যোগ্যদের নিয়ে অ্যাডহক কমিটির দাবি হকির সাবেকদের
প্রকাশ | ২১ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
ক্রীড়া প্রতিবেদক
ছাত্র-জনতার গণঅভু্যত্থানের মুখে বিগত স্বৈরাচার সরকার পতনের পর দেশের সর্বত্র উঠেছে সংস্কারের ডাক। সেই হাওয়া লেগেছে ক্রীড়াঙ্গনে। দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, তহবিল তসরুপ, জোরপূর্বক চেয়ার দখল করে এতদিন যারা দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে কলঙ্কিত করেছে, এবার তাদের সরাতে একাট্টা দেশের পরীক্ষিত- যোগ্য সংগঠক, সাবেক তারকা খেলোয়াড়রা। সঙ্গে আছেন দলের বর্তমান সদস্যরাও। ফুটবল, ভলিবল, ক্রিকেটের পর এবার হকিতে উঠেছে পরিবর্তনের ডাক। 'সন্ত্রাসী-আওয়ামী দালাল হটাও হকি বাঁচাও'- এই ব্যানারে মঙ্গলবার মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়াম প্রাঙ্গণে ৭ দফা দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেন হকির এক সময়কার মাঠ কাঁপানো সব তারকা, ছিলেন বর্তমান খেলোয়াড়, যোগ্য-পরীক্ষিত সংগঠকরা।
আলোচিত ক্যাসিনোকান্ডের নায়ক বর্তমান অবৈধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুমিনুল হক সাঈদসহ পুরো কমিটির পদত্যাগ দাবি করে অতিদ্রম্নত যোগ্যদের নিয়ে অ্যাডহক কমিটির দাবি জানিয়েছেন তারা। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছে পরে স্মারকলিপি পেশ করেন।
আগামী তিনদিনের মধ্যে বর্তমান কমিটি ভেঙে বিভিন্ন সময় যারা বঞ্চিত ছিলেন তাদেরসহ, যোগ্য, সৎ ব্যক্তিদের নিয়ে অ্যাডহক কমিটি গঠনের অনুরোধ জানিয়েছেন মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া সাবেক তারকারা।
বাংলাদেশের হকি মূলত পরিচালিত হয় সাধারণ সম্পাদক দ্বারা। গত বছর একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে জোরপূর্বক ক্ষমতা দখল করা সাধারণ সম্পাদক সাঈদ এখন পলাতক। কমিটির সুবিধাবাদী সহ-সভাপতি রশিদ শিকদার এবং যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল এহছান রানারও কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এমতাবস্থায় দেশের হকি কিছুতেই চলতে পারে না। তাই প্রাণের খেলাকে বাঁচাতে এগিয়ে এসেছেন সাজেদ এ এ আদেল, রফিফুল ইসলাম কামাল, কামরুল ইসলাম কিসমত, মাহবুবুল হক মিতু, মামুন-উর-রশিদ, শহিদুলস্নাহ দোলন, মনোয়ার হোসেন, খাজা ইরতেজা কাদের গুড্ডু, জহিরুল ইসলাম মিতুল, তারেক এ আদেলসহ দেশের সব নামকরা হকি খেলোয়াড়রা।
মানববন্ধনে সাজেদ এ এ আদেল বলেন, 'এখানে যারা এসেছেন সবাই হকি খেলোয়াড়। আমাদের প্রাণপ্রিয় খেলা হকি এটা এতদিন ভালোভাবে চলেনি। আমরা ভালোভাবে চালাতে চাই। বর্তমান কমিটির পদত্যাগের পাশাপাশি অ্যাডহক কমিটি চাই।'
২০২৩ সালে সবশেষ হকি ফেডারেশনে নির্বাচনে সাঈদের নির্মম নির্যাতনের শিকার হন সাজেদ এ এ আদেল। ওই সময়কার ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে জাতীয় দলের সাবেক এ খেলোয়াড় জানান, 'নির্বাচনে দুটা ক্লাব কাউন্সিলরশিপ ছিনতাই করা হয়েছিল। আমাকে নমিনেশন পেপার কিনতে দেওয়া হয়নি, জমা তো দূরের কথা। মুমিনুল হক সাঈদ সাহেব আমাকে ডাইরেক্ট বলেছেন টাকা-পয়সাতে আপনি আমার ওপর থাকতে পারেন, পেশি শক্তিতে নয়। ন্যায়বিচার চেয়ে আমি আদালতে গিয়েছিলাম। ২০২৩ সালের ২১ জুন আদালত এই কমিটিতে অবৈধ ঘোষণা করেছে।'
হকির এক সময়কার মাঠ কাঁপানো খেলোয়াড় রফিকুল ইসলাম কামাল এবং আরেক কিংবদন্তি মামুন-উর-রশিদও হকিতে দ্রম্নত অ্যাডহক কমিটির দাবি জানিয়েছেন। যোগ্য, বঞ্চিতদের মূল্যায়নের কথা বলেছেন। কামাল বলেন, 'ছাত্র জনতার গণ-আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন আমি তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। বর্তমানে যে প্রেক্ষাপট বাংলাদেশের হকিতে এটা পরিবর্তনের দরকার আছে এবং সেই পরিবর্তনের দাবিতে এখানে এসে দাঁড়িয়েছি। আমরা বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত করে সবাইকে নিয়ে একটা নতুন কমিটি তৈরি করে দেওয়ার জন্য ক্রীড়া উপদেষ্টার কাছে অনুরোধ করব।'