বিসিবির ব্যাপারে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারব না :আসিফ

পাপন আত্মগোপনে, 'অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট' নিয়োগের আইনি প্রক্রিয়া চলবে

প্রকাশ | ১২ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া
ক্ষমতার পালাবদলের পর দেশজুড়ে চলছে অস্থিরতা। সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও চলছে ব্যাপক রদবদল। বদল আসছে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে। আগের সরকারের আমলে যারা নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন তাদেরকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, প্রধান বিচারপতি পর্যন্ত পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। এমন পরিস্থিতির আঁচ ক্রীড়াঙ্গনেও লাগার আভাস দেখা যাচ্ছে। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড স্বায়ত্তশাসিত হওয়ায় নতুন সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা প্রথম দিন কার্যালয়ে গিয়ে বিসিবির বিষয়ে প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি জানান বিসিবিকে তারা কেবল পরামর্শ দিতে পারেন, 'বিসিবির বিষয়ে, যেহেতু বিসিবি একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, সিদ্ধান্তটা আমরা দিতে পারব না। বিসিবি থেকে পরামর্শ নিতে পারব, তাদেরকে পরামর্শ দিতে পারব।' আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশে দেখা যায়নি বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে। অসমর্থিত সূত্রের খবর তিনি দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। এই মুহূর্তে বেশিরভাগ পরিচালককেও দেখা যাচ্ছে না। কয়েকজন কর্মকর্তা চালিয়ে নিচ্ছেন কাজ, 'বিসিবি'র সভাপতি অনুপস্থিত আছেন। অবশ্যই একটা ফেডারেশনকে কাজ করতে হলে তার সবগুলো অর্গানকে কাজ করতে হয়। সভাপতির মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে যিনি আছেন, তিনি অনুপস্থিত আছেন। কিন্তু বিসিবি আইসিসির অধীনে একটি ফেডারেশন। এই বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারব না, আমরা পরামর্শ করেছি, যারা বিসিবির পরিচালক আছেন তারা আইসিসির লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে থেকে কীভাবে বিষয়টি সমাধান করা যায় সেটি দেখবেন।' আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচিত বোর্ডকে সরকারি হস্তক্ষেপে সরানো যায় না। তেমন চেষ্টা হলে নিষিদ্ধ হতে পারে বাংলাদেশের ক্রিকেট। বর্তমান বোর্ড নিজে থেকে সরে গেলে নতুন সরকার অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড গঠন করতে পারবে। আসিফের কথায় ইঙ্গিত তারা অন্তর্বর্তী বোর্ড গঠনের ব্যাপারে আগ্রহী, 'অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য কাউকে নিয়োগ করা যায় কিনা, সেই বিষয়ে তারা আমাদের পরবর্তীতে রিপোর্ট করবেন। এই বিষয়ে আমরা প্রক্রিয়াটি চালু রাখব। এই তিনটি প্রক্রিয়া নিয়ে আমরা আজ কথা বলেছি। আজ সময় দিতে পারছি না, আপনারা জানেন প্রধান বিচারপতির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান আছে। পরে আমরা বিস্তারিত কথা বলব, সিদ্ধান্ত নিতে পারব। আজকে মূলত নারী টি২০ বিশ্বকাপ নিয়ে আমরা কথা বলেছি।' অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ গ্রহণের পর রোববার থেকে সচিবালয়ে অফিস শুরু করেছেন উপদেষ্টারা। প্রথম দিনে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। শেখ হাসিনা জাতীয় যুব ইনস্টিটিউটের নাম পরিবর্তন, আসন্ন টি২০ বিশ্বকাপের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং ক্রীড়াঙ্গনের অবকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন এই উপদেষ্টা। রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আসিফ মাহমুদ বলেন, 'প্রথম দিনে আমরা তিনটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যার প্রথমটি হলো- যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউট আছে, এটার নাম পরিবর্তন করতে চাই। যেহেতু বাংলাদেশে সহিংসতার সঙ্গে শেখ হাসিনার নাম জড়িত আছে। অনেক শিক্ষার্থী ও জনতা মারা গিয়েছে। আমরা মনে করি, তিনি এর পেছনে জড়িত। সেই জায়গা থেকে শুধু আমাদের নয়, প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে এটা করা হবে। তাই শেখ হাসিনা জাতীয় যুব ইনস্টিটিউটের নাম পরিবর্তন করে আমরা এটি বাংলাদেশ জাতীয় যুব ইনস্টিটিউট করছি। ত্রম্নতই এটা সম্পন্ন করা হবে।' এদিকে দেশজুড়ে অস্থিরতার কারণে টি২০ বিশ্বকাপ মাঠে গড়ানো নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, 'এরই মধ্যে আমরা বিসিবির সঙ্গে কথা বলেছি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এই বিষয়ে আমাদের কিছু কাজ করতে হবে।' 'আমি আজকেই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলব। তিনি যেহেতু একজন ক্রীড়াপ্রেমী মানুষ। তিনি অবশ্যই আমাদের সহায়তা করবেন। আমরা এই বিষয়ে সবার সঙ্গেই কথা বলব। কিছু দেশের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আছে, সেগুলো যাতে দ্রম্নত সমাধান করা যায়।' এ ছাড়াও অবকাঠামোগত উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, 'আমাদের যে কাজগুলো চলমান আছে, সেগুলো যাতে দ্রম্নত শেষ করা যায় সেই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আর বিসিবির সভাপতি অনুপস্থিত আছেন। অবশ্যই একটা সংস্থাকে কাজ করতে হলে সবার উপস্থিতি প্রয়োজন। সভাপতির মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে যেহেতু তিনি অনুপস্থিত আছেন, তাই আমরা বিসিবির যারা পরিচালক আছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলেছি।'