শেলি অ্যান ফ্রেজার প্রাইস ট্র্যাক থেকে সরে দাঁড়ালেন। তার অনুপস্থিতিতে অলিম্পিকে নতুন দ্রম্নততম মানবীর দেখা পেল বিশ্ব। শনিবার রাতে প্যারিস অলিম্পিকে মেয়েদের ১০০ মিটার স্প্রিন্টের ফাইনালে দুর্দান্ত পারফর্ম করে সোনা জিতেছেন জুলিয়েন আলফ্রেড। সেন্ট লুসিয়াকে প্রথম কোনো অলিম্পিক পদক এনে দিলেন, তাও আবার স্বর্ণ!
শুরু থেকে ট্র্যাকে গতির ঝড় তোলেন আলফ্রেড। বৃষ্টিভেজা ট্র্যাকে জাতীয় রেকর্ড ১০.৭২ সেকেন্ডে ফিনিশিং লাইন ছোঁন আলফ্রেড। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ও রেস ফেভারিট শা'কারি রিচার্ডসন ১০.৮৭ সেকেন্ডে রৌপ্য জিতেছেন। ২০০০ সালের পর প্রথমবার স্প্রিন্টে কোনো মেডেল পেল যুক্তরাষ্ট্র। তার স্বদেশী মেলিসা জেফারসন ১০.৯২ সেকেন্ড সময়ে ব্রোঞ্জ পেয়েছেন। ডাবল অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন ফ্রেজার শেলি প্রাইস পঞ্চম অলিম্পিকে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু সেমিফাইনালের কিছুক্ষণ আগে সরে দাঁড়ান তিনি। তার লেইনও ছিল খালি। ফ্রেজার প্রাইস নাম তুলে নেওয়ায় জ্যামাইকার প্রতিনিধি ছিলেন কেবল টিয়া ক্লেটন। তিনি হন সপ্তম। শনিবার রাতে স্তাতে দে ফ্রান্সের ট্র্যাকে মেয়েদের অ্যাথলিটক্স ইভেন্টের সবচেয়ে আকর্ষণীয় খেলায় বাজিমাত করেন জুলিয়েন আলফ্রেন্ড। এদিন এই ইভেন্ট শেষ হলো জ্যামাইকার আধিপত্য দিয়ে। শেষ চারটি অলিম্পিক স্বর্ণ জিতেছিল তারা, সম্ভাব্য ১২টি মেডেলের মধ্যে ১০টি পেয়েছিল এই দেশটি।
সাফল্যের চূড়ায় উঠতে নিজের সামর্থ্যে আস্থা থাকা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তার উদাহরণ হতে পারেন জুলিয়েন আলফ্রেড। কদিন আগেও যিনি ছিলেন আড়ালে, তার দেশ সেন্ট লুসিয়াকেও চিনত না অনেকে, সেই তিনিই পাদপ্রদীপের আলোয় কী দারুণভাবেই না উঠে এলেন। প্যারিস অলিম্পিকে দ্রম্নততম মানবীর মুকুট জিতলেন, বিশ্ববাসীর সামনে নিজের দেশকে তুলে ধরলেন নতুন করে।
আলফ্রেড জাতীয় পতাকা গায়ে জড়িয়ে বললেন, 'আজ সকালে আমি ঘুম থেকে জেগে লিখেছিলাম 'জুলিয়েন আলফ্রেড, অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন।' মানে আমি নিজের প্রতি বিশ্বাস রেখেছিলাম, যেটা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। সেন্ট লুসিয়া থেকে আসা আমার কাছে অনেক অর্থবহ। বিশ্ব ইনডোরেও আমি এটা করেছিলাম। আমি জানতাম সেন্ট লুসিয়ানরা এই রেস দেখবে। তারা ঘরে বসে উদযাপন করছে নিশ্চয়। আমার মনে হয় লোকেরা এখন সেন্ট লুসিয়াকে খুঁজছে। এই জয় এখনও হজম হয়নি, আস্তে-ধীরে হবে। দেশে ফিরে সবার সঙ্গে উদযাপনে যোগ দিতে অধীর হয়ে আছি আমি।'
বিশ্বের মানচিত্রে সেন্ট লুসিয়া মাত্র এক লাখ ৮০ হাজার মানুষের দেশ। যে দেশে নেই আধুনিক মানের টার্ফ, যেখানে উন্নত পরিবেশে অনুশীলন করার সুযোগ বলতে গেলে নেই। দৌড়ে জুলিয়েনের শুরুটাও নগ্ন পায়ে। সেই মেয়েটিই আজ সেন্ট লুসিয়াকে আনন্দের সাগরে ভাসিয়েছে।