'এই ইনিংস যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপারে বাকিদের চোখ খুলে দেবে'

প্রকাশ | ০৩ জুন ২০২৪, ০০:০০

ক্রীড়া ডেস্ক
অপরাজিত ৯৪ রান করা অ্যারন জোন্স
বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে সহ-আয়োজক যুক্তরাষ্ট্র ইতিহাস গড়ে জিতেছে প্রতিবেশী দেশ কানাডার বিপক্ষে। এই জয়ে মুখ্য ভূমিকা রেখেছে অ্যারন জোন্সের ৪০ বলে অপরাজিত ৯৪ রানের ইনিংস। তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ৪টি ছয় ও ১০টি ছক্কায়। ম্যাচ শেষে নিজের ইনিংস নিয়ে জোন্স বলেন, 'কখনো কখনো যদি আপনি অল্প রানের ইনিংস খেলেন তাহলে আপনি রাডারের নিচে চলে যাবেন। আমি সবসময় নিজের ব্যাপারে বিশ্বাসী ছিলাম এবং জানতাম আমি যেকোনো স্তরে পারফর্ম করার যোগ্য। আমি আনন্দিত যে আমি শীর্ষ পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রকে ম্যাচ জিতিয়েছি। আশা করছি বিশ্বজুড়ে এটি কিছু মানুষের চোখ খুলে দিবে যে আমি টি২০ ক্রিকেটের জন্য যথেষ্ট ভালো।' কানাডার বিপক্ষে ম্যাচে ব্যাটিং করতে যাওয়ার আগে জোন্স কোনোরকম বাড়তি চাপ নিজের ওপর পড়তে না দিয়ে নিজের আত্মবিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে ম্যাচে অবদান রাখতে চেয়েছিলেন এবং হয়েছেও তাই, 'আমি নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাসী, আমি কঠোর পরিশ্রম করি এবং সমালোচনাকে অনুপ্রেরণা হিসেবেই দেখি। আমি জানি আমি শীর্ষ পর্যায়ে খেলার জন্য যথেষ্ট উপযুক্ত এবং যখনই আমাকে সুযোগ দেওয়া হবে আমি আমার সেরাটাই করব নিশ্চিত। যখন ব্যাটিংয়ে যাচ্ছিলাম, আমি শুধু এই ম্যাচটিকে অন্য সাধারণ ম্যাচের মতোই চিন্তা করেছি আমার নিজের ও দলের জন্য। যতটা সম্ভব লক্ষ্যের কাছাকাছি দলকে নিয়ে যাওয়া। এবং আমরা যদি তার কাছাকাছি যেতে পারি বা লক্ষ্য টপকাতে পারি এটা আমাদের জন্য দারুণ হবে।' ঘরের মাঠে নিজেদের দর্শকদের সামনে এই ইনিংস ও জয় বাড়তি অনুপ্রেরণাদায়ক জোন্স ও যুক্তরাষ্ট্র দলের জন্য। গেল বছর মেজর লিগ টি২০তে তিনি স্যাটেল অর্কাসের হয়ে খেলেছিলেন। সেই দল তাকে ছেড়ে দেওয়ার পর আগামী মৌসুমের জন্য চলতি বছরের শুরুতে হওয়া নিলামেও কোনো দল তার প্রতি আগ্রহ দেখায়নি। চলতি মাসের ১৬ তারিখ সেই লিগের অতিরিক্ত ড্রাফট অনুষ্ঠিত হবে দলগুলো তাদের স্কোয়াড চূড়ান্ত করার জন্য। জাতীয় দলেও তার জায়গাটা ছিল কিছুটা নড়বড়ে। জোন্স বলেন, 'যখন আমি মেজর লিগে দল পাইনি এটি ছিল আমার চলার পথে অনুপ্রেরণা হিসেবেই দেখেছিলাম। আমি ড্রাফটে জায়গা পেতে আগ্রহী। আশা করি আজকের ইনিংসটি তাদের চোখ খুলে দিবে যারা আমাকে ও যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটকে চেনে না। আমাদের দারুণ কিছু খেলোয়াড় আছে এবং আমাদের বেশ দারুণ প্রতিভা আছে এবং আমরা নিশ্চিতভাবেই শীর্ষপর্যায়ে খেলতে আগ্রহী।' যুক্তরাষ্ট্রকে ম্যাচ জেতানো ৫৮ বলে ১৩১ রানের জুটি গড়েছেন তিনি আন্দ্রিস গাউসের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে। তাদের এই জুটিই ঐতিহাসিক জয়ের স্বাদ দিয়েছে বিশ্বকাপে অভিষেক হওয়া দলটিকে। ব্যাটিংয়ে যাওয়ার পর গাউসকে আমি বলেছিলাম, 'আমরা এখন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছি। আমরা যদি জিততে চাই তাহলে আমাদের আক্রমণাত্মক হতে হবে, ইতিবাচক হতে হবে। আমরা বাজেভাবে হারি যতই স্কোর করি অথবা আমরা রান তাড়া করার চেষ্টা করি। আমরা নির্ভীক হতে হবে, ইতিবাচক হতে হবে। আমাদের স্মার্ট ক্রিকেট খেলতে হবে, ভালো শটও নির্বাচন করতে হবে। যেকোনো উপায়ে আক্রমণাত্মক হতে হবে।' অসাধারণ এই ইনিংস খেলার পর অনেকেই বলতে শুরু করেছেন এই ইনিংসটি যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটের সেরা ইনিংস কিনা। জোন্সও তাই মনে করেন, 'সৎভাবে বললে এটি সেই জায়গাটাতেই আছে। দলের হয়ে এটা আমার জন্য সেরা ইনিংস অথবা এটি দ্বিতীয়ত থাকবে আমার শতকের পর, যখন আমরা ওয়ানডে স্ট্যাটাস পেয়েছি। এটি বিশেষ যেহেতু বিশ্বকাপে এবং আমরা জানি কানাডা আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী, আমরা বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ খেলেছি এবং সবাই আমাদের দেখেছে।' দলটি তাদের পরবর্তী ম্যাচ খেলবে ৬ জুন পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেখানেও ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে চান কানাডার বিপক্ষে ম্যাচে স্বাগতিকদের জয়ের নায়ক। এমনকি ভারতের বিপক্ষেও তাই চান তিনি। 'আমরা যতটা সম্ভব ম্যাচ জিততে চেষ্টা করবো, অবশ্যই আমরা সব ম্যাচ জিততে পারব না। টুর্নামেন্টের বাকি অংশে আমাদের পরিকল্পনায় খুব একটা পরিবর্তন আসবে বলে মনে করি না। আমর নির্ভীক ও স্মার্ট ক্রিকেট খেলতে চাই। একই মানসিকতা নিয়ে আমরা পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে নামবো। কার বিপক্ষে খেলছি তা না ভেবে ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে চাই।'