টি২০ বিশ্বকাপের সুপার এইটে এসেই যেন চেনা রূপে ফিরল ইংলিশরা। চেনা ছন্দ ফিরে পেয়ে উড়তে থাকা উইন্ডিজদের থামিয়ে দিয়েছে। ৮ উইকেটের ব্যবধানে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে দুর্দান্ত শুরু করেছে ইংল্যান্ড।
উড়তে থাকা আফগানিস্তানকে গ্রম্নপ পর্বের শেষ ম্যাচে রীতিমতো গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। একই মাঠে সুপার এইটের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ফেবারিট ধরা হচ্ছিল তাদেরই। ধুঁকতে ধুঁকতে কোনোমতে সুপার এইটে পা রাখা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আগে ব্যাট করে মোটামুটি ভালো স্কোর সংগ্রহ করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু ফিল সল্ট ও জনি বেয়ারস্টোর ঝড়ের সামনে ক্যারিবীয়রা উড়ে গেছে খড়কুটোর মতো।
বৃহস্পতিবার সেন্ট লুসিয়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৮০ রান সংগ্রহ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাবে ফিল সল্টের ঝড়ে ১৫ বল হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড।
১৮১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা ইংল্যান্ডের হয়ে শুরু থেকেই ঝড় তোলেন সল্ট। বাটলার অবশ্য দেখেশুনে খেলছিলেন। পাওয়ার পেস্নতে কোনো উইকেট না হারিয়েই ৫৮ রান তোলে ইংলিশরা।
দলীয় ৬৭ রানে প্রথম উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। অষ্টম ওভার করতে আসা রোস্টন চেজের বলে এলবিডবিস্নউয়ের ফাঁদে পড়েন ২২ বলে ২৫ রান করা ইংলিশ অধিনায়ক বাটলার।
এদিন ওয়ান ডাউনে ব্যাট করতে নামেন মঈন আলি। সল্টের সঙ্গে ১৭ রানের জুটি গড়ে ফিরে যান তিনি। রাসেলের শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ১০ বলে ১৩ রান করেন মঈন।
এদিন চার নম্বরে নামেন জনি বেয়ারস্টো। বাড়তে থাকা আস্কিং রানরেটটা মাথায় থেকে শুরু থেকেই চড়াও হন সল্ট-বেয়ারস্টো। শেষ পাঁচ ওভারে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪০ রান।
১৬তম ওভার করতে আসা রোমারিও শেফার্ডের ওপর চড়াও হন সল্ট। ওভারের প্রথম বলেই চার মেরে শুরু। এরপর সেই ওভারের প্রতিটি বলেই চার বা ছয় হাঁকিয়েছেন সল্ট। শেফার্ড অবিশ্বাসের চোখে দেখছিলেন সল্টের অবিশ্বাস্য তান্ডব। পরের পাঁচ বলে ৩টি ছক্কা ও ২টি চার মারেন সল্ট। শেফার্ডের সেই ওভারে ৩০ রান নিয়ে লক্ষ্যটা ২৪ বলে ১০ রানে নামিয়ে আনেন তিনি। পরের ওভারে মোতি মোটে ৬ রান দেন। ১৮তম ওভারের তৃতীয় বলে সিঙ্গেল নিয়ে ম্যাচ শেষ করে দেন বেয়ারস্টো। সল্ট ৪৭ বলে ৭ চার ও ৫ ছয়ে ৮৭ রান করে অপরাজিত থাকেন। বেয়ারস্টো ২৬ বলে ৫ চার ও ২ ছয়ে করেন ৪৮ রান।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ৩ ওভারে ১৯ রান দিয়ে ১ উইকেট শিকার করেন রোস্টন চেজ। বাকি উইকেটটি আন্দ্রে রাসেলের।
এর আগে টস জিতে উইন্ডিজকে ব্যাটিংয়ে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলার। দলটির হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন ব্রেন্ডন কিং ও জনসন চার্লস। ম্যাচের শুরুতে দেখেশুনে খেলেন তারা। দুই ওভার পর থেকে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন এ দু'জন।
ইনিংসের পঞ্চম ওভারে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে উইকেট ছাড়েন কিং। এরপর ক্রিজে আসেন নিকোলাস পুরান। তার সঙ্গে ৫৪ রানের জুটি গড়েন চার্লস। ইনিংসের ১২তম ওভারে এ জুটি ভাঙেন মঈন আলী। তার ঘূর্ণিতে কাটা পড়েন চার্লস (৩৮)। পরে বাইশ আসেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল। উইকেটে এসে ঝোড়ো ব্যাটিং করে সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। আউট হওয়ার আগে ১৭ বলে ৩৬ রান করেন উইন্ডিজ দলপতি।
তার বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন আন্দ্রে রাসেল। তবে থিতু হওয়ার আগেই উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন। আদিল রশিদের ঘূর্ণিতে ফিল সল্টের তালুবন্দী হয়েছেন এই ব্যাটার। শেষের দিকে ঝোড়ো ব্যাটিং করে ক্যারিবীয়দের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি এনে দেন রাদারফোর্ড। তার অপরাজিত ২৮ রানে উইন্ডিজের ইনিংস থামে ১৮০ রানে।