ক্রীড়াঙ্গনে সর্বোচ্চ স্বীকৃতি জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার। এর পরের স্তরেই আছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার। ক্রীড়াঙ্গনে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) পুরস্কার-২০২৪ পাচ্ছেন ১০ জন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও দুই প্রতিষ্ঠান।
আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে এ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চলমান পরিস্থিতির কারণে অনুষ্ঠানটি স্থগিত করা হয়েছে।
আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা তানভীর মাজহার ইসলাম তান্না। সত্তর দশকের একজন তারকা ক্রিকেটার তিনি। এ ছাড়াও শেখ কামালের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধুও ছিলেন। ক্রিকেটার হলেও স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের ম্যানেজার ছিলেন তান্না। খেলোয়াড় হিসেবে ক্যারিয়ার শেষ করার পর সংগঠক হিসেবে কাজ করেন তিনি। ১৯৮৫-৮৬ সালে দেশের শীর্ষ ক্লাব আবাহনী ক্রীড়া চক্রের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তান্না। বিসিবির সাধারণ সম্পাদক ও পরিচালকও ছিলেন তিনি।
খেলোয়াড় ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হয়েছেন শুটার শাকিল আহমেদ। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি স্বর্ণ, চারটি রুপা ও পাঁচটি ব্রোঞ্জ এবং জাতীয় পর্যায়ে ১৩টি স্বর্ণের সঙ্গে পাঁচটি রুপা ও দুটি ব্রোঞ্জ পদক জেতা শাকিলের জন্ম ১৯৯৫ সালে খুলনার ডুমুরিয়ায়।
এরপরই রয়েছেন পাবনার ছেলে সাঁতারু মাহফিজুর রহমান সাগর। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি স্বর্ণের সঙ্গে দুটি রুপা ও ১০টি ব্রোঞ্জ জয়ের পাশাপাশি জাতীয় পর্যায়ে ৬৮টি স্বর্ণ জিতেছেন। সেই সঙ্গে ২১টি রুপা ও ১০টি ব্রোঞ্জ জিতেছেন তিনি।
খেলোয়াড় বিভাগে পুরস্কার পাওয়া আরেক ক্রীড়াবিদ ভারোত্তোলক ফিরোজা খাতুন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাউথ এশিয়ান গেমসে দুটি ব্রোঞ্জপদক রয়েছে কেরানীগঞ্জের এই ভারোত্তোলকের। এ ছাড়া জাতীয় পর্যায়ে ২২টি স্বর্ণ ও ছয়টি রুপা জেতেন তিনি।
উদীয়মান খেলোয়াড় কোটায় পুরস্কার পাচ্ছেন তরুণ ক্রিকেটার তাওহিদ হৃদয় এবং স্প্রিন্টার জহির রায়হান। ২০২৩ সালে মার্চে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া হৃদয় এখন পর্যন্ত ৩০টি ওয়ানডে ও ২৯টি টি২০ ম্যাচ খেলেছেন। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও এ বছর টি২০ বিশ্বকাপেও দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন হৃদয়। তাই ২৩ বছর বয়সি ডান-হাতি ব্যাটারকে বাংলাদেশের ভবিষ্যতের তারকা মনে করা হচ্ছে।
আর স্প্রিন্টার জহির রায়হান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ২২টি স্বর্ণ, চারটি রুপা ও তিনটি ব্রোঞ্জ জিতেছেন। সম্প্রতি এশিয়ান ইনডোর চ্যাম্পিয়নশিপে ৪০০ মিটার স্প্রিন্টে রুপা জিতে আলোচনায় আসেন শেরপুরের এই কৃতী সন্তান।
সংগঠক হিসেবে পুরস্কার পাচ্ছেন সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন। তিনি সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনসহ (বাফুফে) বেশ কটি ক্রীড়া সংস্থা ও সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। তার সঙ্গে রয়েছেন কলাবাগান ক্লাবের বর্ষীয়ান সংগঠক মো. আতিকুর হাবিব।
ফেডারেশন হিসেবে বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশন এবং পৃষ্ঠপোষক বিভাগে শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার পাচ্ছে হামিদ গ্রম্নপ। এই গ্রম্নপ ঢাকার কেরানীগঞ্জে প্রফেসর হামিদুর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়াম প্রতিষ্ঠা করেছে। এ ছাড়া শুটিং ফেডারেশনে আন্তর্জাতিক জিমন্যাশিয়াম, হামিদুর রহমান জাতীয় ইয়ুথ শুটিং প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে।
ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবে পাচ্ছেন খন্দকার মঞ্জুরুল ইসলাম। আর ক্রীড়া ধারাভাষ্যকার হিসেবে পাচ্ছেন কল্যাণ কুমার সাহা।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান যুব ও ক্রীড়া সচিব ড. মহিউদ্দীন আহমদ। সংবাদ সম্মেলনে যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপনের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি ছিলেন না। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে যুব ও ক্রীড়া সচিব বলেন, 'তিনি (ক্রীড়ামন্ত্রী) অসুস্থ থাকায় সংবাদ সম্মেলনে আসতে পারেননি।'