গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়রা অফ ফর্মে থাকলে দলে সমস্যা হওয়া স্বাভাবিক : তাসকিন

প্রকাশ | ২৯ জুন ২০২৪, ০০:০০

ক্রীড়া প্রতিবেদক
এবারের টি২০ বিশ্বকাপে শুরুটা ভালোই করেছিল বাংলাদেশ। গ্রম্নপ পর্বে শ্রীলংকাকে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে হারিয়ে যাত্রা শুরু করে তারা। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৪ রানে হেরে যায় শান্তর দল। তবে গ্রম্নপ পর্বের শেষ দুই ম্যাচে নেদারল্যান্ডস ও নেপালকে হারিয়ে টি২০ বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো শেষ আটে জায়গা করে নেয় টাইগাররা। তবে শেষ আটে একটি ম্যাচও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে বড় ব্যবধানে হেরে যায় শান্ত বাহিনী। এরপর ভারতের কাছেও হারে বাংলাদেশ। তবে দুই ম্যাচ হেরেও সেমিতে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ ছিল বাংলাদেশের সামনে। শেষ আটে নিজেদের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হয়েছিল টাইগাররা। তবে নাটকীয় সেই ম্যাচ হেরে শেষ আট থেকেই বিদায় নেয় শান্তর দল। এরপর কিছুদিন ক্যারিবীয় দীপপুঞ্জে কাটানোর পর শুক্রবার দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ দল। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে শুক্রবার সকাল ৯টায় পা রাখেন ক্রিকেটাররা। অ্যান্টিগা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামি ও দুবাই হয়ে ঢাকায় এসেছেন ক্রিকেটাররা। দলের সঙ্গে বাংলাদেশে আসেননি বিদেশি কোচরা। হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেসহ সবাই বিশ্বকাপ শেষে নিজ নিজ দেশে ছুটিতে গেছেন। এছাড়া ফেরেননি লিটন দাস ও সৌম্য সরকার। সাকিব বৃহস্পতিবারই ঢাকায় এসেছেন। সৌম্য ও লিটন আসবেন শনিবার। আপাতত কয়েক সপ্তাহ ছুটি পাচ্ছেন ক্রিকেটাররা। ছুটি শেষে চলমান টাইগার্স ক্যাম্পে যোগ দেওয়ার কথা তাদের। যেখানে আগে থেকেই মুশফিকুর রহিম, এনামুল হক বিজয়সহ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা ক্যাম্প করছেন। অন্যদিকে বয়সভিত্তিক দল পেরিয়ে আসা ক্রিকেটারদের নিয়ে হাই-পারফরম্যান্স (এইচপি) ইউনিটের ক্যাম্প চলছে। আফগানিস্তান ম্যাচ নিয়ে হতাশ পুরো দল। বিশ্বকাপে প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারেননি তারা। ভবিষ্যতে ভালো কিছু করার আশ্বাস দিয়েছেন টাইগার পেসার তাসকিন আহমেদ। বিমানবন্দরে পা রেখেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বাংলাদেশ দলের সহ-অধিনায়ক তাসকিন আহমেদ। তাসকিন বলেন, 'আমরা তো মাইনাসেই আছি। পস্নাস করতে হবে। সবার মতো আমরাও জানি, প্রত্যাশা অনুযায়ী ভালো হয়নি। আপনারা যদি পরিসংখ্যান দেখেন, বোলিং ইউনিট আগাগোড়াই কয়েক বছর ধরে ভালো করছে। সে ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে। সামনে আরও ভালো হবে। ভালোর তো শেষ নেই।' ব্যাটিং