হকি ফেডারেশনে বিরাজ করছে নিস্তব্ধতা। রাজনৈতিক পালাবদলে লাপাত্তা বেশির ভাগ কর্মকর্তারা। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মনিনুল হক সাঈদেরও দেখা মিলছে না। সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় মহাসংকটে দেশের হকি। এমতাবস্থায়, খেলাটির সুদিন ফিরিয়ে আনার তাগিদ দেন ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুল হক প্রিন্স।
রীতি অনুযায়ী বিমানবাহিনীর প্রধান বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার মার্শাল হাসান মাহমুদ খান বর্তমানে ফেডারেশনের সভাপতি হিসেবে রয়েছেন।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ফেডারেশনের কার্যক্রমে একজন প্রতিনিধির মাধ্যমে পরিচালনা করছেন ফেডারেশন সভাপতি নিজে। সেই প্রতিনিধির সঙ্গে কাজ করছেন আরিফুল হক প্রিন্স। পুরোনো কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি গড়ার জোর দাবি জানিয়েছেন তিনি।
গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রিন্স বলেন, 'হকি ফেডারেশনের কিছু পুনর্গঠন করতে হবে। কমিটি ভেঙে দিয়ে আবার এডহক কমিটি দিতে হবে। আমরা সভাপতি স্যারকে জানিয়েছি। উনি খুব শিগগিরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলবেন। আমরা চাচ্ছি আগামী সপ্তাহের মধ্যে হকিতে সমাধান নিয়ে আসার জন্য। তা না হলে আমাদের বাংলাদেশের হকি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।'
নভেম্বরে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের চূড়ান্ত পর্ব। পুরুষ ও নারী দুই দলই আসরটিতে খেলতে পারবে। টুর্নামেন্টে ৫-৬ নম্বর স্থানে থাকতে পারলে প্রথমবারের মতো জুনিয়র বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ মিলবে। এত বড় সুযোগ তাই হাতছাড়া করতে চাইছে না ফেডারেশন। দ্রম্নত ক্যাম্প শুরুর চেষ্টা চলছে।
প্রিন্সের ভাষ্য, 'আমাদের বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করার সম্ভাবনা আছে। সামনে ভালো একটা সুযোগ। আমাদের ক্যাম্প করতে হবে, কোচিং প্যানেল প্রস্তুত করতে হবে। সবকিছু নিয়ে আমরা সভাপতির প্রতিনিধির সঙ্গে বসেছিলাম।'
এদিকে, বাতিল হয়েছে চলতি মাসে হকি খেলোয়াড়দের জার্মানি সফর। নিজেদের উন্নতির লক্ষ্যে খেলোয়াড়রা এই সফরের দিকেই তাকিয়ে ছিলেন। প্রশ্ন উঠেছে সফরের অফিসিয়ালদের তালিকায় থাকা চার কর্তাকে নিয়েও। কারণ এই দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বিতর্কিত যুবলীগ নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে।
হকি ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ প্রসঙ্গে বলেন, 'ফেডারেশন সভাপতি এ বিষয়ে অবগত। তাদের ভিসা স্থগিতের বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছেন। জার্মানি সফরে শুধু চারজন না, আমরা জানতে পেরেছি আরো বহিরাগত চারজন ছিল। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে সফর পুরোপুরি স্থগিতের সিদ্ধান্ত এসেছে।'
সাক্ষাৎকারে আরিফুল হক প্রিন্স নানা হতাশার কথাও বলেন। গত প্রিমিয়ার লিগে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে অন্যায়ভাবে তাকে চার বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়। এছাড়া বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে নানা আর্থিক অনিয়মের অভিযোগও তিনি তুলেছেন।