আগামী ১৪ জুন থেকে জার্মানিতে শুরু হচ্ছে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ। ফুটবল পাগল জাতি হিসেবে পরিচিত জার্মানির কয়েকটি দুর্দান্ত স্টেডিয়ামে আয়োজিত এবারের এই আসর নিয়ে বাড়তি উত্তেজনা প্রথম থেকেই লক্ষ্য করা গেছে। এ মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে উজ্জীবিত ও আলোচিত দুই দল ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডই এবারের আসরের শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে হেভিওয়েট ফেবারিট হিসেবে মাঠে নামবে। যদিও স্বাগতিক জার্মানিকে নিয়েও অনেকেই আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।
তিন বছর আগে পুরো ইউরোপাজুড়েই ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজিত হয়েছিল, তার ওপর কোভিড মহামারির কারণে প্রতি স্টেডিয়ামে দর্শক সংখ্যাও সীমিত করা হয়েছিল। এবার আবারও এক দেশে আয়োজনের পুরনো ঐতিহ্যে ফিরেছে ইউরোপিয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ এই আসর।
জার্মানির ১০ স্টেডিয়ামে এবার আর থাকছে না কোনো ধরনের বিধিনিষেধ। ২০০৬ সালে সর্বশেষ বড় কোনো টুর্নামেন্ট হিসেবে বিশ্বকাপ আয়োজনের সুখস্মৃতি জার্মানদের মধ্যে হয়তো আবারও ফিরে আসবে। বিশ্বকাপের ওই আসরে ইতালি চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এবারও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে আজ্জুরিরা মাঠে নামতে যাচ্ছে। তবে বেশ কয়েক বছর বিশ্ব ফুটবলে নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে না পারা জার্মানরা ঘরের মাঠে ভালো করতে উন্মুখ হয়ে আছে। কোচ জুলিয়ান নাগলসম্যান এবার শেষ দুই বিশ্বকাপে গ্রম্নপ পর্ব থেকে ও সর্বশেষ ইউরোতে শেষ ষোলো থেকে বিদায় নেওয়া জার্মানিতে কতটা এগিয়ে নিতে পারেন তা দেখার অপেক্ষায় কোটি ভক্ত।
মিউনিখে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ খেলতে মাঠে নামবে জার্মানি। নাগলসম্যান বলেছেন, 'টুর্নামেন্ট জয়ের ব্যাপারে আমার মধ্যে একটি উপলব্ধি আসছে। বেশিরভাগ সময় আমার অন্তর্দৃষ্টি খারাপ হয় না।'
আগামী ১৪ জুলাই ফাইনালে বার্লিন অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ফ্রান্স অথবা ইংল্যান্ডের মধ্যে যে কোনো একটি দল ইউরোর ট্রফি হতে নেবে, অনেকেই এই ভবিষদ্বাণী আগেই করে রেখেছেন। এই মুহূর্তে ইউরোপের শীর্ষর্ যাঙ্কধারী দল ফ্রান্স শেষ দুটি বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেছে। এর মধ্যে ২০১৮ সালে জয়ী হওয়ার চার বছর পর কাতারে হয়েছে রানার্স-আপ। যদিও আর্জেন্টিনার সঙ্গে তারা যেভাবে লড়াই করেছে তা যে কোােন দলের জন্যই হুমকি। কিলিয়ান এমবাপের নেতৃত্বে ২০০০ সালের পর প্রথমবারের মতো ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ে তারা মুখিয়ে আছে।
ফরাসি কোচ দিদিয়ের দেশ্যম সতর্ক করে বলেছেন, 'অন্য দেশের মতো আমাদেরও শেষ পর্যন্ত যাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। কিন্তু এই মুহূর্তে আমাদের সেমিফাইনাল কিংবা সম্ভাব্য ফাইনাল নিয়ে চিন্তা করলে চলবে না।'
অনেক সময় সম্ভাবনাময় সবকিছুই বাস্তবে হয়তো তার নিজস্ব রূপ খুঁজে পায় না। তারপরও সবকিছু ঠিক থাকলে ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড যদি তাদের গ্রম্নপে শীর্ষস্থান দখল করতে পারে তবে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের সিগন্যাল ইডুনা পার্কে সেমিফাইনালে তাদের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইংল্যান্ড এখনো পর্যন্ত ইউরোর শিরোপা হাতে নিতে পারেনি। ২০২১ সালের ফাইনালে পেনাল্টিতে ইতালির কাছে তারা পরাজিত হয়। বিশ্বকাপে গ্যারেথ সাউথগেটের দল কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে পরাস্ত হয়েছিল। তবে হ্যারি কেন ও বেলিংহাম এবার ইংল্যান্ডকে সব ধরনের সম্ভাবনাই দেখাচ্ছে।
মিউনিখের আলিয়াঁজ এরেনাতে হবে প্রথম সেমিফাইনাল, দ্বিতীয় সেমিফাইনাল হবে বেলিংহামের ডর্টমুন্ডের তিন বছরের হোম গ্রাউন্ডে। রিয়াল মাদ্রিদে দারুণ এক মৌসুম কাটানোর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও লা লিগার শিরোপাকে সঙ্গী করে ইউরোতে খেলতে আসছেন বেলিংহাম। গ্রম্নপ-সি'তে ইংল্যান্ডের প্রতিপক্ষ ডেনমার্ক, সার্বিয়া ও স্স্নোভেনিয়া।
গত দুটি বিশ্বকাপে খেলতে না পারা ইতালি তাদের শিরোপা জয়ের লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামবে। বাছাইপর্বে তারা ইংল্যান্ডের কাছে দুই ম্যাচেই পরাজিত হয়েছে। আজ্জুরিদের সঙ্গে একই গ্রম্নপে থাকা স্পেনকেও অনেকেই এগিয়ে রেখেছেন।