গণঅভুত্থানের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর গত ২১ আগস্ট সর্বশেষ বোর্ড সভায় নতুন সভাপতি হন ফারুক আহমেদ। সাবেক এই অধিনায়কের নেতৃত্বে চলা বিসিবি বৃহস্পতিবার পরিচালনা পর্ষদের আরেকটি জরুরি সভা আহ্বান করেছেন। বোর্ড পরিচালক ও আরেক সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান গণমাধ্যমে এই খবর জানিয়েছেন। চলমান বাস্তবতায় এই বোর্ড সভাটিও থাকবে নজরে। এখান থেকে আসতে পারে নীতিগত কিছু সিদ্ধান্ত।
বোর্ডের সর্বশেষ সভায় নতুন দুই পরিচালক ছাড়া উপস্থিত ছিলেন ৮ জন। দেশের ক্ষমতার পালাবদলের বাস্তবতায় বাকি পরিচালকরা অনুপস্থিত আছেন। আগামী সভাতেও এই দশজনই থাকবেন বলে জানা গেছে।
সভাপতির পদ ছাড়লেও আবাহনী থেকে কাউন্সিলর থাকা নাজমুল হাসান নিজেও এখনো পরিচালক পদে আছেন। পরিচালক হিসেবে এখনো আছেন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আরও ১৫ জন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, টানা তিনটি বোর্ড সভায় যদি কোনো পরিচালক অনুপস্থিত থাকেন তাহলে তার পদ শূন্য হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে বৃহস্পতিবারের সভার পরও তারা পরিচালক থেকে যাবেন। এরপরের সভাতেও তারা অনুপস্থিত থাকলে এই পদগুলো আনুষ্ঠানিক ভাবে শূন্য করা যাবে। জানা গেছে, যেহেতু বেশ কয়েকজন পরিচালক এই মুহূর্তে অনুপস্থিত আছেন। তাদের দায়িত্বে থাকা কমিটিগুলো বর্তমান পরিচালকদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হতে পারে।
ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করা জালাল ইউনুস সবার আগেই পদত্যাগ করেন। জাতীয় দল পরিচালনায় কাজ করা এই কমিটির প্রধান এখনো ঠিক করা হয়নি। বৃহস্পতিবারের সভাতে তা চূড়ান্তও হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এছাড়া সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হওয়ায় তার ব্যাপারে বোর্ডের করণীয় নিয়েও আলাপ হবে।
সভায় আলোচনার অন্যতম বড় ইসু্য হতে পারে প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের প্রসঙ্গ। আগামী ফেব্রম্নয়ারিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত তার মেয়াদ থাকলেও বর্তমান সভাপতি দায়িত্ব নিয়েই জানিয়ে দেন তিনি তাকে চাইছেন না। দায়িত্ব নেওয়ার আগেও হাথুরুসিংহেকে সরানোর ব্যাপারে নিজের জোরালো অবস্থান জানান তিনি। তবে বাংলাদেশ দল রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানকে হারিয়ে দেওয়ায় হাথুরুসিংহের বিষয়ে তৈরি হয়েছে কিছুটা ধোঁয়াশা। তাকে রাখা হবে নাকি অব্যাহতি দেওয়া হবে এই সিদ্ধান্ত আসতে পারে এই সভাতে।
সাকিব আল হাসানের মাঠের সাফল্য ছাপিয়ে যাচ্ছে মামলা-ইসু্য। দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা এই ইসু্যতে দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছেন। রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে নিয়মিতই সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে তাকে। তবে তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলার পেছনে রাজনৈতিক প্রতিহিংসাকে দায়ী করছেন অনেকে। এই দুঃসময়ে সাকিব পাশে পাচ্ছেন দীর্ঘদিনের সতীর্থদের। এরই মধ্যে জাতীয় দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হক, লিটন দাস, এনামুল হক বিজয়, সাবেক পেসার রুবেল হোসেনরা সাকিবের বিরুদ্ধে 'মিথ্যা মামলা'র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট জিতেছে বাংলাদেশ। এই ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে তিন উইকেট নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন সাকিব। তার পারফরম্যান্স নিয়েও কথা বলেছেন আকরাম।
মঙ্গলবার তিনি বলেন, 'আমাদের বোর্ড প্রেসিডেন্ট কিন্তু শেষবারের কথায় সেটা পরিষ্কার করে দিয়েছেন। কিন্তু আমার জানামতে এখনো কোনো আইনি নোটিশ পাইনি। এটা পেলে হয়তো সবাই বসে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।'
তিনি বলেন, 'সাকিবের পারফরম্যান্স নিয়ে তো বলার কিছু নেই। আপনি শুধু গত দুইটা কেন, গত দুই বছরের পারফরম্যান্সও যদি বলেন- কোয়ালিটি পেস্নয়ার ছাড়া একটা দেশে কিন্তু ১৪-১৫ বছর খেলা কিন্তু একটা বড় ব্যাপার। কোয়ালিটি পেস্নয়ার ছাড়া কেউ অ্যাচিভমেন্ট করতে পারে না। ওর তো পারফরম্যান্স সবসময় ভালো এবং যখনই খেলে বাংলাদেশ দলের জন্য তখনই আমরা অতিরিক্ত সুবিধা পাই।'