শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১

শান্তরা হেরেছে বাজে ব্যাটিংয়ের কারণে

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ১২ জুন ২০২৪, ০০:০০
শান্তরা হেরেছে বাজে ব্যাটিংয়ের কারণে

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম জয় থেকে অল্পের জন্য বঞ্চিত, তাও আবার বিশ্বকাপের মঞ্চে। বাংলাদেশের জন্য কষ্টটা হজম করা একটু বেশিই কঠিন। অথচ শেষ চার ওভারে ম্যাচটা বাংলাদেশের দিকেই হেলে পড়েছিল। কিন্তু তাওহিদ হৃদয়ের বিদায় এবং বাংলাদেশি ব্যাটারদের বাউন্ডারি মারায় ব্যর্থতার কারণে হারতে হয়েছে। শেষ ওভারে ক্রিজে থেকেও ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ।

সোমবার নিউইয়র্কে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে ৪ রানে হেরে গেছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার করা ৬ উইকেটে ১১৩ রানের জবাবে বাংলাদেশ ৭ উইকেটে ১০৯ রানে থামে।

লো স্কোরিং ম্যাচে একটা সময় জয়ের পথেই ছিল বাংলাদেশ। তাওহিদ হৃদয় ও মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদের ৪৪ রানের জুটিতে জয়ের লক্ষ্যটা হাতের নাগালে চলে আসে বাংলাদেশের। ১৮ বলে জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার ছিল ২০ রান। কিন্তু ১৮তম ওভারের প্রথম বলেই তাওহিদ হৃদয়কে ফিরিয়ে দেন রাবাদা। এরপরই ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়তে থাকে বাংলাদেশ। সেই ওভারের পরের তিন বলে কোনো রানই নিতে পারেননি জাকের আলী অনিক। শেষ দুই ওভারে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৮ রান, যা শেষ ওভারে গিয়ে দাঁড়ায় ১১ রানে।

কিন্তু অভিজ্ঞ মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ কিংবা জাকের আলী সেই রান আর নিতে পারেননি। কেশভ মহারাজের করা শেষ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে মোটে পাঁচ রান নিতে পারে বাংলাদেশ। ফুলটস পেয়েও বাউন্ডারি লাইন পার করতে পারেননি রিয়াদ। ধরা পড়েন মার্করামের হাতে। তবে ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জরেকার মনে করেন, কেশভ মহারাজ শেষ ওভারে ততটা ভালো বল করেননি। বাংলাদেশ হেরেছে মূলত তার চেয়েও বাজে ব্যাটিংয়ের কারণে।

ইএসপিএন-ক্রিকইনফোর এক অনুষ্ঠানে মাঞ্জরেকার বলেন, 'পিচ বোলারদের জন্য দারুণ সহায়ক ছিল এবং কেশভ মহারাজ তখন পর্যন্ত দুর্দান্তভাবে পিচের সুবিধা কাজে লাগিয়ে পরিস্থিতি ব্যাটারদের জন্য আরও কঠিন করে তুলছিলেন। কিন্তু শেষ ওভারে এসে তিনি পিচের সুবিধা কাজে লাগানো বাদ দিয়ে ইয়োর্কার লেন্থে বল করার সিদ্ধান্ত নেন। প্রথম বলটাই তিনি ওয়াইড দেন। বোঝাই যাচ্ছিল সে চাপ বোধ করছে। যেটা ডেথ ওভারে প্রায়শই দেখা যায়, কিন্তু সম্পূর্ণভাবে অপ্রয়োজনীয়।'

তিনি যোগ করেন, 'আমি বার্টমানকেই বেশি পছন্দ করছি, যিনি ১৯তম ওভারে বল করেছেন। তিনি ক্লিশে হয়ে পড়া গৎ বাধা ডেথ বোলিং করেননি, আর পিচেও পর্যাপ্ত সহযোগিতা ছিল। রাবাদার ১৮তম ওভারের কথাও বলা দরকার, হৃদয়কে আউট করে সে। কিন্তু কেশভ মহারাজের ওভারটা (শেষ ওভার) বাজে ছিল এবং এটা দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য সৌভাগ্যের ব্যাপার ছিল যে, ব্যাটিং (বাংলাদেশের) তার চেয়েও বেশি জঘন্য ছিল।'

মহারাজের করা শেষ ওভারে তিনটি ফুলটস বল পেয়েও একটিও বাউন্ডারি আদায় করতে পারেনি বাংলাদেশ। ওভারের দ্বিতীয় বৈধ ডেলিভারিটি একটি লো ফুলটস ছিল, কিন্তু জাকের বলটি থেকে কোনোমতে ২ রান নিতে সমর্থ হন। পরের বলটি ছিল ফুল লেন্থের এবং জাকের লং অনে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন। ওভারের পঞ্চম বলে রিয়াদকেও ফুলটস দিয়েছিলেন মহারাজ। বল সজোরে মেরেও বাউন্ডারি লাইনের আগেই মার্করামের হাতে ধরা পড়ে অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন। এই শটটি ছক্কা হলেও ম্যাচ জিতে যেত বাংলাদেশ।

শেষ বলটিও হাই ফুলটস করেছিলেন মহারাজ। কিন্তু ১ রানের বেশি নিতে পারেননি তাসকিন। ফলে ৪ রানে হারে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেছেন, 'এই ম্যাচ আমাদের জেতা উচিত ছিল। প্রায় জিতেই গিয়েছিলাম কিন্তু শেষ কয়েকটা ওভার তারা খুব ভালো বল করেছে। ক্রিকেটে এটা হতেই পারে। সবাই নার্ভাস ছিল। কিন্তু আত্মবিশ্বাসী জাকের ছিল। শেষ অবধি জিততে পারিনি, যাই হোক ঠিক আছে।'

শান্ত বলেন, 'তানজিম খুব কঠোর পরিশ্রম করেছে। আমাদের নতুন বলে উইকেট দরকার ছিল আর সে তার ক্যারেক্টার দেখিয়েছে।'

তবে ম্যাচশেষে তাকে নিয়ে শান্ত বলেন, 'রিশাদ খুব ভালো। সে শেষ দুই ম্যাচ ও অনুশীলনে ভালো বল করেছে। আমরা গত ১০-১৫ বছর ধরে লেগ স্পিনার নিয়ে ভুগেছি কিন্তু আশা করি রিশাদ অনেক দূর যাবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে