প্রোটিয়াদের ফাইনালে ওঠার পথে বাধা আফগানরা

প্রকাশ | ২৭ জুন ২০২৪, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওঠার লক্ষ্য নিয়ে টি২০ বিশ্বকাপ নবম আসরের প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে দক্ষিণ আফ্রিকা-আফগানিস্তান। ওয়ানডে ও টি২০ বিশ্বকাপ মিলিয়ে সাতবার সেমিফাইনালে খেললেও ফাইনালে মঞ্চে নামার সুযোগ হয়নি প্রোটিয়াদের। ফাইনালে খেলতে না পারার বন্ধ্যাত্ব এবার ঘোচাতে মরিয়া অষ্টমবারের মতো আইসিসি টুর্নামেন্টের সেমিতে ওঠা দক্ষিণ আফ্রিকা। অন্যদিকে, ফাইনাল ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছে না প্রথমবারের মতো আইসিসির কোনো ইভেন্টের সেমিফাইনালে জায়গা করে নেওয়া আফগানিস্তান। ক্যারিবীয় দ্বিপপুঞ্জের ত্রিনিদাদের ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে আজ বৃহস্পতিবার টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনালে বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৬টায় দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে আফগানিস্তান। আর এই ম্যাচটি সরাসরি দেখা যাবে টি স্পোর্টস ও নাগরিক টিভিতে। গ্রম্নপপর্বে চার ম্যাচের সবগুলোতে জিতে সুপার এইটে জায়গা করে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। গ্রম্নপপর্বে বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, নেদারল্যান্ডস ও নেপালকে হারিয়েছিল তারা। গ্রম্নপপর্বের মতো সুপার এইটেও শতভাগ সাফল্য পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। সুপার এইটে যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো টি২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় প্রোটিয়ারা। গ্রম্নপপর্বের ৪ ও সুপার এইটে ৩ ম্যাচসহ টানা ৭ জয় দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গী। টানা ৭ জয়ের মধ্যে ৬টিতে ঘাম ঝরিয়ে ও ভাগ্যের জোরে জিততে হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। কিন্তু সেমিফাইনালের মঞ্চে শ্বাসরুদ্ধকর জয় চান না প্রোটিয়া অধিনায়ক আইডেন মার্করাম। দাপুটে জয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনালে নাম লেখানোর স্বপ্ন মার্করামের, 'সেমিফাইনালে উঠতে পেরে দারুণ তৃপ্তি লাগছে। সেমিতে দাপটের সঙ্গে জিততে চাই। আগের সাত ম্যাচে অনেক ভুল করেছি আমরা। আশা করি, সেমিতে পুরনো ভুলগুলো হবে না। তবে এটি সত্যি চলতি আসরে আমরা এখন পর্যন্ত দারুণ ক্রিকেট খেলেছি। বোলিং ইউনিট দুর্দান্ত করেছে। পাশাপাশি ব্যাটিং ইউনিট সময়মত নিজেদের সেরাটা ঢেলে দিয়েছে। আশা করি, সেমিতে আরও ভালো ক্রিকেট খেলতে পারব।' ওয়ানডে ও টি২০ বিশ্বকাপে ফেভারিট হিসেবে খেলতে নেমে বারবার তীরে এসে তরি ডুবায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাঁচবার এবং টি২০ বিশ্বকাপে দুইবার সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়ায় প্রোটিয়াদের গায়ে 'চোকার্স' শব্দটি স্থায়ীভাবে লেপ্টে গেছে। ২০০৯ ও ২০১৪ সালে টি২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এবারও কি 'চোকার্স' শব্দকে নিজেদের সঙ্গে আরও জোরাল করবে প্রোটিয়ারা? এমন প্রশ্নের জবাবে মার্করাম বলেন, 'অতীতের পরিসংখ্যান নিয়ে আমরা ভাবছি না। আমাদের সামনে এখন নতুন একটি ম্যাচ। এই ম্যাচ ঘিরেই আমাদের সব পরিকল্পনা। আফগানিস্তান খুবই ভালো দল। বিশ্বকাপের সব ম্যাচেই নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছে তারা। আমরাও আফগান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত।' গ্রম্নপপর্বে দূর্দান্ত ক্রিকেট খেলেছে আফগানিস্তান। প্রথম তিন ম্যাচে নিউজিল্যান্ড, উগান্ডা ও পাপুয়া নিউগিনিকে হারিয়ে সুপার এইট নিশ্চিত করে তারা। গ্রম্নপপর্বের শেষ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরে যায় আফগানরা। গ্রম্নপ রানার্সআপ সুপার এইটে উঠে আরও বড় চমক দেখায় আফগানিস্তান। ভারতের কাছে হারলেও, অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে দেয় রশিদ-নবিরা। সুপার এইটে নিজেদের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে বৃষ্টি আইনে ৮ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ পেয়েছে আফগানিস্তান। বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল স্বপ্নের মতো লাগছে আফগান অধিনায়ক রশিদ খানের, 'বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলা, দল হিসেবে এটি আমাদের জন্য স্বপ্নের মতো। আমরা যেভাবে টুর্নামেন্ট শুরু করেছি, নিউজিল্যান্ডকে হারানোর পর বিশ্বাসটা চলে আসে। এটি অবিশ্বাস্য। অনুভূতি বোঝানোর মতো ভাষা নেই আমার। এত বড় অর্জনে দেশের সবাই নিশ্চিতভাবেই আমাদের নিয়ে অনেক খুশি।' এবার সেমিফাইনালেও চমক দেখিয়ে বাজিমাত করতে চায় আফগানিস্তান। ফাইনালের টিকিট পেতে মরিয়া রশিদ বলেন, 'আমাদের সামনে ফাইনালে খেলার সেরা সুযোগ এসেছে। আমরা ফাইনাল ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছি না। পুরো দল উজ্জীবিত ও আত্মবিশ্বাসী। সেমিফাইনালে সেরা ক্রিকেট খেলতে মরিয়া তারা। দক্ষিণ আফ্রিকা শক্তিশালী দল, কিন্তু আমরা নিজেদের সেরাটা খেলতে পারলে জয় পাওয়া অসম্ভব নয়।' এখন পর্যন্ত টি২০তে দুইবার মুখোমুখি হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা-আফগানিস্তান। দুইবারই বিশ্বকাপের মঞ্চে দেখা হওয়া ম্যাচে জয় পেয়েছে প্রোটিয়ারা। ২০১০ সালে ৫৯ রানে এবং ২০১৬ সালে ৩৭ রানে জয় পেয়েছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা। আজ বৃহস্পতিবার তৃতীয় দেখায়ও আফগানিস্তানকে হারাতে মরিয়া প্রোটিয়া অধিনায়ক মার্করাম।