ব্যর্থতা নিয়ে সহ-অধিনায়ক বলেন, 'ব্যাটিং, বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে যুক্তরাষ্ট্রে যখন খেলা হয়েছে, তখন উইকেট ব্যাটসম্যানদের পক্ষে কম ছিল। অন্য দেশের বড় বড় ব্যাটসম্যানকেও সেখানে ধুঁকতে হয়েছে। সেখানে বোলারদের একটু বাড়তি সুবিধা ছিল।' ব্যাটারদের হতাশাময় পারফরম্যান্সের কারণে বেশ কয়েকবারই তীরে এসে তরী ডুবিয়েছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে দিনকে দিন অনন্য উচ্চতায় জায়গা করে নিচ্ছে বাংলাদেশের বোলিং লাইনআপ। তবে এবারের টি২০ বিশ্বকাপে ব্যাটারদের যেই পারফরমেন্স, তা আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। টি২০ বিশ্বকাপে সহ-অধিনায়ক তাসকিন আহমেদও অকপটে বিষয়টি স্বীকার করলেন। তার দাবি, ব্যাটিংয়ে এত দীর্ঘ দুঃসময় আগে দেখেননি তিনি। তিনি আরও বলেন, 'ওয়েস্ট ইন্ডিজে যাওয়ার পর আমরা কিছুটা ভালো উইকেটে খেলেছি।' কিন্তু আমি বাংলাদেশ দলের হয়ে ক্রিকেট খেলার সময়, লাস্ট ১০ বছর ধরে খেলছি, কখনোই এত লম্বা ব্যাডপ্যাচ দেখিনি। আশা করি এটা কাটিয়ে উঠবে।' দলের দুই সিনিয়র ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউলস্নাহ ছিলেন পুরো বিশ্বকাপ জুড়ে ব্যর্থ। তাদের ফর্মহীনতা দলকে ভুগিয়েছে, এমনটা মানেন তাসকিন। তার কথা, 'দু'জন সিনিয়রের ফর্মে না থাকা অবশ্যই প্রভাব ফেলেছে। কিন্তু মাঠের বাইরে প্রভাব পড়েনি।' তাসকিন যোগ করেন, '৪৭ দিন এক সঙ্গে ছিলাম, সবাই এক সঙ্গে ছিলাম। অফ দ্য ফিল্ডে সব ভালো ছিল। দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়রা অফ ফর্মে থাকলে ওই দলে সমস্যা হওয়াটাই স্বাভাবিক। আশা করছি দ্রম্নত সামনে এসব কাটিয়ে উঠব।' বাংলাদেশ দলের বিশ্বকাপ পারফরম্যান্স নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বারবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে সুপার এইট পর্বেও শেষ ম্যাচের প্রসঙ্গ টেনেছেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে শান্ত বলেছিলেন, তারা প্রথম ৩ উইকেট যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ১২ ওভারের মাঝে জয়ের চিন্তা করেছিলেন। তবে তাসকিন জানিয়েছেন ভিন্ন কথা। পারফরম্যান্স ও আফগানদের বিপক্ষের ম্যাচ নিয়ে তাসকিন বললেন, 'না, আসলে সত্যি কথা বলতে, ভালোর তো শেষ নেই। হঁ্যা, আরও অনেক ভালো হতে পারত। বিশেষ করে শেষ ম্যাচটা, আমরা সবাই একটু হতাশ হয়েছি।' এরপর তিনি বলেন, 'আমরা জেতার চেষ্টা করেছি প্রথমে, ১২ ওভারের মধ্যে। যখন বুঝতে পারলাম ১২ ওভারের মধ্যে শেষ করা সম্ভব না, তখন স্বাভাবিকভাবে খেলার চেষ্টা করেছিল সবাই। তাও জিততে পারিনি।' দলের বোলারদের পারফরম্যান্স নিয়ে এই পেসার বলেন, 'হঁ্যা, ইতিবাচক দিক আছে। পুরো টুর্নামেন্টে বোলিং যথেষ্ট ভালো করেছে। সুপার এইটে এসেছি। সর্বপ্রথম টি২০ বিশ্বকাপে আমরা তিনটা জয় পেয়েছি। মানে পজেটিভ আছে। কিন্তু নেগেটিভের সংখ্যাটা একটু বেশি।'