রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে। ঘরোয়া ফুটবলের চলতি মৌসুমে দলবদল শেষ হচ্ছে ১৯ আগস্ট। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি মাথায় রেখে দলবদলের সময় বর্ধিত করতে ফিফার কাছে আবেদন করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। ফিফা থেকে সবুজ সংকেত না পাওয়ায় বেকায়দায় পড়তে পারে প্রিমিয়ার লিগে অংশ নেওয়া দলগুলো। প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলো লিগে অংশগ্রহণ অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছে। স্পন্সরের অভাবে আসন্ন মৌসুমে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র অংশগ্রহণ করবে না ফুটবলাঙ্গনের জোর গুঞ্জন। বেশ কয়েকটি সূত্র থেকে এই দুই ক্লাবের অংশগ্রহণ না করার বিষয়ে অনেকটাই নিশ্চিতও হওয়া গেছে।
এই দুই ক্লাবেরই প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিল বসুন্ধরা গ্রম্নপ। সরকার পরিবর্তনের পর এই গ্রম্নপটিও এখন শেখ জামাল ও শেখ রাসেলকে পৃষ্ঠপোষকতা করবে না বলে জানিয়ে দেয়। ফলে দেশের অন্যতম দুটি শক্তিশালী ক্লাবের ফুটবলাররা পড়ে গেছেন মহাসংকটে। খেলোয়াড়দের নতুন ক্লাব খুঁজে নেওয়ার নির্দেশ দিলেও এই কয়েক দিনে ঠিকানা বদল করাটাও কঠিন তাদের জন্য। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব লিমিটেডের কোনো কর্মকর্তা এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মন্তব্য করেননি। তবে এবার ফুটবল মৌসুমে শেখ জামাল অংশগ্রহণ করবে না এ রকম সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন।
শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব অনেক ফুটবলারকে চূড়ান্ত করেছিল। এরপরও অংশগ্রহণ না করা খানিকটা বিস্ময়ের। আশির দশক থেকেই ফুটবলে অংশ নেয় ধানমন্ডি ক্লাব।
নিচের স্তরে থাকলেও বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন শেখ জামালকে সরাসরি প্রিমিয়ারে খেলার সুযোগ দেন। ক্লাবটি ফুটবল লিগে একাধিকবার চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ হয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, ক্লাবের নাম আবার পরিবর্তনের আলোচনা চলছে। সেক্ষেত্রে জয়েন্ট স্টক এক্সচেঞ্জে আবেদন করতে হবে, এরপর বাফুফের অনুমতি নানা প্রক্রিয়া ও আনুষ্ঠানিকতা রয়েছে, যা ১৯ আগস্টের মধ্যে সম্ভব নয়। বাফুফে ফিফায় চিঠি দিয়েছিল দলবদলের সময় বাড়াতে। ফিফা সেই মেয়াদ না বাড়ানোয় আরও সংকট বেড়েছে। শেখ জামালের মতো শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রও ফুটবল থেকে সরতে পারে বলে জোর গুঞ্জন রয়েছে। যদিও বাফুফে এখনো কোনো চিঠি পায়নি।
১৯৬২ সালে গঠিত ধানমন্ডির ক্লাবটি ২০১০ সালে রূপ নেয় শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব নামে। আর ১৯৯৫ সালে গঠিত হয়েছে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ক্লাবটি। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর শেখ জামাল ক্লাবটিতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় দুর্বৃত্তরা। ক্লাবটি ফুটবল লিগে একাধিকবার চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ হয়েছে।