষ দিকের ওই গোলটি ছাড়া, সেট পিসে তারা তুলনামূলকভাবে বেশি নিখুঁত ছিল। আমাদের সেট পিসও তারা ভালোভাবে সামলেছে।' 'আমি মনে করি, এটা (সফর) সবার জন্য ইতিবাচক। আমাদের মনে রাখতে হবে, তিন দিন আগেই আমরা একটা ম্যাচ খেলেছি এবং এই ম্যাচের তীব্রতাও ছিল বেশি এবং আবারও বলছি, পরিস্থিতি ছিল আরও বেশি উদ্যোমী হওয়ার, কিন্তু আমরা কিছুটা নড়বড়ে হয়ে গিয়েছিলাম। তারা সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে।'