রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে দেশের ক্রিকেটে সৃষ্ট অনিশ্চয়তার মধ্যে কানাডার ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন সাকিব আল হাসান। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী সপ্তাহে দেশে ফিরে জাতীয় দলে যোগ দেওয়ার কথা তার। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই পরিকল্পনায় কোনো বদল এসেছে কিনা, তা জানার চেষ্টা করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ ক্রিকেট ও কানাডার গেস্নাবাল টি২০ খেলতে জুলাইয়ের শুরুর দিকে দেশ ছাড়েন সাকিব। আগামী ১২ আগস্ট পর্যন্ত আছে তার অনাপত্তিপত্রের মেয়াদ। এরপর পাকিস্তান সফরের টেস্ট সিরিজ খেলতে জাতীয় দলে যোগ দেওয়ার কথা অভিজ্ঞ অলরাউন্ডারের। কিন্তু গত কয়েক দিনে সার্বিক পরিস্থিতির কারণে দেশের ক্রিকেট ছিল একরকম ঘরবন্দি।
গত শনিবার ফিটনেস পরীক্ষার পর জাতীয় দলের অনুশীলন শুরুর কথা থাকলেও সেটি এখনও হয়নি। তবে মিরপুর শেরো বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার অনুশীলন করেছেন 'এ' দলের ক্রিকেটাররা। প্রায় তিন ঘণ্টার অনুশীলন সেশন শেষ হওয়ার পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ইনচার্জ শাহরিয়ার নাফীস। অনেক কথার ভিড়ে সাকিবের প্রসঙ্গে এলে পরিষ্কার তথ্য পাওয়ার জন্য অপেক্ষার কথা বলেন তিনি, 'সাকিব আল হাসানের ১২ আগস্ট পর্যন্ত অনাপত্তিপত্র দেওয়া। ১৩ আগস্ট তার আমাদের কাছে রিপোর্ট করার কথা। আজকে (বুধবার) ৭ আগস্ট। তার আরও ২-৩ ম্যাচ রয়েছে। আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করব। তার পরিকল্পনা জানার চেষ্টা করব।'
সাকিবের অন্য পরিচয়ের প্রসঙ্গ তখন ওঠে। বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটার ছাড়াও সবশেষ জাতীয় সংসদের একজন সদস্য ছিলেন সাকিব। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর হামলার শিকার হয়েছেন ওই সরকারি দলের অনেক সংসদ সদস্য ও নেতা-কর্মীরা। এই অবস্থায় জাতীয় দলে যোগ দিতে সাকিব দেশে ফিরলে তার নিরাপত্তার ঝুঁকি থাকবে কিনা কিংবা নিরাপত্তার বিষয়ে বিসিবি কী ভাবছে, তা জানতে চাওয়া হয় নাফীসের কাছে।
পরিষ্কার কিছু না বলে অনাপত্তিপত্রের মেয়াদ শেষ হওয়ার অপেক্ষার কথাই জানান তিনি, 'রাষ্ট্রপতির আদেশ অনুযায়ী সাকিব আল হাসান এখন আর সংসদ সদস্য নন। তিনি একজন ক্রিকেটারই রয়েছেন। তবু প্রত্যেক মানুষেরই নিরাপত্তার ব্যাপার আছে। ১২ আগস্ট পর্যন্ত তার ছুটি রয়েছে। এরপর বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে তার যোগ দেওয়ার কথা। বিসিবির নির্বাচক কমিটি এখন পর্যন্ত পাকিস্তান সফরের বাংলাদেশ জাতীয় দল ঘোষণা করেনি। দল ঘোষণার পর সে (সাকিব) যদি দলে থাকে, তখন একরকম। আর যদি দলে না থাকে তখন তো তার অনাপত্তিপত্রের কোনো বিষয় আসছে না।'
'এ' দলের অনুশীলন শুরুর পর জাতীয় দলের অনুশীলন শুরুর ব্যাপারেও আশাবাদী নাফীস। সব কিছু ঠিক থাকলে বৃহস্পতিবার জাতীয় ক্রিকেটারদের অনুশীলন শুরু হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন তিনি। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দুই ম্যাচ খেলতে আগামী ১৬ আগস্ট পাকিস্তানের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা বাংলাদেশ দলের। আগামী ২১ আগস্ট রাওয়ালপিন্ডিতে শুরু হবে প্রথম টেস্ট। আর করাচিতে ৩০ তারিখ শুরু হবে পরেরটি।