ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে আজ শুক্রবার দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের মুখোমুখি হবে পর্তুগাল। এই ম্যাচের মাধ্যমে আবারো দুই পুরনো প্রতিদ্বন্দ্বী নিজেদের মধ্যকার প্রতিযোগিতা ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। তবে সব ছাপিয়ে অবশ্য এই দুই দলের দুই অধিনায়ক ও তরুণ ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপে ও পর্তুগিজ যুবরাজ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর ওপরই পুরো বিশ্বের নজর থাকবে। বাংলাদেশ সময় আজ রাত ১টায় ফ্রান্স ও পর্তুগালের মধ্যকার এই ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে।
জার্মানির হামবুর্গে শেষ আটের এই লড়াইয়ে ইউরোপের দুই ফুটবল পাগল জাতি নিজেদের এগিয়ে নেওয়ার জন্যই মাঠে নামবে। কিন্তু দুই দলের কেউই এখন পর্যন্ত জার্মানিতে নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি। ফ্রান্স গত সাতটি বড় টুর্নামেন্টের ছয়টিতে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের কোনো খেলোয়াড়ই পেনাল্টি ছাড়া ওপেন পেস্নতে কোনো গোল করতে পারেনি। এনিয়ে চার ম্যাচে তারা মাত্র তিনটি গোল করেছে। এর মধ্যে এমবাপে একটি করেছে পেনাল্টি থেকে। বাকি দুটি হয়েছে আত্মঘাতী গোল। শেষ ষোলতে ইয়ান ভারটোনগেনের আত্মঘাতী গোলে বেলজিয়ামকে ১-০ ব্যবধানে পরাজিত করে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট পেয়েছিল ফ্রান্স।
অন্যদিকে স্স্নোভেনিয়ার বিপক্ষে শেষ ষোলতে ১২০ মিনিট গোলশূন্য থাকার পর শু্যট আউটে জয়ী হয়ে পর্তুগাল শেষ আটের টিকিট পেয়েছে। গোলরক্ষক দিয়েগো কস্তা স্স্নোভেনিয়ার তিনটি শটই রুখে দিয়ে পর্তুগালকে জয় উপহার দিয়েছেন। অতিরিক্ত সময়ে রোনালদো। পেনাল্টি মিস করায় ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণে পেনাল্টি শু্যট আউটের প্রয়োজন হয়। ওই ম্যাচে বেশ কিছু গোলের সুযোগ নষ্ট করায় ৩৯ বছর বয়সি রোনালদো নামের পাশে সবচেয়ে বেশি বয়সি খেলোয়াড় হিসেবে ইউরোতে গোল করার রেকর্ডটি যোগ হয়নি। এই গোল মিস হওয়ার পর রোনালদো কান্নায় ভেঙে পড়েন। দলে আরও অনেক প্রতিভা থাকলেও পর্তুগাল যখনই মাঠে নামে তখনই সবার দৃষ্টি থাকে সাবেক এই রিয়াল মাদ্রিদ তারকার ওপর। রোনালদো নিজেও জানেন তার ওপর পুরো দল কতটা নির্ভর করে। কোচ রবার্তো মার্টিনেজও রোনালদোকে ছাড়া কিছুই চিন্তা করতে পারেন না।
শেষ ষোল'র ম্যাচের পর মার্টিনেজ বলেছেন, 'একজন খেলোয়াড় যে কিনা সব অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, দেশের জন্য অনেক কিছু অর্জন করেছেন তার জন্য এই ধরনের আবেগ স্বাভাবিক। তার এই আবেগ না দেখালেও চলত। এ কারণেই আমি তাকে এতটা পছন্দ করি। রোনালদো এমনই। আমাদের দলে সবাই একসঙ্গে একটি দল হিসেবে খেলতে নামি। এটাই এই দলের শক্তি। সবার এই একাত্মতার কারণেই কস্তা তিনটি পেনাল্টি সেভ করেছে।'
তিন বছর আগে এই দুই দল ইউরোতে গ্রম্নপ পর্বে একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল। পেনাল্টি থেকে রোনাল্ডো জোড়া গোল করলেও ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ২-২ গোলে অমীমাংসিত ছিল। নক আউট পর্বে যখনই এই দুই দল মুখোমুখি হয়েছে তখনই বিজয়ী দল শিরোপা জিতেছে। প্যারিসে ২০১৬ ইউরো ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ের গোলে পর্তুগাল জয়ী হয়েছিল। ইউরো ৮৪-তে মিশেল পস্নাতিনির অতিরিক্ত সময়ের গোলে সেমিফাইনালে ফ্রান্স জয়ী হয়েছিল। ২০০০ সালের সেমিফাইনালে জিনেদিন জিদানের পেনাল্টিতে গোল্ডেন গোলে ফ্রান্স জয়ী হয়েছিল। এ ছাড়া ঠিক ১৮ বছর আগে মিউনিখে ২০০৬ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে আবারো জিদান ফ্রান্সকে জয় উপহার দিয়েছিলেন। এবারের ইউরোই রোনালদোর শেষ ইউরোপীয়ান আসর হতে যাচ্ছে। তাই এটিকে স্মরণীয় করে রাখতে চায় রোনালদোর জাতীয় দলের সতীর্থরা।