আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে প্রতিনিয়তই ক্রীড়াবিদরা বিদেশ যাচ্ছেন। দেশে ফেরার সময় বাংলাদেশ দলের চেহারা প্রায় সময় থাকেন মলিন। সোমবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের চিত্র ছিল খানিকটা ভিন্ন। সিঙ্গাপুর থেকে আগত জুনিয়র পুরুষ দল চ্যাম্পিয়ন ট্রফি আর নারী দল রানারআপ মেডেল নিয়ে এসেছেন।
নারী-পুরুষ দুই দল হকির ইতিহাসে একসঙ্গে খেলতে যায়নি ইতোপূর্বে। প্রথমবারের মতো গিয়েই দুর্দান্ত ফলাফল যা হকির বিশেষ অর্জন। হকি ফেডারেশনের নতুন সভাপতি বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল হাসান মাহমুদ খান দলকে বরণ করতে ছুটে গেছেন বিমানবন্দরে। খেলোয়াড়দের গলায় ফুলের মালা ও মিষ্টি মুখে বেশ আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি হয় বিমানবন্দরে।
নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই হকিতে এই সাফল্য। তাই তিনি এটা উপহার ও অনুপ্রেরণা হিসেবে নিচ্ছেন, 'আমার জন্য এটা অনেকটা উপহারস্বরূপ। ভবিষ্যতে হকিকে যেন এগিয়ে নিতে পারি তা উদ্বুদ্ধ করেছে। আমার পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহায়তা থাকবে।'
এএইচএফ কাপে পুরুষ দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কয়েকবারই। জুনিয়র এশিয়া কাপে গিয়ে ব্যর্থ। অনুশীলন ও নানা সমস্যায় জুনিয়র খেলোয়াড়রা আর বিকশিত হতে পারেন না।
নতুন সভাপতি খেলোয়াড়দের পাশে থাকার প্রতিশ্রম্নতি দিলেন, 'এই খেলোয়াড়রাই আমাদের ভবিষ্যৎ। এদের অনেকেই সিনিয়র দলে খেলবে। আমরা তাদের আরও উন্নত অনুশীলন ও ম্যাচ খেলার ব্যবস্থা করব।'
বাংলাদেশের হকির অন্যতম সমস্যা আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা। এমন সাফল্যের পর পৃষ্ঠপোষকরা হকিতে এগিয়ে আসবে এমন আশাও ব্যক্ত করেছেন সভাপতি।
এবারের টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি নারী হকি দলের জুনিয়র এশিয়া কাপ খেলার সুযোগ। নারী দলকে আলাদাভাবে অনুপ্রাণিত করেছেন সভাপতি। এমনটাই জানালেন নারী দলের ম্যানেজার ও ফেডারেশনের সদস্য তারিকউজ্জামান নান্নু, 'সভাপতি মহোদয় নারী হকি দলকে আলাদাভাবে উদ্দীপনামূলক মন্তব্য প্রদান করেছেন। নারী খেলোয়াড়রা যেন নিয়মিত টুর্নামেন্ট ও অনুশীলনের মধ্যে থাকতে পারে সেই ব্যবস্থা করবেন বলে জানিয়েছেন।'
ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদ নারী ও পুরুষ দুই দল নিয়ে আলাদা পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। পুরুষদের জন্য তিনি বলেন, 'টেকনিক্যাল ডাইরেক্টরের অধীন ইউরোপে প্রশিক্ষণ ও খেলার ব্যবস্থা করা হবে অনেকের জন্য।' নারীদের ব্যাপারে বলেন, 'ক্লাব ও ফ্র্যাঞ্চাইজি উভয় লিগ নিয়ে আমরা কাজ করছি। শিগগিরই ক্লাব লিগ আয়োজনের মাধ্যমে তাদের খেলার মান উন্নয়ন ও আর্থিক সংস্থান হবে।'
দলের সঙ্গে সিঙ্গাপুর থেকে এসেছেন সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ ও দুই সদস্য। হকি দল এমন অর্জন করেছে ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক এহসান রানা, সহ-সভাপতি জাকি আহমেদ রিপন ছাড়া আর কাউকে বিমানবন্দরে যাননি। অনেক কষ্টে দল সিঙ্গাপুর যায় তখনো দুই-চারজন ছাড়া বাকিরা কেউ খোঁজ রাখেনি।