জাতীয় দলের অধিনায়ক জামালই পেলেন না দল!
প্রকাশ | ২৪ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক
ঘরোয়া ফুটবলে নজিরবিহীন ঘটনা। বিদেশি কোনো ফুটবলার ছাড়াই দল গড়েছে ঢাকা আবাহনী। বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে, ২০২৪-২৫ মৌসুমের খেলোয়াড়দের দলবদল। শেষদিনে খেলোয়াড় নিবন্ধন সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের সর্বাধিক ৬ বারের চ্যাম্পিয়নরা। গত লিগে আবাহনীতে খেলা জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াকে এবার রাখতে পারেনি ক্লাবটি। লিগে কোনো দলও পাননি জামাল!
দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দুর্বৃত্তরা ব্যাপক ভাঙচুর করেছে আবাহনী ক্লাব। লুট করে নিয়ে গেছে সব ট্রফি। ক্লাবের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান গ্রেপ্তার হয়েছেন। অনেক পরিচালক আছেন আত্মগোপনে। এমন অবস্থায় ক্লাবটির লিগে খেলাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। তবে বৃহস্পতিবার অনেক রাতে আবাহনী দলবদল সম্পন্ন করে। স্থানীয়দের নিয়ে দল গড়েছে ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবটি। সব বিদেশি খেলোয়াড়দের ছেড়ে দিয়েছে তারা। মোট ৩২ জন খেলোয়াড়ের নিবন্ধন করিয়েছে আবাহনী। এদের মধ্যে ২১ জনের নিবন্ধন তারা আগেই করিয়েছিল। শেষদিনে এসে মোহাম্মদ ইব্রাহিম, মিরাজ প্রধান, সুমন রেজা, আসাদুল মোলস্না, আমিনুর রহমান সজীবসহ ১১ জনের নিবন্ধন সেরেছে তারা। আর্জেন্টিনার ক্লাব সোল দ্য মায়ো ছেড়ে গত প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের দ্বিতীয় লেগে আবাহনীতে যোগ দিয়েছিলেন জামাল ভূঁইয়া। তবে এবার আর আবাহনী তাকে ধরে রাখতে পারেনি। এবার জামাল কোনো দলই পাননি। মধ্যবর্তী দলবদলে ক্লাব না পেলে জাতীয় দলের অধিনায়ককে এই মৌসুমে দর্শক হয়েই থাকতে হবে। দল বদলের শেষদিনে দিনভর গুঞ্জন ছিল জামাল ভূঁইয়ার নতুন ঠিকানা হতে যাচ্ছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন। তবে গভীর রাতে বাফুফে ব্রাদার্সের যে খেলোয়াড় তালিকা সরবরাহ করেছে সেখানে নাম নেই ডেনমার্ক প্রবাসী এই ফুটবলারের।
মূলত আর্থিক বিষয়ে সমঝোতা না হওয়াতেই জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াকে ধরে রাখতে পারেনি আবাহনী। আসছে মৌসুমে দল কেমন করবে তাই অনিশ্চয়তায় আবাহনীর ফুটবল ম্যানেজার কাজী নজরুল ইসলাম, 'স্থানীয় খেলোয়াড়দের নিয়ে আমরা দল গড়েছি, অন্যরা কেমন দল গড়েছে, সেটা দেখার সুযোগ এখনো আমি পাইনি। অন্য দলের পরিস্থিতি দেখলে আসলে বুঝতে পারব (আমাদের দলটা কেমন), এখনো ক্যাম্প শুরুর দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি। ফেডারেশন (বাফুফে) যখন সূচি দেবে, সে অনুযায়ী ক্যাম্প শুরু করব। আমরা স্থানীয় কোচ নিয়োগ দেব।'
'ক্লাবের যেহেতু আর্থিক সংকট যাচ্ছে, এ কারণে আমরা বিদেশি খেলোয়াড় নিতে পারিনি। তবে স্থানীয়দের নিয়ে ভালো দলই গড়েছি। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য গতবারও আমরা স্থানীয় পর্যায়ের ভালো ভালো খেলোয়াড় দলে টেনেছিলাম, সঙ্গে কিছু বিদেশিও নিয়েছিলাম। এবার যেহেতু বিদেশি নিতে পারিনি, স্থানীয় খেলোয়াড়দের নিয়ে আমরা আসলে কতদূর যেতে পারব, সেটা অন্য দলগুলোর অবস্থা না দেখে এ মুহূর্তে বলা কঠিন।' যোগ করেন নজরুল।
অন্যদিকে প্রিমিয়ার লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস দলে টেনেছে ডিআর কঙ্গো বংশোদ্ভূত ফরাসি উইঙ্গার জারেড খাসাকে। ২৬ বছর বয়সি খাসা ক্লাব ক্যারিয়ারে অনেকটা সময় কাটিয়েছেন সুইজারল্যান্ডের লিগে। সবশেষ তিনি খেলেছেন ইউক্রেইনের দল কারপাতি লভিভে। তাছাড়া তারা দলে টেনেছে শেখ জামালের তরুণ ফরোয়ার্ড ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। কিংস ছেড়ে যাওয়াদের মধ্যে উলেস্নখযোগ্য নাম তৌহিদুল আলম সবুজ, বিপলু আহমেদ, মতিন মিয়া ও ইয়াসিন আরাফাত।
সুলেমানে দিয়াবাতে, মুজাফ্ফর মুজাফ্ফরভ, ইমানুয়েল সানডে, ইমানুয়েল টনিদের ধরে রেখেছে গত মৌসুমে লিগে রানার্সআপ হওয়া মোহামেডান। চলে যাওয়া শাহরিয়ার ইমন, হাসান মুরাদদের জায়গায় তারা নিয়েছে রিয়াদুল ইসলাম রাফি, রহিম উদ্দিনদের। শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব দলবদলে অংশ নেয়নি। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে দলগুলোর ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত।