সৌম্যর শূন্যের রেকর্ড
প্রকাশ | ০৯ জুন ২০২৪, ০০:০০
ক্রীড়া ডেস্ক
অনেকদিন ধরেই ফর্মে নেই সৌম্য সরকার। তাও জাতীয় দলের সঙ্গে টিকে গেছেন বিশ্বকাপ যাত্রায়। তবে বিশ্বকাপে এসেও নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন বাংলাদেশি ওপেনার। কোনোভাবেই হাসছে না তার ব্যাট। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে শ্রীলংকার বিপক্ষে আউট হওয়ার মধ্য দিয়ে শূন্য রানের চূড়ায় পৌঁছে গেছেন এই বাঁহাতি।
এতদিন লজ্জার রেকর্ডটি এককভাবে নিজের দখলে রেখেছিলেন আয়ারল্যান্ডের পল স্টার্লিং। শনিবার শ্রীলংকার বিপক্ষে শূন্য রানে আউট হয়ে সে রেকর্ডে ভাগ বসালেন সৌম্য সরকার। আন্তর্জাতিক টি২০তে যৌথভাবে সর্বোচ্চ ডাকের মালিক বনে গেলেন বাংলাদেশের এই ব্যাটার।
এই ডাক মারার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক টি২০তে সর্বোচ্চ 'ডাক' বা শূন্য রানের অধিকারী এখন তিনি। আন্তর্জাতিক টি২০তে তার ডাকের সংখ্যা গিয়ে ঠেকল ১৩তে। সমান ১৩টি ডাক রয়েছে আইরিশ অধিনায়ক পল স্টার্লিংয়েরও। তবে স্টার্লিং খেলেছেন ১৪৪ ম্যাচ, সৌম্য ৮৪টি।
এই তালিকার দুইয়ে আছেন রুয়ান্ডার কেভিন ইরাকোজে, আয়ারল্যান্ডের কেভিন ও ব্রায়েন ও ভারতের রোহিত শর্মা। তারা তিনজনই আন্তর্জাতিক টি২০তে ডাক মেরেছেন সমান ১২টি করে। তাই তাদেরও সামনেও সুযোগ থাকছে সৌম্যকে টপকে যাওয়ার।
গত বছরের আগস্টে ভারতের বিপক্ষে শূন্য রানে আউট হয়ে সর্বোচ্চ ডাকের বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিলেন স্টার্লিং। ১৩১তম টি২০ ম্যাচ খেলতে নেমে ১৩তম বারের মতো শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন তিনি। এরপর আরও ১৩ ম্যাচ খেললেও সংখ্যাটা বাড়েনি।
১০ মাস পর তার সে লজ্জার রেকর্ডের সঙ্গী হলেন সৌম্য। সে সময় অবশ্য টাইগার ব্যাটারের টি২০তে ডাকের সংখ্যা ছিল ১১টি। এরপর বিশ্বকাপের আগে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে শূন্য রানে আউট হয়ে সংখ্যাটা ১২'তে নিয়ে যান তিনি। আর বিশ্বকাপে শ্রীলংকার বিপক্ষে নিজের ৮৪তম ম্যাচে ১৩তম বারের মতো শূন্য রানে আউটের লজ্জায় পড়লেন তিনি। তবে এদিন তিনি রানের দেখা না পেলেও দল জিতেছে ২ উইকেটের ব্যবধানে।
এদিকে সৌম্য ও স্টার্লিংয়ের এই রেকর্ডে অবশ্য খুব দ্রম্নতই যোগ দিতে পারেন রোহিত শর্মা। ১২টি শূন্য রানের ইনিংসে তাদের পেছনে অবস্থান করছে ভারত অধিনায়ক। চলমান টি২০ বিশ্বকাপের স্কোয়াডে থাকা খেলোয়াড়দের মধ্যে আরও দুইজন অন্তত ১০টি শূন্যর দেখা পেয়েছেন। স্কটল্যান্ডের অধিনায়ক রিচি বেরিংটন ৯২ ম্যাচে ১০ বার আউট হয়েছেন রানের খাতা না খুলেই। সমানসংখ্যক ম্যাচে একই অভিজ্ঞতা হয়েছে শ্রীলংকার দাসুন শানাকারও।
আন্তর্জাতিক টি২০তে বাংলাদেশিদের মধ্যে সৌম্যের পর টি২০তে সর্বোচ্চ ডাকের তালিকায় নাম আছে সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের। দুইজনের নামের পাশেই ৮টি করে ডাক। ১০২ আন্তর্জাতিক টি২০ খেলে বিদায় নেওয়ায় এই সংখ্যাটি বাড়ার সুযোগ নেই মুশফিকের। অন্যদিকে ১২৩ ম্যাচ খেলা সাকিবও ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে।
টি২০ সংস্করণে অবশ্য কখনো তেমন ধারাবাহিক ছিলেন না সৌম্য। অভিষেকের পর প্রথম ২৬ ইনিংসে কোনো ফিফটি করতে পারেননি তিনি। তবে চলিস্নশ ছোঁয়া ইনিংস খেলেন পাঁচটি। স্ট্রাইক রেটও তখন ছিল সমীহ জাগানিয়া।
২০২১ সালে পাঁচ ইনিংসের মধ্যে তিনটি ফিফটি করে নিজের সামর্থ্যের জানান দেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। কিন্তু এরপর থেকে শুধুই হতাশা। একের পর এক সুযোগ পেয়েও নিজেকে মেলে ধরতে ব্যর্থ তিনি।
সব মিলিয়ে ৮৩ ইনিংসে ৫ ফিফটিতে সৌম্যর সংগ্রহ এক হাজার ৩৯৮ রান। আন্তর্জাতিক টি২০তে অন্তত ৮০ ইনিংস ব্যাটিং করা ৩৭ ব্যাটসম্যানের মধ্যে তার চেয়ে কম রান শুধু জর্জ ডকরেলের (এক হাজার ১১৮ রান)। যিনি ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ সময়ই খেলেছেন নিচের দিকে।