সাম্প্রতিক সময় দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য মেয়েদের টি২০ বিশ্বকাপ বাংলাদেশ থেকে সরে যাওয়ার গুঞ্জন ছিল চড়া। শেষ পর্যন্ত সেই গুঞ্জনই সত্যি হয়েছে। নারীদের টি২০ বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে না বাংলাদেশে। মঙ্গলবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। বৈশ্বিক টুর্নামেন্টটি আয়োজন করবে সংযুক্ত আরব আমিরাত। আগামী ৩ থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত হবে এ বছরের নারী টি২০ বিশ্বকাপ। আসরটির জন্য আমিরাতকে নতুন আয়োজক হিসেবে মঙ্গলবার ঘোষণা করেছে আইসিসি। বাংলাদেশে না হলে স্বাগতিক হওয়ার লড়াইয়ে আমিরাতের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল জিম্বাবুয়ে। দুই দেশই আসরটি আয়োজনের আগ্রহের কথা জানিয়েছিল আইসিসিকে। সম্ভাবনায় কিছুটা এগিয়ে ছিল আমিরাতই। এদিন আইসিসির এক ভার্চুয়াল বোর্ড মিটিংয়ে বাংলাদেশ থেকে নারীদের টি২০ বিশ্বকাপ সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। নতুন ভেনু্য হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে বাছাই করেছে সংস্থাটি। তবে গত কিছু দিন দেশের পরিস্থিতি অনেকটাই ঠিক হয়ে আশায় বাংলাদেশেই নারীদের টি২০ বিশ্বকাপ আয়োজন করার আশা প্রকাশ করেছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে সরিয়েই নেওয়া হলো এই আসর। এবারের বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি আমিরাত। বৈশ্বিক আসরের ম্যাচগুলো হবে দুবাই ও শারজাহর ভেনু্যতে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে আসে রাজনৈতিক পরিবর্তন। হাসিনা সরকার পতনের পর দায়িত্ব নেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। অস্ট্রেলিয়া, ভারত, নিউজিল্যান্ড ও যুক্তরাজ্য (ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ড) তাদের নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণ না করার জন্য সতর্কতাও জারি করেছে। বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি দেখে বিকল্প খোঁজা শুরু করে দেয় আইসিসি আগেই। শুরুতে তারা প্রস্তাব দেয় ভারতকে। তবে ভারতীয় বোর্ডের সচিব জয় শাহ ওই সময়ের সম্ভাব্য বৃষ্টির মৌসুমের কথা ভেবে এবং আগামী বছর নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ ভারতে হওয়ার কারণ দেখিয়ে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন। বৃষ্টির কারণে শেষ পর্যন্ত স্বাগতিক হওয়ার লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়ে শ্রীলংকাও। নতুন আয়োজক হিসেবে দায়িত্ব নিতে এগিয়ে আসায় আমিরাত ক্রিকেট বোর্ডকে ধন্যবাদ জানান আইসিসির প্রধান নির্বাহী জিওফ অ্যালারডাইস, 'বিসিবির পক্ষ থেকে আয়োজক হতে এগিয়ে আসার জন্য আমিরাত ক্রিকেট বোর্ডকে ধন্যবাদ জানাই। সঙ্গে শ্রীলংকা ও জিম্বাবুয়েকে তাদের উদার প্রস্তাবের জন্যও জানাই ধন্যবাদ। আমরা ২০২৬ সালে এই দুটি দেশে আইসিসির বৈশ্বিক ইভেন্টগুলো দেখার অপেক্ষায় আছি।' বাংলাদেশে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণেই যে দেশটি থেকে বিশ্বকাপ সরিয়ে নেওয়া হলো, সেটিও তুলে ধরেন অ্যালারডাইস। তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে নারী টি২০ বিশ্বকাপ আয়োজন করতে না পারাটা হতাশার। কারণ, আমরা জানি, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) একটি স্মরণীয় আসর আয়োজন করত। আমি বিসিবির (আয়োজক) দলকে ধন্যবাদ জানাতে চাই যে, তারা বাংলাদেশে আসরটি আয়োজনের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। কিন্তু অংশগ্রহণকারী বেশ কয়েকটি দেশের সরকারের পক্ষ থেকে সেখানে ভ্রমণ সতর্কতা জারি করার কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের হাতেই আয়োজকের স্বত্ব থাকবে। আমরা নিকট ভবিষ্যতে আইসিসির বৈশ্বিক আসর বাংলাদেশে আয়োজনের অপেক্ষায় আছি।'