ছাত্র-জনতার গণঅভু্যত্থানের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে পালানোর পর আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি ও নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা করে দুর্বৃত্তরা। আক্রান্ত হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও নড়াইল-২ আসনের এমপি মাশরাফি বিন মর্তুজার বাড়িও। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে বাড়ি পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে ক্রিকেটার লিটন দাসের।
ভারতীয় কিছু সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে লিটনের নামে মাশরাফির বাড়ি পোড়ার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। এতে অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টির তীব্র নিন্দা জানান। বাংলাদেশের মানুষ সম্পর্কে বিরুপ মন্তব্য করেন। যদিও পরে দেশটির অনেক মিডিয়া সত্যটি তুলে ধরে।
এবার মুখ খুললেন খোদ লিটন দাস। শুক্রবার নিজের ফেসবুকে এক বার্তায় গুজবে কান না দিতে অনুরোধ করেন লিটন। তিনি বলেন, প্রিয় দেশবাসী, সবার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে একটি বিষয় অবগত করতে চাই। সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন মিডিয়াতে একটি খবর প্রচার হয়েছে আমাদের বাড়িতে হামলার ঘটনা নিয়ে, যার কোনো সত্যতা নেই। কেউ এইসব গুজবে কান দেবেন না। আমি এবং আমার পরিবার এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ নিরাপদে রয়েছি।
আরও যোগ করেন, আমি বিশ্বাস করি আমাদের দেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। এই দেশে আমরা সকল ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে যেন এক সাথে সামনে এগিয়ে যেতে পারি সেটাই এখন আমাদের একমাত্র মূলমন্ত্র হওয়া উচিত। আমার দিনাজপুরবাসীসহ পুরো দেশ একে অন্যের রক্ষায় যেভাবে নিয়োজিত ছিলেন সেটা সত্যিই প্রশংসনীয় এবং আমি কৃতজ্ঞ। আমি আশা করব ভবিষ্যতেও আমরা সবাই একসাথে থাকব এবং সকল ধরনের সহিংসতা থেকে দূরে রাখব এই দেশটাকে। কারণ দেশটা আমাদের সবার।'
এর আগে নিজেদের হিন্দু ও হিন্দুত্ববাদ নিয়ে কাজ করা যোদ্ধা জানিয়ে 'হিন্দুতভা নাইট' নামের একটি 'এক্স' (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট থেকে মাশরাফির বাড়ি পোড়ার দৃশ্যের একটি ছবির পাশে লিটন দাসের একটি ছবি কোলাজ করে লেখা হয়, সনাতন ধর্মাবলম্বী এই ক্রিকেটারের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। পোস্টটি মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় দৈনিক দ্য ইকোনমিক টাইমস 'বাংলাদেশি ক্রিকেটার লিটন দাসের বাড়ি আন্দোলনকারীরা পুড়িয়ে দিয়েছে? ভাইরাল ভিডিওর পেছনের সত্যিটা এখানে' শিরোনামে করা প্রতিবেদনে সত্যি ঘটনাটি জানায়। লিখেছে, পুড়তে থাকা বাড়ির যে ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, সেটি লিটন দাসের নয়, মাশরাফির বাড়ি।