এবারই প্রথম টি২০ বিশ্বকাপ খেলছে উগান্ডা। জিম্বাবুয়ের মতো দলকে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে দলটি। বল হাতে প্রতিপক্ষের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুললেও ব্যাট হাতে দাঁড়াতেই পারছে না। আফগানিস্তানের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল উগান্ডার ব্যাটিং লাইনআপ। ১২ ওভারে মাত্র ৩৯ রান তুলতেই গুটিয়ে গেল তারা। নাম লেখাল টি২০ বিশ্বকাপে সর্বনিম্ন রানের রেকর্ডে।
টি২০ বিশ্বকাপে যৌথভাবে সর্বনিম্ন রানে অলআউট হওয়ার লজ্জায় পুড়ল আফ্রিকান দেশ উগান্ডা। অথচ চলতি আসরে তারা বিশ্বকাপে প্রথম জয়ের স্বাদ পেয়েছিল দু'দিন আগে, সেই শুভক্ষণ বিস্মৃত হলো বড় ব্যবধানের হারে।
বাঁ হাতি স্পিনার আকিল হোসেনের ঘূর্ণিতে টি২০ বিশ্বকাপের 'সি' গ্রম্নপের ম্যাচে উগান্ডাকে ১৩৪ রানে বড় ব্যবধানে হারিয়ে রেকর্ড জয়ের নজির গড়েছে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। রান বিবেচনায় নিজেদের টি২০ ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে বড় জয় ক্যারিবিয়ানদের। বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বড় জয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের। আকিল ১১ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাসেরা হন। বিশ্বকাপে দেশটির কোনো বোলারের প্রথম ৫ উইকেট এটি। ২০১৪ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে স্যামুয়েল বাদ্রির ১৫ রানে ৪ উইকেট ছিল আগের সেরা।
২০১৪ টি২০ বিশ্বকাপে শ্রীলংকার বিপক্ষে মাত্র ৩৯ রানে অলআউট হয়েছিল নেদারল্যান্ডস। রোববারের আগ পর্যন্ত এটাই ছিল এককভাবে টি২০ বিশ্বকাপের দলীয় সর্বনিম্ন সংগ্রহ। এবার সেই রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছে উগান্ডা। বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩৯ রানে অলআউট হয় বাছাইপর্বে চমক দেখানো দেশটি। ৩৯ রানে অলআউট হয়ে তারা ম্যাচ হেরেছে ১৩৪ রানের বড় ব্যবধানে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের টি২০ ইতিহাসে এটাই রানের ব্যবধানে সবচেয়ে বড় জয়। এই সংস্করণে টানা ছয়টি ম্যাচ জিতল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর আগে ২০১২-১৩ মৌসুমে টানা ৭টি ম্যাচ জিতেছিল তারা।
পাপুয়া নিউগিনির পর উগান্ডাকে হারিয়ে ২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে পিছিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে এগিয়ে টেবিলের শীর্ষে আছে আফগানিস্তান। প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে পাপুয়া নিউগিনিকে হারিয়ে বিশ্বকাপে প্রথম জয় পেয়েছিল উগান্ডা।
গায়ানায় নিজেদের মাঠে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৪১ রানের সূচনার পর মিডল অর্ডার ব্যাটারদের ছোট ছোট ইনিংসের সুবাদে বড় সংগ্রহের পথ পায় ক্যারিবীয়রা। ওপেনার জনসন চালর্স ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪২ বলে সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেন।
মিডল অর্ডারে নিকোলাস পুরান ২২, অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েল ২৩, শেরফান রাদারফোর্ড ২২ রান করেন। শেষদিকে আন্দ্রে রাসেলের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৭৩ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। রাসেল ৬টি চারে ১৭ বলে অপরাজিত ৩০ রান করেন। উগান্ডার ব্রায়ান মাসাবা ২টি উইকেট নেন।
১৭৪ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে আকিলের ঘূর্ণি সামলাতে না পেরে ১২ ওভারে ৩৯ রানে অলআউট হয় উগান্ডা। টি২০ বিশ্বকাপের ইতিহাসে কোনো দলের এটি যৌথভাবে সর্বনিম্ন রান। ২০১৪ সালে চট্টগ্রামে শ্রীলংকার বিপক্ষে ৩৯ রানে অলআউট হয়েছিল নেদারল্যান্ডস।
উগান্ডার পক্ষে মাত্র একজন ব্যাটার দুই অঙ্কের কোটা স্পর্শ করতে সক্ষম হয়েছেন। জুমা মিয়াজি অপরাজিত ১৩ রান করেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬ রান করেন রবিনসন ওবুয়া।
বল হাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের আকিল ৪ ওভারে ১১ রানে ৫ উইকেট নেন। ৫২ ম্যাচের টি২০ ক্যারিয়ারে এটিই তার সেরা বোলিং ফিগার। টি২০ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে সেরা বোলিং ফিগারের নয়া রেকর্ড গড়েন আকিল। বিশ্বকাপে সেরা বোলিং ফিগারের তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে নাম লেখান তিনি। এছাড়া আলজারি জোসেফ ২টি উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৭৩/৫, ২০ ওভার (চার্লস ৪৪, রাসেল ৩০, মাসাবা ২/৩১)।
উগান্ডা: ৩৯/১০, ১২ ওভার (মিয়াজি ১৩*, ওবুয়া ৬, আকিল ৫/১১)।
ফল : ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৩৪ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা:আকিল হোসেন।