সবার আগে কোপার কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনা
প্রকাশ | ২৭ জুন ২০২৪, ০০:০০
ক্রীড়া ডেস্ক
কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনার কঠিন পরীক্ষা নিয়েছে চিলি। জয় পেতে অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে শেষ পর্যন্ত। মুহুর্মুহু আক্রমণ করল আর্জেন্টিনা। প্রবল প্রতিরোধের দেয়াল তুলল চিলি। মেসি-আলভারেসদের একের পর এক আক্রমণ সে দেয়ালের সামনে মুখ থুবড়ে পড়তে থাকল, পথ আগলে দাঁড়াল পোস্টও। অপেক্ষার প্রহর পেরিয়ে শেষ দিকে কাঙ্ক্ষিত গোল এনে দিলেন লাউতারো মার্টিনেজ। সবার আগে কোপা আমেরিকার শেষ আটে জায়গা করে নিল শিরোপাধারী আর্জেন্টিনা।
নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালের ম্যাচে চিলির বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতেছে লিওনেল স্কালোনির দল আর্জেন্টিনা। ২০১৫ ও ২০১৬ আসরের ফাইনালিস্টদের লড়াইয়ে বদলি নেমে ব্যবধান গড়ে দেন মার্টিনেজ। গ্রম্নপ-এ থেকে দুই ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে আর্জেন্টিনা শীর্ষেই। পেরুকে ১-০ গোলে হারিয়ে ৩ পয়েন্ট নিয়ে কানাডা দুই নম্বরে। তারা নকআউটের আশা এখনো বাঁচিয়ে রেখেছে। চিলি ও পেরু একটি করে পয়েন্ট পেয়েছে।
স্কোর লাইন যা বলছে, মাঠের লড়াইয়ে পার্থক্য ছিল এর চেয়ে অনেক বড়। ৬১ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য ২২ শট নেয় আর্জেন্টিনা, এর ৯টি ছিল লক্ষ্যে। এর বিপরীতে চিলি শট নিতে পারে কেবল তিনটি, অবশ্য তিনটিতে চমৎকার সেভ করেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। আর্জেন্টিনা গোলরক্ষকের চেয়ে অনেক ব্যস্ত সময় কাটে ক্লাওদিয়ো ব্রাভোর। ৯টি দারুণ সেভ করেও শেষ রক্ষা করতে পারেননি চিলি গোলরক্ষক। যুক্তরাষ্ট্রের এই মাঠেই ২০১৬ আসরের ফাইনালে ট্রাইবেকারে চিলির কাছে হেরেছিল আর্জেন্টিনা। সেই মাঠেই জিতে, মধুর প্রতিশোধ নিয়ে, গ্রম্নপ সেরা হওয়ার পথে অনেকটাই এগিয়ে গেল প্রতিযোগিতার ১৫ বারের চ্যাম্পিয়নরা।
নিউ জার্সির মেট লাইফ স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনার শুরুটা ছিল বেশ সতর্ক। হওয়ারই কথা। দক্ষিণ আমেরিকার দুই হেভিওয়েটের লড়াই বলে কথা। এই মাঠেই যে ২০১৬ সালের ফাইনালে টাইব্রেকারে তাদের হৃদয় ভেঙে ছিল চিলি। যে ব্যর্থতা মেনে নিতে না পেরে মেসি অবসরের সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলেছিলেন। তার পর অবশ্য সিদ্ধান্ত বদল করেছেন যদিও। এদিন স্টেডিয়ামের ৯০ শতাংশ ভক্তই ছিল আর্জেন্টিনার জার্সি পরা। তাও আবার মেসি নাম ও নম্বর গায়ে।
অফুরান সমর্থনের দিনে আর্জেন্টিনা অবশ্য দর্শকদের হতাশ করেনি। ধীরে ধীরে ম্যাচটাতে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছে। স্কোরলাইন সেটার সাক্ষ্য দেয় না যদিও। বল দখলে আর্জেন্টিনা ৬২ শতাংশ এগিয়ে ছিল। গোল করার জন্য শটও নিয়েছে ২১টি। তার মধ্যে লক্ষ্যে ছিল ৮। ৫ বার সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করলেও একপর্যায়ে ড্র সম্ভাব্য মনে হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত ২১তম শটে ভাগ্য বদলেছেন মার্টিনেজ।
গোলের অনেকগুলো সুযোগ নষ্ট করেছেন হুলিয়ান আলভারেজ, নিকোলাস গঞ্জালেসরা। তারা চিলির গোলকিপার ক্লদিও ব্রাভোর পরীক্ষা নিলেও ব্যর্থ হয়েছেন। ৩৭তম জন্মদিন পালন করা লিওনেল মেসিরও ভাগ্য সহায় ছিল না। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক লং রেঞ্জের শট নিলেও সেটা আঘাত করেছে পোস্টে। দ্বিতীয়ার্ধে গোলের সুবর্ণ সুযোগটি নষ্ট করেছেন আর্জেন্টিনার ম্যাক অ্যালিস্টার। তার পর থেকে ম্যাচের কিছুটা নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করেছে চিলি।
চার মিনিটের ব্যবধানে দুবার গোলের কাছেও চলে গিয়েছিল তারা। কিন্তু ৭২ ও ৭৬ মিনিটে দুবারই রদ্রিগো এচেভেরিয়ার শট সেভ করে তাদের হতাশ করেছেন এমি মার্টিনেজ। শেষ পর্যন্ত ৮৮ মিনিটে স্কোরলাইনে বদল আসে বদলি নামা লাউতারো মার্টিনেজের কল্যাণে। আর্জেন্টিনাকে উদ্ধার করেন তিনি। মেসির কর্নার থেকে পাওয়া বলে প্রথম শটটি বস্নক করেছিলেন ব্রাভো। সেটি রিবাউন্ড হয়ে কাছে এলে বক্সের মাঝামাঝি থেকে জাল কাঁপিয়েছেন মার্টিনেজ। অবশ্য গোলটি বৈধ কিনা সেটি নিয়ে রিভিউ চলে কিছুক্ষণ। যদিও সিদ্ধান্ত পাল্টায়নি তাতে।