শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১

ব্রায়ান লারাকে ঠিক প্রমাণ করেছেন রশিদ খানরা

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ২৬ জুন ২০২৪, ০০:০০
আফগানিস্তানের অধিনায়ক রশিদ খান

এক ম্যাচের ওপর ঝুলছিল তিন দলের সেমিফাইনাল ভাগ্য। শেষ চারের লক্ষ্যে আফগানদের বিপক্ষে বল হাতে শুরুটা ভালো করেছিলেন টাইগার বোলাররা। তাদের নৈপুণ্যে ১১৫ রানেই রশিদ খানদের আটকে রাখে বাংলাদেশ। সেমিতে যেতে আফগানিস্তানের দেওয়া ১১৬ রানের লক্ষ্য ১২.১ ওভারের মধ্যে তাড়া করতে হতো নাজমুল হোসেন শান্তদের।

সেটা তো দূরের কথা, শেষ পর্যন্ত ম্যাচই জিততে পারেনি টিম টাইগার্স। বৃষ্টি আইনে ৮ রানের জয়ে প্রথমবারের মতো সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে আফগানিস্তান। বাংলাদেশের হারে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়ারও।

ম্যাচ শেষে আফগান অধিনায়ক রশিদ খান বলেন, 'আমরা ভেবেছিলাম ১৩০-১৩৫ ভালো সংগ্রহ। কিন্তু আমরা ১৫ রান কম করেছি। আমরা জানতাম যে বাংলাদেশ চালিয়ে খেলবে আর আমাদেরকে সুযোগগুলো নিতে হবে। আমাদের অতিরিক্ত কিছু করার দরকার ছিল না, শুধুমাত্র নিজেদের পরিকল্পনামতো খেলার চেষ্টা করলেই যে হতো এটা আমরা জানতাম।'

সেমিফাইনালে উঠে ব্রায়ান লারাকে ধন্যবাদ দিয়ে রশিদ বলেন, 'কেবলমাত্র ব্রায়ান লারা বিশ্বাস করেছিলেন যে আমরা সেমিতে উঠতে পারব। আমরা তাকে ঠিক প্রমাণ করেছি। আমরা যখন তার সঙ্গে একটা পার্টিতে দেখা করেছি তখন তাকে বলেছিলাম যে আমরা তাকে হতাশ করব না।'

আফগানিস্তানের জনগণকে নিয়ে রশিদ বলেন, 'আমরা ঘরের লোকদের খুশি করতে চেয়েছি। সবাই এটার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছে। আফগানিস্তানে এখন দারুণ উৎসব চলছে। আমাদের জন্যও এটা অনেক বড় অর্জন। আমরা অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে এর আগে এখানে পৌঁছেছি, কিন্তু এটা বিশ্বকাপ। আমার বলার ভাষা নেই যে আফগানিস্তানে এখন কত বড় উৎসব চলছে।'

এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের পারফরম্যান্সের পার্থক্য আকাশ-পাতাল। তবে এমনিতেই সাদা বলের ক্রিকেটে দুই দলের পার্থক্য খুব বেশি আছে বলে মনে করেন না রশিদ খান। একটা জায়গাতেই শুধু নিজেদের এগিয়ে রাখছেন তিনি। পেশির জোরে বল গ্যালারিতে পাঠানোর মতো ব্যাটসম্যান তাদের আছে।

সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বেশ কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশের প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে আফগানিস্তান। তবে একটি জায়গায় বাংলাদেশের সন্তুষ্টির জায়গা ছিল। বিশ্বমঞ্চে কখনও আফগানদের কাছে হারতে হয়নি। এবার সেটিও আর অক্ষত থাকছে না। ওয়ানডে বিশ্বকাপে তিনবার ও টি২০ বিশ্বকাপে একবার হারার পর অবশেষে বিশ্ব আসরে বাংলাদেশকে হারাতে পেরেছে আফগানরা।

বাংলাদেশ সেখানে সুপার এইটের বিদায় নিয়েছে সুপার এইটের সব ম্যাচ হেরে। প্রথম বিশ্বকাপ খেলার ২৫ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও কোনো সেমিফাইনালের মুখ দেখেনি তারা। অথচ ২০০৮ সালেও আইসিসি ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট লিগ ডিভিশন ফাইভ-এ খেলা আফগানিস্তান গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে একটা পর্যায়ে সম্ভাবনা জাগিয়েছিল শেষ চারের। এবার টি২০ বিশ্বকাপে তো সেমিতে উঠেই গেল।

বাংলাদেশকে তবু সম্মানটুকু ঠিকই দিচ্ছেন রাশিদ। সেমিফাইনালে ওঠার পর আফগান অধিনায়ক বলেন, দুই দল তার কাছে প্রায় একই কাতারের, 'বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের পার্থক্য খুব বেশি নেই। দুই দলই ভালো ক্রিকেট খেলে। বিশেষ করে সাদা বলে, আমার মনে হয়, খুব একটা পার্থক্য নেই। স্রেফ সংক্ষিপ্ত সংস্করণে আফগানিস্তানে শক্তিশালী 'হিটার' আছে, যারা বল মাঠ ছাড়া করতে পারে। তবে ওদের ব্যাটাররাও ভালো।'

'সত্যি বলতে, সাদা বলের ক্রিকেটে দুই দলের পার্থক্য খুব বেশি দেখি না। বাংলাদেশে ওদের সঙ্গে আমরা অনেক খেলেছি। আমরা দুটি ম্যাচ জিতেছি বলেই এমন নয় যে ওদের চেয়ে অনেক অনেক ভালো দল হয়ে গেছি। আমরা একই পর্যায়ের দল। ব্যাপারটি হলো নির্দিষ্ট দিনে সঠিক ক্রিকেট খেলতে পারা এবং এভাবেই আরও ভালো দল হয়ে উঠতে হয়।'

শুধু বাংলাদেশ-আফগানিস্তানই নয়, রশিদ কাছাকাছি রাখেন সব দলকেই। তার মতে, পার্থক্য গড়া হয় নির্দিষ্ট দিনে খেলার ধরনের ওপর, 'আমার চোখে, ভালো দল আর খারাপ দল বলে কিছু নেই। সব দলই সমান। যে দিন যে দল ভালো খেলে, তারাই ভালো দল। যে দিন মাঠে নেমে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে কোনো দল, সেখানেই পরাজিত দলের সঙ্গে পার্থক্য গড়ে ওঠে। এছাড়া স্কিলের দিক থেকে আমার মনে হয়, সব দলই কাছাকাছি।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে