ক্ষমতার পালাবদলে গত কিছুদিন ধরে চলা অস্থিরতায় সেপ্টেম্বরের ফিফা উইন্ডোতে জাতীয় দলের ম্যাচ আয়োজন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ভুটানের সফরে আসার কথা থাকলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তারা জানায়নি এখনো। তবে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার জানালেন, প্রয়োজনে ভুটানে গিয়ে খেলবেন তারা।
শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ভাঙচুর হয়েছে আবাহনী ও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছেলে শেখ কামাল আবাহনী ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা। আর দেশের লিগে শীর্ষ পর্যায়ে খেলা দুই ক্লাব শেখ রাসেল ও শেখ জামালের নামকরণ মুজিবুর রহমানের দুই ছেলের নামে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে দলগুলো তাই রয়েছে নানামুখী অনিশ্চয়তায়।
নাম সংক্রান্ত এই 'জটিলতা', সাম্প্রতিক সময়ে তিন ক্লাবের লিগের দলবদলে নিষ্ক্রিয় থাকা, ফুটবলারদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হওয়া শঙ্কা- এসব নিয়ে রোববার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার দ্বারস্থ হয়েছিল বাফুফে। উপদেষ্টাও আশ্বস্ত করেছেন বলে জানিয়েছেন বাফুফে
সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, 'ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে খেলোয়াড়দের নিয়ে আমরা একটা মিটিং করার অ্যাপয়েনমেন্ট চেয়েছিলাম, তাদের সিদ্ধান্তটা যখন পাইনি, তখন ক্রীড়া সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। তিনি আমাকে উপদেষ্টার রুমে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানেই কথা হয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং খেলোয়াড়দের মুখে আনঅফিসিয়ালি আমরা শুনেছি তিনটা ক্লাব (শেখ জামাল, শেখ রাসেল ও চট্টগ্রাম আবাহনী) এবারের লিগে অংশ নেবে না। শেখ রাসেল অফিসিয়ালি
\হআমাদের জানিয়েছে লিগে
অংশ না নেওয়ার কথা।'
বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আরও যোগ করেন, 'এই প্রেক্ষাপটে খেলোয়াড়রা বাফুফে সভাপতির সঙ্গে বসেছিলেন, শেখ রাসেল, শেখ জামাল ও চট্টগ্রাম আবাহনীর ক্লাব কর্তৃপক্ষকে সভাপতি অনুরোধ করেছেন লিগে অংশ নেওয়ার জন্য- এই বিষয়গুলো আমি ক্রীড়া উপদেষ্টা মহোদয়কে জানালাম। তিনি বলেছেন, যেহেতু স্পন্সরশিপের ব্যাপারটি ক্লাবগুলোর দায়িত্ব, এটা ক্লাবগুলোরই করা উচিত। নাম নিয়েৃ শেখ জামাল, শেখ রাসেল- এ নিয়ে তাদের কোনো সমস্যা নেই। ক্লাবগুলোর নিরাপত্তার জন্য যেটা প্রয়োজনীয় সেটা
তারা করবে। ক্লাবগুলো যেন স্পন্সরশিপ নিজেরাই জোগাড় করে নেয়।'
ক্লাবগুলোর নাম পরিবর্তন ইসু্যর উদয় 'আনঅফিসিয়ালি' হয়েছে বলেও জানালেন ইমরান, 'এটা কনসার্ন-স্পন্সর বা ক্লাবের কর্মকর্তা, তাদের নাম নিয়ে আনঅফিসিয়ালি একটা কনসার্ন ছিল। যে কারণে ভাঙচুর হয়েছে। ওই প্রেক্ষিতে নামটা আসে। অনেকে আনঅফিসিয়ালি বলেছে, নাম পরিবর্তন করা যায় কিনা, কিন্তু এটাও একটা প্রক্রিয়ার ব্যাপার। ক্লাবের নিজস্ব বোর্ডের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নাম পরিবর্তন করতে হয়। নাম পরিবর্তন করতে যে সহযোগিতা লাগে, সেটা আমরা করব। তবে এ ব্যাপারে উপদেষ্টার বক্তব্য- নাম নিয়ে তাদের কোনো কনসার্ন নেই। এই নামেও তারা খেলতে পারবে।'
ফিফা উইন্ডোতে ২ ও ১০ সেপ্টেম্বরে ভুটানের বিপক্ষে হোম-অ্যাওয়ে ভিত্তিতে ম্যাচ খেলার কথা ছিল বাংলাদেশের। এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের তৃতীয় রাউন্ডের ড্রয়ের আগে নিজেদেরর্ যাঙ্কিংয়ে উন্নতির (১৮৪তম) লক্ষ্যেই ভুটানের সঙ্গে খেলার কথা জানালেন ইমরান, 'চলমান পরিস্থিতিতে ভুটান আসতে অপারগতা জানালে তাদের দেশে গিয়েই খেলবে বাংলাদেশ। বর্তমান পরিস্থিতিতে একটা দলের (ভুটান) সঙ্গে নিজেদের মাঠে খেলার ব্যাপারে আশাবাদী ছিলাম, কিন্তু ওই দলটারও তো কনসার্ন আছে। তারা সোমবার আমাদের জানাতে চেয়েছে। যদি তারা আসতে না চায়, তাহলে আমরা ভুটানে গিয়ে খেলব।'
বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, 'আমাদের যে বর্তমানর্ যাঙ্কিং, সেখানে আমরা এএফসি এশিয়ান কাপের ড্রয়ে চার নম্বর পটে আছি। সেখানে কঠিন প্রতিপক্ষ পড়বে। এখানে আমরা যদি ভুটানকে হারাতে পারি, তাহলে এই ফলের ভিত্তিতে ডিসেম্বরে যের্ যাঙ্কিং হবে, সেখানে আমরা তিন নম্বর পটে উঠে আসতে পারি। অনেকেই বলেছেন, আমরা কেন কঠিন প্রতিপক্ষের সঙ্গে খেলছি না, এটাই আসল মূল উদ্দেশ্য যে ভুটানের বিপক্ষে খেলের্ যাঙ্কিংয়ে উন্নতি করে এএফসি কাপে ভালো করা। কোচ আছেন, তার সঙ্গে ক্যাম্প করার ব্যাপারে কথা বলছি। এখন ভুটানের
\হকাছ থেকে নিশ্চয়তা পাওয়ার পর ক্যাম্পের
বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।