ভুটানের বিপক্ষে দুটি ম্যাচই জিততে চায় বাংলাদেশ
প্রকাশ | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক
আগামী বছরে ব্যস্ত সূচি অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের জন্য। আছে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের তৃতীয় রাউন্ডের খেলা। দিনক্ষণ চূড়ান্ত না হলেও আছে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি শানিয়ে নিতে তাই বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা ভুটানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচগুলোকে মানছেন মঞ্চ হিসেবে। এই প্রস্তুতি পর্ব
তিনি রাঙাতে চান জয়ের রঙে।
থিম্পুর চ্যাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ
সময় বিকাল ৬টায় প্রথম প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও স্বাগতিক ভুটান।
আগামী রোববার দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচ গড়াবে একই স্টেডিয়ামে। ভুটানের বিপক্ষে প্রথম প্রীতি ম্যাচ সামনে রেখে বাংলাদেশ
কোচ প্রত্যয়ী কণ্ঠে বললেন, দুটি ম্যাচই জিততে থিম্পুতে
পা রেখেছে তার দল।
ভুটানের বিপক্ষে বাংলাদেশের সাফল্যের গল্পই বেশি। ১১ ম্যাচের পরিসংখ্যানে বাংলাদেশের জয় ৯টি, ড্র দুটি এবং হার একটি। কিন্তু ২০১৬ সালে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ওই হার চরম দুঃসময়ের মুখে ঠেলে দিয়েছিল বাংলাদেশকে; আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা থেকে দেড় বছর দূরে ছিল দল।
\হওই ম্যাচটিও হয়েছিল ভুটানের মাঠে।
এবারও খেলা ভুটানের মাঠে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে দেশটির উচ্চতা, চ্যাংলিমিথাং স্টেডিয়ামের টার্ফে খেলার সমস্যার পাশাপাশি প্রায় তিন মাস প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল থেকে দূরে থাকা, প্রস্তুতির কমতি নিয়েও কথা কম হচ্ছে না। কাবরেরাও বুঝতে পারছেন অপেক্ষা করছে কঠিন চ্যালেঞ্জ। তবে সব বাধা পেরুতে দারুণ আত্মবিশ্বাসীও বাংলাদেশ কোচ, 'আমরা জানি, আমাদের সামনে কিছু চ্যালেঞ্জ আছে। ভুটানের খেলোয়াড়দের মতো আমরা মৌসুমের মাঝামাঝি পর্যায়ে নেই, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতার সঙ্গে মানিয়ে নিতেও আমাদের সময় লেগেছে। তবে আগামী মার্চে যেটা আসছে, পরের বছরের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ রয়েছে, এগুলোর জন্য এই উইন্ডো আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। খুবই চ্যালেঞ্জিং ম্যাচ অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য।'
'অবশ?্যই এখানে আমরা দুটো ম্যাচ জয়ের জন্য এসেছি। তবে আমাদের আগামী বছরের প্রতিযোগিতাগুলোর জন্য সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বরের উইন্ডো গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, অফিসিয়াল টুর্নামেন্টগুলোই মূল, যেগুলো আগামী মার্চে শুরু হবে এবং এ কারণে ভুটানের বিপক্ষে এই ম্যাচগুলোসহ
বাকি দুই উইন্ডোকে প্রাধান্য দিচ্ছি। যেন আমরা ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারি।'
চূড়ান্ত দলে ঠাঁই পাওয়াদের মধ্যে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী দলের আছেন চারজন- মিরাজুল ইসলাম, শাকিল আহাদ তপু, চন্দন রায় ও রাব্বী হোসেন রাহুল। এদের মধ্যে মিরাজুল ও তপু এবারই প্রথম পেয়েছেন সুযোগ। ভুটান ম্যাচ এই তরুণদের জন্য মেলে ধরার মঞ্চ, মনে করেন কাবরেরা, 'আপনারা জানেন, কয়েক সপ্তাহ আগে অনূর্ধ্ব-২০ দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ওই স্কোয়াডের কয়েকজন খেলোয়াড় এই দলে যোগ দিয়েছে। যাদের মধ্যে দুজন আগেও আমাদের সঙ্গে ছিল, তারা জাতীয় দলের আবহটা জানে। নতুন দুজন যোগ হয়েছে। ফিফা উইন্ডোতে এ ধরনের প্রীতি ম্যাচ তাদের জন্য ইতিবাচক। আমি মনে করি, তাদের জন্য এটাই মেলে ধরার মঞ্চ।' ২০১৬ সালে বাংলাদেশের সেই 'ভুটান ট্রাজেডির নায়ক' চেনচো গাইয়েলতসেন এবারও আছেন প্রতিপক্ষের আক্রমণভাগে। তবে কেবল এই ফরোয়ার্ড নন, বাকিদের দিকেও সতর্ক দৃষ্টি রাখার প্রয়োজন বোধ করছেন জামাল ভূঁইয়া। বাংলাদেশ অধিনায়ক মনে করেন, ভুটানের আক্রমণভাগের বাকিদের নিয়েও ভাবতে হবে তাদের।
২০১৬ সালে এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে ভুটানের বিপক্ষে এ মাঠেই ৩-১ ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। জোড়া গোল করেছিলেন চেনচো। চট্টগ্রাম আবাহনীতে খেলার সুবাদে বাংলাদেশের ফুটবল সম্পর্কেও ভালো ধারণা আছে এই ২৮ বছর বয়সি ফরোয়ার্ডের। তবে জামাল শুধু চেনচোকে নিয়ে পড়ে থাকতে চান না। পাল্টা আক্রমণনির্ভর খেলা ভুটান দলকে নিয়েই সাবধানী তিনি, 'ভুটান বিশেষ করে পাল্টা আক্রমণে ভালো। তাদের দলে চেনচো আছে, যাকে আটকানো কঠিন। সে বাংলাদেশেও খেলেছে। তবে তাদের দলে চেনচো ছাড়াও আরও কয়েকজন খেলোয়াড় আছে, যারা দারুণ। এই খেলোয়াড়দের দিকেও দৃষ্টি রাখতে হবে। কেননা, তারাও বিপজ্জনক। তবে আশা করি, আমরা তাদের সামলাতে পারব।'
দেশে থাকতে, ভুটানে গিয়ে খেলোয়াড়, কোচের কণ্ঠে ঘুরেফিরে এসেছে দুই ম্যাচ জয়ের উত্তুঙ্গ আশাবাদ। জামালের লক্ষ্যও অভিন্ন। তবে লক্ষ্য পূরণের পথটা মসৃণ হবে না বলে মনে করেন এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। কেননা, লিগ চলায় ভুটানের ফুটবলাররা আছে খেলার মধ্যে, 'আমার ধারণা, দুটি ম্যাচই ভীষণ কঠিন হবে। কেননা, আমরা তিন মাস কোনো ম্যাচ খেলি না। আমরা ক্যাম্প করেছি, কিন্তু ভুটানের খেলোয়াড়দের মতো একই পর্যায়ে নেই। আমার ধারণা দুটি কঠিন এবং দারুণ ম্যাচ হবে।'
'আমি মনে করি, সবাই প্রস্তুত। অবশ্যই আমাদের আরও বেশি ম্যাচ ফিটনেস প্রেেয়াজন, কিন্তু আমরা ভালো ক্যাম্প করেছি, ভালো প্র্যাকটিস সেশন করেছি। আমি মনে করি, সব মিলিয়ে ভুটানের মুখোমুখি হতে আমরা প্রস্তুত।'