লঙ্কানদের বিপক্ষে জয়ের পর সোমবার নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে হারে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচে বিতর্কিত আম্পায়ারিংয়ের স্বীকার হয়েছে বাংলাদেশ। আম্পায়ারের ভুলে ৪ রান থেকে বঞ্চিত হয়েছে তারা। আর এই ৪ রানেই প্রোটিয়াদের কাছে হেরে যায় বাংলাদেশ। ম্যাচ শেষে হারের কারণ হিসেবে আম্পায়ারকে কাঠগড়ায় তুললেন তাওহিদ হৃদয়। তাওহিদের মতে বাংলাদেশ ফাইনাল খেলার মতো দল।
নাসাউয়ের কঠিন পিচে, শক্তিশালী বোলিং লাইন আপের বিপক্ষেও তাওহিদ হৃদয় ও মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদের ব্যাটে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে এক আম্পায়ার্স কলে তছনছ হয়ে যায় টাইগারদের ইতিহাস গড়ার স্বপ্ন। এদিন অবশ্য ভাগ্যও কিছুটা খারাপ ছিল শান্তদের। 'ডি' গ্রম্নপের ম্যাচে প্রোটিয়াদের কাছে ৪ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। ১১৪ রান তাড়া করতে নেমে ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১০৯ রানে থেমেছে টাইগাররা।
বাংলাদেশের ইনিংসের ১৭তম ওভারের কথা। প্রোটিয়া পেসার ওটনিল বার্টম্যানের বল মাহমুদউলস্নাহর পায়ের লেগে চলে যায় বাউন্ডারিতে। প্রোটিয়াদের এলবিডবিস্নউর আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। মাহমুদউলস্নাহ রিভিউ নিতেও বেশি দেরি করেননি। রিভিউয়ে দেখা যায়, বল চলে যেত লেগ স্টাম্পের বেশ বাইরে দিয়ে। আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত তাই পাল্টে যায়। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী, আম্পায়ার আউট দেয়ার পর সেই সিদ্ধান্ত রিভিউয়ে বদলে গেলেও কোনো রান যোগ হয় না।
ঐ চার রানই বাংলাদেশকে হারিয়েছে। কারণ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৪ রানে হেরেছে শান্তর দল। ম্যাচ শেষে ঐ চার রানের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তাওহিদ হৃদয় আম্পায়ারের দিকে আঙুল তোলেন।
তাওহিদ হৃদয় বলেন, 'সত্যি বলতে, সেটি ভালো সিদ্ধান্ত ছিল না। আঁটসাট ম্যাচে আমাদের জন্য ভালো কিছু ছিল না সেটি। আমার মতে, আম্পায়ার আউট দিয়েছেন, তবে আমাদের জন্য কঠিন ছিল। ওই চারটি রান পেলে ম্যাচের চিত্র ভিন্ন হতে পারত। আর কিছু বলার নেই।'
আইসিসির এই নিয়ম নিয়ে কোনো ক্ষোভ নেই তাওহিদের। তবে তাওহিদ বললেন আম্পায়ারিংয়ের উন্নতির কথা। তিনি বলেন, 'নিয়ম মতো আইসিসি কী করেছে এটা তো আমার হাতে নেই। কিন্তু ঐ চারটা রান আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আম্পায়ারও মানুষ, ভুল হতেই পারে। কিন্তু আরও ২-১টা ওয়াইড দেয়নি। এমন ভেনু্যতে খেলা যেখানে রান হচ্ছে না, লো স্কোরিং ম্যাচ। সে জায়গায় ১-২ রান অনেক বড় ফ্যাক্ট। ওই ৪ রান বা ২ ওয়াইড ক্লোজ কল ছিল। আমার আউটও আম্পায়ার্স কল ছিল। এই জায়গাগুলোতে উন্নতি করা দরকার। আইসিসির নিয়মে আমাদের হাত নেই।
এখনো শেষ দুই ম্যাচ জিতলে সুপার এইটে পা রাখতে পারবে বাংলাদেশ, তবে তাওহিদের বিশ্বাস বাংলাদেশ সেমিফাইনাল কিংবা ফাইনাল খেলার মতো দল।
প্রতিবারই বিশ্বকাপের স্বপ্ন নিয়ে যায় বাংলাদেশ। তবে গ্রম্নপ পর্বের বাধাই পার করতে পারে না তারা। তবে এবার বড় এক সুযোগ রয়েছে গ্রম্নপপর্ব পেরিয়ে সুপার এইটে জায়গা করে নেয়া। তবে টাইগার ব্যাটসম্যান তাওহিদ হৃদয়ের বিশ্বাস, বাংলাদেশ আরও দূর যেতে পারবে।
হৃদয় বলেন, 'আমার কাছে মনে হয় শুধু সুপার এইট না, আমরা সেমিফাইনাল-ফাইনাল খেলার মতো দল। এটা আমার বিশ্বাস। আমার এই বিশ্বাস আছে।'
চলতি বিশ্বকাপে ব্যাটসম্যানরা সুবিধা করতে পারছে না। তার ওপর দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটাররাই আছেন অফ ফর্মে। হৃদয় অবশ্য সার্বিক চিত্র তুলে ধরে জানালেন ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশা।
হৃদয় বলেন, 'ব্যাটাররা রান করছে না, প্রত্যেক ম্যাচেই সব দলের সবাই রান করে না, ১-২ জন খেলে। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাট, এখানে ১১ জন খেলে না। যে ২-৩ জন খেলবে সেদিন যেন খেলাটা শেষ করে। এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত। ব্যাটাররা রান করছে না, ইনশাআলস্নাহ সামনের ম্যাচগুলোতে করবে। আশা করি তাড়াতাড়ি ঘুরে দাঁড়াব।'