প্যারিস অলিম্পিক গেমস
ইউক্রেনকে হারাতে পারলে কোয়ার্টারে উঠবে আর্জেন্টিনা
প্রকাশ | ২৯ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
ক্রীড়া ডেস্ক
হার দিয়ে অলিম্পিক মিশন শুরু করেছিল আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব-২৩ দল। চরম নাটকীয় ম্যাচে মরক্কোর কাছে ২-১ গোলে পরাজিত হয় আলবিসেলেস্তেরা। তবে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে শনিবার ইরাককে ৩-১ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়ে অলিম্পিকে টিকে রয়েছে লাতিন আমেরিকার দেশটি।
এশিয়ার দেশকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের স্বপ্ন দেখছে ২০০৮ অলিম্পিকের স্বর্ণজয়ীরা। তবে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে হলে তাদের মেলাতে হবে কিছু সমীকরণ। গ্রম্নপ পর্বে তাদের শেষ ম্যাচের প্রতিপক্ষ ইউরোপের দেশ ইউক্রেন। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা-ইউক্রেন।
চলমান প্রতিযোগিতায় 'বি' গ্রম্নপের চারটি দলই এরই মধ্যে দুটি করে ম্যাচ খেলেছে। মজার বিষয় হচ্ছে, এর মধ্যে প্রত্যেকেই জিতেছে একটি করে ম্যাচ। সে কারণেই 'বি' গ্রম্নপের দলগুলোকে কোয়ার্টারে ওঠার ক্ষেত্রে সমীকরণের হিসাব মেলাতে হবে। সব দলেরই পয়েন্ট সংখ্যা ৩। তবে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় শীর্ষে অবস্থান করছে আর্জেন্টিনা। দুই ম্যাচে তারা ৪টি গোল করার বিপরীতে ৩টি হজম করেছে।
অন্যদিকে, যথাক্রমে দুই-তিনে থাকা মরক্কো ও ইউক্রেন তিনটি করে গোল করলেও হজম করেছে সমানসংখ্যক গোল। এ ছাড়া চারে থাকা ইরাক নিজেদের গোলের চেয়ে একটি বেশি হজম করেছে।
গ্রম্নপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচগুলোতে মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা ও ইউক্রেন এবং ইরাক ও মরক্কো। আর্জেন্টিনা যদি পরের ম্যাচটিতে জিততে পারে, তাহলে তাদের আর কোনো সমীকরণের মারপঁ্যাচে পড়তে হবে না। তবে ইউক্রেনের বিপক্ষে তাদের সেই লড়াইটি কঠিন হতে পারে। কারণ, উভয় দলের সামনেই যে কোয়ার্টারে ওঠার লক্ষ্য। এখন পর্যন্ত চার দলের সবার সামনেই রয়েছে কোয়ার্টারে ওঠার সুযোগ।
গ্রম্নপ পর্বের শেষ দুই ম্যাচে জয়ী দল পরের রাউন্ডে উঠে যাবে। হেরে গেলেই ছিটকে যাবে টুর্নামেন্ট থেকে। আবার যদি একটি কিংবা দুটি ম্যাচই ড্র হয়, তখন দেখা হবে গোল ব্যবধানের হিসাব। সেজন্য নিজেদের যেমন গোল করতে হবে, তেমনি গোল হজম করতে হবে তুলনামূলক কম।
খাতা-কলমের হিসাবে ইরাকের চেয়ে আর্জেন্টিনার শক্তির পার্থক্য অনেক বেশি। ফুটবলীয় কাঠামো থেকে শুরু করে খেলার মান কিংবা সুযোগ-সুবিধা, কোনো দিকেই আর্জেন্টিনার আশপাশে নেই ইরাক। তবুও অলিম্পিকে আলবিসেলেস্তেদের বেশ ভুগিয়েছে দলটি। অবশ্য চাপের মুখে থাকলেও জিতেছে আর্জেন্টিনাই। ফ্রান্সের মাটিতে চলমান অলিম্পিকে আর্জেন্টিনার শুরুটাও হয়েছিল দুর্দান্ত। শুরু থেকেই আকাশী-সাদাদের আধিপত্য ছিল চোখে পড়ার মতো। ম্যাচের দশ মিনিটে বক্সের খানিকটা বাইরে ফ্রি কিক থেকে গোল পেতে পারতেন থিয়াগো আলমাদা। তার ফ্রি কিক ছিল নিখুঁত। কিন্তু ইরাকি গোলরক্ষক হুসেইন হাসান ছিলেন আরো বেশি দুর্দান্ত। ঝাঁপিয়ে পড়ে বল গ্রিপে নেন। যদিও মিনিট তিনেক পর এই আলমাদাই নাম তোলেন স্কোরশিটে। যেখানে অ্যাসিস্ট করেন জুলিয়ান আলভারেজ।
বামপ্রান্ত থেকে আসা বলটা আলভারেজ ঠিকঠাক রিসিভ করতে পারেননি। কিন্তু তার আলতো টাচই আলমাদার জন্য ছিল যথেষ্ট। ফাঁকায় দাঁড়ানো এই মিডফিল্ডার ভাসানো বলে দুর্দান্ত এক কিক নেন। তার সেই জোরালো শট ইরাকি গোলরক্ষকের ঠেকাবার সাধ্য ছিল না।
প্রথমার্ধে এরপর কোনো দলই ঠিক সুবিধা করে উঠতে পারছিল না। তবে এশিয়ান দেশটি অবশ্য বারবারই হুমকি হয়েছে। ৪১ মিনিটে আরও একবার গোলের কাছাকাছি চলে যায় আর্জেন্টিনা। এবারও আলভারেজ-আলমাদা জুটির কল্যাণে। যদিও আর্জেন্টাইন নাম্বার টেনের নেওয়া শট চলে যায় বাইরে দিয়ে। যোগ করা সময়ে সমতায় ফেরে ইরাক। দুর্দান্ত এক ক্রসে ইরাককে গোল এনে দেন আইমান হুসেইন। ১-১ সমতায় দুই দল ফেরে টানেলে। দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের লাগাম পুরোপুরি নিজেদের হাতে নিয়ে নেয় হাভিয়ের মাসচেরানোর শিষ্যরা। একের পর এক আক্রমণে ব্যস্ত রাখেন হুসেইন হাসানকে। আলমাদা আর ইগনাসিও ফার্নান্দেজ শুরুর ১০ মিনিটে টানা আক্রমণ চালিয়েছেন ইরাকি রক্ষণের ওপর।
৬০ মিনিটে দলে তিন বদল আনেন মাসচেরানো। এখানেই ঘুরে যায় ম্যাচের ভাগ্য। বদলি নামা কেভিন জেনন বক্সে ফেলেন মাপা ক্রস। তাতে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন একইসময়ে বদলি হিসেবে নামা লুসিয়ানো গুন্দো।