ভারতের বিপক্ষে আম্পায়ারের এমন সিদ্ধান্ত দেওয়া কঠিন হতো
প্রকাশ | ১২ জুন ২০২৪, ০০:০০
ক্রীড়া ডেস্ক
বিশ্বকাপের মঞ্চে বিতর্কিত সিদ্ধান্তগুলো কেন জানি বাংলাদেশের বিপক্ষেই বেশি দেন আম্পায়াররা। সোমবার রাতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে গ্রম্নপ পর্বের ম্যাচে বিতর্কিত আম্পায়ারিংয়ে হাতের নাগালে থাকা ম্যাচ হারতে হয়েছে বাংলাদেশকে। অথচ এই ম্যাচ জিতলেই সুপার এইটে ওঠা অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যেত টাইগারদের। তীরে এসে তরী ডোবা ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ হারের জন্য আম্পায়ারকেই অনেকাংশে দায়ী করেছে।
সোমবার নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৪ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। অল্পের জন্য হেরে যাওয়া এই ম্যাচের ১৭তম ওভারে ঘটে যাওয়া একটা ঘটনার কারণে সারা বিশ্বের ক্রিকেট বোদ্ধাদের সমালোচনার আঙুল ম্যাচের আম্পায়ার ও আইসিসির নিয়মের দিকে।
বাংলাদেশের ইনিংসের ১৭তম ওভারে বল করতে আসেন ওটেনিল বার্টমান। এই পেসারের লেগস্টাম্পের ওপর করা একটি বলে ফ্লিক করেন মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ। কিন্তু বল তার ব্যাট ফাঁকি দিয়ে প্যাডে লাগলে এলবিডবিস্নউয়ের আবেদন করে প্রোটিয়া খেলোয়াড়রা। আর এক মুহূর্তও দেরি না করে তড়িঘড়ি করে আঙুল তুলে আউট ঘোষণা করেন আম্পায়ার। বল ততক্ষণে চলে যায় বাউন্ডারির বাইরে। অবাক করা এই সিদ্ধান্তের পর রিভিউ নেন রিয়াদ। এখানে দেখা যায়, বল লেগ স্টাম্পের অনেক বাইর দিয়ে চলে যেত। ফলে সিদ্ধান্ত বদলে নটআউট দেন আম্পায়ার।
বেঁচে গেলেও ততক্ষণে বলটা আইসিসির নীতিমালা অনুযায়ী ডেডবলে পরিণত হয়েছে। ফলে বাংলাদেশ বঞ্চিত হয় প্রাপ্য ৪ রান থেকে। ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত ৪ রানের ব্যবধানেই হেরেছে বাংলাদেশ। যে কারণে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে বেশি।
বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের পর ক্রিকবাজের আলোচনা অনুষ্ঠানে আম্পায়ারের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেন নিউজিল্যান্ডের সাবেক পেসার ও ধারাভাষ্যকার সাইমন ডুল। মাহমুদউলস্নাহকে আউট দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, 'একেবারে বন্দুকধারীর মতো দ্রম্নতগতিতে আম্পায়ার হাত তুলেছে। এটা বাজে সিদ্ধান্ত ছিল। আর আমাদের বলতেই হবে পুরো টুর্নামেন্টেই আমরা খুব ভালো কিছু আম্পায়ারিং দেখেছি। কিন্তু এই ক্ষেত্রে সেটা ছিল না। তার চেয়ে বড় কথা, লেগবাইয়ে চার রান হওয়া দরকার ছিল।'
এ দিন ম্যাচে আম্পায়ারের একের পর এক বাজে সিদ্ধান্তের শিকারে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। পরের ওভারেই রাবাদার বলে যেভাবে তাওহিদ হৃদয়কে আউট দেন আম্পায়ার, সেটি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বাংলাদেশের জায়গায় ভারত থাকলে এত সহজে এমনটা করা সম্ভব হতো না বলেও মনে করেন ডুল, 'ধরা যাক, বিষয়টা ফাইনালে হলো। কিংবা বলা যাক, (বাংলাদেশের বদলে) ভারত ছিল বিপরীতে দিকে। সেটাও হোক একটা ফাইনালে। তাহলে পুরো ম্যাচজুড়ে এমন কিছু (আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত) করে যাওয়া খুব কঠিন হতো।'
আম্পায়ার্স কল ও ডেডবলের ক্ষেত্রে এই লুপহোলগুলো ম্যাচের ফলও বদলে দিতে পারে বলে মনে করেন ডুল। এমন বিতর্কিত বিষয়গুলোর পরিবর্তন দরকার বলে জানান তিনি, 'ধরা যাক, টি২০ বিশ্বকাপের শেষ বলে এটা ঘটল। আর একটা দল এমন বাজে সিদ্ধান্তের কারণে হেরে গেল। যেভাবে এসব চলছে, তাতে কিছু পরিবর্তন আনতেই হবে। কারণ এখন প্রায়ই এসব হচ্ছে। প্রতিবারই এমন কিছু প্রশ্ন আমি করেছি আইসিসি টুর্নামেন্টের আগে বা পরে। তখন তারা বলে, আমাদের এখানে কিছু করার নেই। এটা খেলার ফলাফলে বড় কোনো প্রভাব ফেলবে না।'
তিনি যোগ করেন, 'আমি জানি না কীভাবে এই পরিবর্তন আসবে, কবে এই পরিবর্তন হবে। তবে কিছু একটা পরিবর্তন অবশ্যই আসতে হবে। এগুলো ম্যাচের ফল বদলে দিচ্ছে। আর আমরা এমনটা হতে দিতে পারি না।'
আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডলে ভারতের সাবেক ওপেনার ওয়াসিম জাফরও আম্পায়ারের সিদ্ধান্তটাকে ভুল হিসেবে অভিহিত করেছেন।