অঘটনের বিশ্বকাপে টানা ৭ জয়ে সেমিফাইনালের টিকিট কেটেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। টুর্নামেন্টে এ পর্যন্ত অপরাজিত থাকলেও প্রতিটি ম্যাচে জিততে প্রোটিয়াদের ঘাম ঝরাতে হয়েছে। চোকার তকমা লেগে যাওয়া দলটি যেন অ্যান্টি চোকিং ফর্মুলায় ক্রিকেটের বৈশ্বিক আসরে শিরোপা জয়ের কথা ভাবতে পারছে। নকআউট পর্বের আগে অধিনায়ক এইডেন মার্করাম মনে করিয়ে দিলেন, সেরা ক্রিকেটটা খেলা এখনো বাকি তাদের। সেই সঙ্গে আগাম হুমকি দিয়ে রাখলেন, সেমিফাইনালের জন্য জমিয়ে রেখেছেন সেরাটা।
গ্রম্নপ পর্বে শ্রীলংকার বিপক্ষে মাত্র ৭৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে মার্করামের দলের খেলতে হয় ১৬.২ ওভার, হারাতে হয় ৪ উইকেট। নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে হারের শঙ্কায় পড়ে ৭ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটের জয় আসে। রোমাঞ্চকর ম্যাচে শেষ বলের নাটকীয়তায় বাংলাদেশের সঙ্গে মাত্র ৪ রানের জয় মেলে। উদীয়মান নেপালের সাথে মাত্র ১ রানের জয় তাদের বড় অঘটন থেকে রক্ষা করে।
সুপার এইটে যুক্তরাষ্ট্রও নিয়েছিল পরীক্ষা, ১৮ রানের বেশি ব্যবধানে প্রোটিয়ারা জেতেনি। জমজমাট ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ৭ রানে হারানোর স্বস্তিটা ছিল। বৃষ্টিকে পাশ কাটিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫ বল আর ৩ উইকেট হাতে রেখে দক্ষিণ আফ্রিকা গ্রম্নপ-২ চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেছে সেমিফাইনালে।
ক্যারিবীয়দের হারানোর পর সেমিতে পছন্দের প্রতিপক্ষ কারা হতে পারে? ২৯ বর্ষী মার্করাম বললেন, 'প্রতিপক্ষ যেই হোক না কেন, আমরা এখনো সেরা ক্রিকেট খেলিনি। তাই আমরা সেমিফাইনালের জন্য সেরাটা একসাথে রাখার চেষ্টা করব। সেমিফাইনালে ওঠা অনেকটাই স্বস্তির। মাথা থেকে ব্যাপারটা ফেলে দেওয়া যাচ্ছে না। আমরা ব্যাট হাতে আরও স্বাচ্ছন্দ্য হতে পছন্দ করতাম। বৃষ্টির পর উইকেটে সুন্দর খেলা চলছিল। জুটি না পেলেও মারমুখী খেলা ছিল। খুব তাড়াতাড়ি রানতাড়ার চেষ্টা ব্যাটাররা করেছিল।'
ঐতিহাসিকভাবে বৃষ্টি আইনের হিসাব সাউথ আফ্রিকার বহুবার কপাল পুড়িয়েছে। যদিও প্রোটিয়াদের ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে খেলা বন্ধের সময় পরিস্থিতি অনুকূলেই ছিল। কারণ ম্যাচ পরিত্যাক্ত হলে পয়েন্ট ভাগাভাগিতে দলটির সেমিতে যাওয়া আটকাত না। খেলা শুরুর পর আবার বৃষ্টির শঙ্কা থাকায় অতীতের দুঃসহ স্মৃতির চোখরাঙানি ছিল। মার্করাম অবশ্য জানালেন, খেলোয়াড়রা সবাই ইতিবাচক মানসিকতার মাঝে ছিল, 'আমাদের জন্য ড্রেসিংরুমের পরিবেশ চমৎকার ছিল। আশা করি আমরা এরকম জটিল পরিস্থিতিগুলো এড়িয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পারব। ভেবেছিলাম আমরা সত্যিই ভালো বোলিং ও পরিস্থিতি মূল্যায়ন করেছি। জুটি গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তাকে উপলব্ধিটা ছিল।'
রানতাড়ায় একপর্যায়ে দ্রম্নত উইকেট হারিয়ে সাউথ আফ্রিকা বিপদে পড়েছিল। শেষ রক্ষা হলেও গায়ে হাওয়া লাগাতে নারাজ মার্করাম। বললেন, 'শিক্ষা নেওয়ার ভালো পাঠ রয়েছে। আশা করি আমরা সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি করব না।'
'আমরা শামসিকে বেছে নিয়েছি এদিন। একজন রহস্য স্পিনারকে দলে রাখতে চেয়েছি আমরা। মনে হয়েছে, তাকে নিলে আমাদের ভালো সুযোগ থাকবে। পাওয়ার পেস্নতেই দেখেছি, বল টার্ন করছে। এরপর যত বেশি সম্ভব স্পিনারদের দিয়েই বল করাতে চেয়েছি। কেজি (রাবাদা) মাত্র দুই ওভার বোলিং করেছে, এতেই বোঝা যাচ্ছে উইকেটের আচরণ কেমন ছিল। শামসি দারুণ বোলিং করেছে।'